আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ১ বছর ৯ মাস+। বিয়ের ক্ষেত্রে আমি স্বামী নির্বাচনে দ্বীনদারিতাকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি (আল্লাহ আমার নিয়ত সম্পর্কে উত্তম জানেন)।
আমাদের বিয়ের আগে আমার স্বামীর পরিবার (আমার শ্বাশুড়ি এবং ছোট ননদ) গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। আমার স্বামী এবং তার ছোট ভাই শহরে পড়াশোনা+টিউশন করে চলতেন। বিয়ের আগে থেকেই আমার স্বামীর ইচ্ছা ছিলো বিয়ের পর শহরেই ভাড়া বাসায় পুরো পরিবার নিয়ে থাকার। আমাদের বিয়ে ঠিক হবার পর তিনি শহরে বাসা ভাড়া নেন এবং বিয়ের কিছুদিন আগেই তিনি, তার ছোট ভাই, মা এবং বোন শহরের বাসায় শিফট হোন। তার ছোট ভাইও আমাদের সাথে থাকবেন শুনে আমি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করি কেননা আমি আল্লাহর ইচ্ছায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করি পর্দা করে চলার। এই ব্যাপারে অস্বস্তি প্রকাশ করলে আমাকে আশ্বস্ত করা হয় যে তারা উভয় ভাই'ই প্র‍্যাক্টিসিং এবং আমার পর্দা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু বিগত ১.৫+ বছর সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমি আমার পর্দা সঠিকভাবে করতে পারি নি।

এই ব্যাপারে বেশ কয়েকবার আমার স্বামীকে বলার পরও তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এখন এই বিষয়ে যদি আমি আমার স্বামীর সাথে কঠোরতা প্রকাশ করি, তাকে কিছুটা চাপে ফেলি, আমি কি গুনাহগার হবো?

এর আগে প্রতিবারই আমি তার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছি। তার ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা শেষ হতে বেশি বাকি নেই। আমি আশা করেছিলাম তার পড়াশোনা শেষ হলেই সে আলাদা হয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। কিন্তু দুয়েকদিন আগে আমার স্বামীর কথায় বুঝলাম সে তার ভাইকে আলাদা করার বিষয়ে এতোটা সিরিয়াস না, বরং তার কথায় প্রকাশ পেয়েছে যে তার ভাইও বিয়ের পর একই বাসায় থাকা লাগবে।
আমরা আর্থিকভাবে খুব বেশি স্বচ্ছল না যে দাম দিয়ে বড় বাসা ভাড়া করে থাকতে পারবো, আর সাধারণত ভাড়া বাসা গুলোতে রুমের সিস্টেম এমন থাকে না যে পরিপূর্ণভাবে পর্দা মেইনটেইন করা সম্ভব হয়।
এখন আমি যদি তাকে জোর দেই যে আমাকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকা লাগবে, আমার কি গুনাহ হবে?

আমার শ্বাশুড়ি ও ননদ আমার সাথে থাকতে চাইলেও আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি চাই না আমার স্বামী তার মা-বোনের প্রতি দায়িত্বে অবহেলা করুক।

1 Answer

0 votes
by (57,810 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/13274/  ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

সুতরাং যৌথ পরিবারেও মহিলাদের পূর্ণ পর্দা করতে হবে। এক্ষেত্রে সবসময় বোরখা পড়া জরুরি নয়প্রয়োজনীয় কাজ নিজ ঘরেই সাড়বেগায়রে মাহরামদের সামনে যেতে হলে পূর্ণ শরীর চেহারা সহ যেকোনো কাপড়/পোশাক দিয়ে ঢেকে যেতে হবে। শরীরের কোনো অংশ যেনো প্রকাশ না পায়এদিকে পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।

গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা বলবেনাপ্রয়োজন বশত কথা বলতে হলে কণ্ঠ নরম না করে কথা বলবে।   

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/9650/

প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

স্বামীর উপর ওয়াজিব যে সে পর্দা সম্মত থাকার ব্যবস্থা করবে। পর্দা সম্মত থাকার ব্যবস্থা না করার জন্য সে অবশ্যই গোনাহগার হবে। প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি বাহিরে কাজ করার সময় চেহারা ঢেকে কাজ করবেন। প্রয়োজনে একটি বড় হিজাব বানিয়ে নিবেন, যেটি দ্বারা চেহারা ঢাকার পাশাপাশি হাত সহ ঢাকা যায় এবং অনেক বড়।

আপনি হিকমতের সাথে এভাবে পর্দা করে কাজ করবেন,গায়রে মাহরাম সাথে এভাবে চেহারা ঢেকে কথা বলবেন। অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে বিরত থাকবেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া অব্যাহত রাখবেন। আস্তে-ধীরে স্বামীকে বুঝিয়ে পূর্ণ পর্দার পরিবেশ পরিবারের আনার চেষ্টা করবেন। স্বামীকে স্থানীয় কোন আলেমের সোহবতে যাওয়ার জন্য ফিকির ও চেষ্টা করবেন।

প্রিয় বোন, আল্লাহ তায়ালা আপনার এ কষ্টের উত্তম জাযা দিবেন, ইনশাআল্লাহ।   

যৌথ পরিবারে বসবাস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানুন: https://www.ifatwa.info/430


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 293 views
...