আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
reshown by
১) "আসসালামু আলাইকুম", এখানে 'আলাইকুম শব্দটায়  ع এর উচ্চারণ না করে নরমাল বাংলা উচ্চারণের মতো করে সালাম দিলে কি সালামের অর্থ বিকৃত হয়ে যাবে?

২) আমি জানি যে সালামের উত্তর 'ওয়াআলাইকুমুস সালাম' কিন্তু অনেকে ওয়ালাইকুম আসসালাম বলেন। এতে কি তাদের ভুল হচ্ছে?  অর্থ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে? নাকি এভাবেও উত্তর দেয়া যাবে।

৩) অনলাইনে কোনো একটা প্রোডাক্ট পছন্দ হওয়ার পর যদি বলি আপনার কাছ থেকে পরবর্তীতে নিবো ইনশাআল্লাহ। কিন্তু পরে দেখা গেলো অন্য পেইজে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে সেইম প্রোডাক্ট। তো অন্য পেইজ থেকে নিলে কি কথা দিয়ে কথা না রাখার মতো হয়ে যাচ্ছে?  এরকম করা কি ঠিক হবে?
৪) ইমান, আকিদা দৃঢ় করার জন্য কি কি বই পড়া  উচিত, আল্লাহ, পরকাল, জান্নাত জাহান্নাম, নবী রাসূল সম্পর্কে  আরো ভালোভাবে কোথা থেকে জানতে পারবো। ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ইমান দৃঢ় করতে করনীয়।

৫) গুনাহ বা হারাম চিন্তা এবং এসব বেঁচে থাকার  কোনো দোয়া আছে কি?

৬) দ্বীনদার এবং দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর জীবনসঙ্গী পাওয়ার জন্য কিভাবে দোয়া করবো।

৭)  কোন আমলটি নিয়মিত করলে ওয়াসওয়াসা কমবে।

৮) নামাজের প্রথম সিজদায় ৩ বার সিজদার তাসবীহ পড়ে, পরের সিজদায় ৫ বার সিজদার তাসবীহ পড়লে নামাজের কি কোনো সমস্যা হবে? নাকি প্রত্যেক সিজদায় তাসবীহ সংখ্যা একই থাকতে হবে?

৯) ঘুমের কারণে আসরের নামাজ কাযা হলে, ঘুম থেকে মাগরিবের সময় ওঠলে আগে কি আসরের নামাজ কাযা আদায় করবো নাকি মাগরিব পড়বো আগে।

১০)যদি এমন অবস্থা হয় যে, আসরের পূর্ণ ৪ রাকাত পড়ার মতো সময় নেই দুই রাকাত পড়তে পড়তে ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাবে, এক্ষেত্রে কি নামাজ ২ রাকাত পরার পর নিষিদ্ধ সময় পর্যন্ত নামাজ চালিয়ে যাবো ; নাকি আসরের পর নিষিদ্ধ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর কাযা পড়বো আসর?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কাছাকাছি মাখরাজ হওয়ায় অনেকে বলেন যে এতে সমস্যা নেই।
সালামের উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাবে।

(০২)
এক্ষেত্রে অর্থ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছেনা।
কেউ চাইলে এভাবেও উত্তর দিতে পারবে।
তবে এটি ব্যাকরণ গত ঠিক নয়।

(০৩)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে কথা দিয়ে কথা না রাখার মতো হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রে আগেরজনের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে নিবেন। তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।

(০৪)
আপনি মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ সহ হাদীসের কিতাবের জান্নাত জাহান্নাম এর অধ্যায় পড়তে পারেন,হক্কানী শায়েখদের নিকটে যেতে পারে,তাদের বয়ান শুনতে পারেন,বিশেষ করে তাদের জান্নাত জাহান্নামের বয়ান শুনতে পারেন, দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন, আকীদার জন্য "ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ" বইটি পড়তে পারেন।

(০৫)
গুনাহ থেকে বাঁচতে নিম্নোক্ত দুয়া নিয়মিত পড়বেন। 

اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ الْكَسَلِ وَالْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ 

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল মা-ছামি, ওয়াল মাগরামি। অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অলসতা, গুনাহ ও ঋণ থেকে।

اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ

 উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মা-ছামি, ওয়াল মাগরামি। 

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই গুনাহ ও ঋণ থেকে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ النَّارِ وَعَذَابِ النَّارِ وَفِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَشَرِّ فِتْنَةِ الْغِنَى وَشَرِّ فِتْنَةِ الْفَقْرِ - اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ - اللَّهُمَّ اغْسِلْ قَلْبِي بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّ قَلْبِي مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنْ الدَّنَسِ وَبَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ - اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
 
হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, জাহান্নামের ফিতনা ও জাহান্নামের শাস্তি থেকে। কবরের ফিতনা ও কবরের ‘আজাব থেকে। আশ্রয় চাচ্ছি, সম্পদের ফিতনা ও দারিদ্রের ফিতনার ক্ষতি থেকে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি মাসিহিদ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে।
 
হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে বরফ ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে দাও। আমার অন্তরকে গুনাহ থেকে পরিষ্কার করে দাও। যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে তুমি পরিষ্কার করে থাকো। হে আল্লাহ! থেকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত তুমি যে বিশাল দূরত্ব সৃষ্টি করেছ আমার আমলনামা থেকে আমার গুনাহগুলো ততটুকু দূরে সরিয়ে দাও। হে আল্লাহ! আমার অলসতা, গুনাহ ও ঋণ থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই। (বুখারি ও মুসলিম)

(০৬)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৭)
যেই বিষয় নিয়ে ওয়াসওয়াসা হচ্ছে,সেই বিষয়কে আপনি বিন্দুমাত্র পাত্তা দিবেননা।

(০৮)
নামাজের প্রথম সিজদায় ৩ বার সিজদার তাসবীহ পড়ে, পরের সিজদায় ৫ বার সিজদার তাসবীহ পড়লে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৯)
এক্ষেত্রে আগে আসরের নামাজের কাজা আদায় করবেন। 

তবে আপনার জীবনে যদি বালেগ হওয়ার পর ৬ ওয়াক্তের বেশি নামাজ কাজা থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত আসরের নামাজের কাজা আপনি চাইলে মাগরিবের পর আদায় করতে পারেন।

এক্ষেত্রে মাগরিবের আগে আসরের কাজা আদায় করা আপনার জন্য আবশ্যক নয়।

হ্যাঁ যদি বালেগ হওয়ার পর আপনার জিম্মায় ৬ ওয়াক্তের বেশি নামাজ কাজা না থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত আসরের নামাজের কাজা মাগরিবের আদায় করা আপনার উপর আবশ্যক। 

(১০)
আপনি নামাজ চালিয়ে যাবেন।
এক্ষেত্রে নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ হলেও সেদিনের আছরের নামাজ হওয়ায় আপনার উক্ত আছর নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

فإذا غربت الشمس في أثناء الصلاة لم يفسد العصر؛ لأنه ما بعد الغروب كامل كما دل فيه لأن ما وجب ناقصا يتادى كاملا بطريق الأولى

যদি আছরের নামাযের সময় সূর্যাস্ত হয়ে যায়,তাহলে ঐ আছরের নামায ফাসিদ হবে না।কেননা সূর্যাস্তর পর সময়টা কামিল(ত্রুটিহীন)।যেহেতু নামায শুরু করার পূর্ব মূহুর্তটা নামায ফরয হওয়ার সবব বা কারণ।তাই বলা যায় তার উপর নাক্বিসভাবে তথা ত্রুটিপূর্ণ ওয়াক্তে বা অবস্থায় নামায ফরয হয়েছে।আর যে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় ফরয হয়েছিলো এবং শুরুও হয়েছিলো,সে নামায কামিল ওয়াক্ত তথা ত্রুটিহীন অবস্থায় উত্তমভাবে আদায় হবে।(বেনায়া শরহে হেদায়া-২/২৩-শামেলা)

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...