আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
১. হুজুর facebook এর স্টোরি তে একটা বাচ্চার ছবি দেখে লাভ রিএক্ট দিয়েছি। এর পর খেয়াল করি সেখানে এমন একটা গান অ্যাড করা আছে যেটা শিরক করছে। হিন্দি একটা গান. আমার একটু সতর্ক থেকে প্রথমেই খেয়াল করা দরকার ছিল. কিন্তু কি কারণে যে খেয়াল এ আসে নাই. একটু পর যখন গান টা  কানে আসে তখন থেকে মনের মধ্যে অনুতপ্ত বোধ হচ্ছে, আমি অনেক বার চেষ্টা করেও রিএক্ট আর ফেরত আনতে পারছি না. আমি গান টা প্রথমে ভালোভাবে শুনতে পেলে কখনো রিএক্ট  দিতাম না. আমি বাচ্চা টা কে খেয়াল করে রিএক্ট দিয়েছি। এখন আমি কি করবো? গান টা তে কথা গুলোর মাধ্যমে শিরক করছে।  রিএক্ট দিয়ে কি আমি শিরক করে ফেললাম? আমি এখন এই গুনাহ থেকে বাঁচতে কিভাবে তওবা করতে পারি।  আমাকে এই গুনাহ থেকে মুক্ত হবার উপায় বলে দিন হুজুর। শিরক জিনিস টা খুব ভয় পাই আমি. আমি সত্যি ই প্রথমে খেয়াল করি নাই.
২.  আমি দ্বীনের পথে চলার খুব চেষ্টা করতেছি নিজে নিজেই।  মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যাচ্ছে অনেক , শয়তান  আমাকে অনেক ওয়াস ওয়াসা দিচ্ছে। শয়তান এর ওয়াস ওয়াসা থেকে বাঁচতে কি আমল করতে পারি?
by (13 points)
হুজুর এই মাত্র অনেক চেষ্টার পর রিএক্ট ফেরত আনতে পেরেছি। এক্ষেত্রে আরো কিছু কি করণীয় আছে আমার? আমাকে কিছু দুআ বলে দিন হুজুর , গুনাহ থেকে বাঁচার। 

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/49423/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাতিব হানযালা আল উসায়দী (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ حَنْظَلَةَ الأُسَيِّدِيِّ، قَالَ - وَكَانَ مِنْ كُتَّابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ - لَقِيَنِي أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ كَيْفَ أَنْتَ يَا حَنْظَلَةُ قَالَ قُلْتُ نَافَقَ حَنْظَلَةُ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ مَا تَقُولُ قَالَ قُلْتُ نَكُونُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ حَتَّى كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالأَوْلاَدَ وَالضَّيْعَاتِ فَنَسِينَا كَثِيرًا قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَوَاللَّهِ إِنَّا لَنَلْقَى مِثْلَ هَذَا . فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَمَا ذَاكَ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَكُونُ عِنْدَكَ تُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ حَتَّى كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالأَوْلاَدَ وَالضَّيْعَاتِ نَسِينَا كَثِيرًا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنْ لَوْ تَدُومُونَ عَلَى مَا تَكُونُونَ عِنْدِي وَفِي الذِّكْرِ لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ عَلَى فُرُشِكُمْ وَفِي طُرُقِكُمْ وَلَكِنْ يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةً وَسَاعَةً " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ
তিনি বলেন, একদা আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কেমন আছ, হে হানযালা? তিনি বলেন, আমি বললাম, হানযালা তো মুনাফিক হয়ে গেছে। তখন তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ তুমি কি বলছ? তাকে [হানযানা (রাঃ)] বলেন, আমি বললাম, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসি, অবস্থান করি, তিনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেন চোখ দিয়ে আমরা তা প্রত্যক্ষ করছি। কিন্তু আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে বের হয়ে নিজেদের স্ত্রী-সন্তান এবং ধন-সম্পদের মাঝে ডুবে যাই তখন আমরা এর অনেক কিছু ভুলে যাই।

আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! আমারও তো এই অবস্থা। তারপর আমি এবং আবূ বকর (রাঃ) রওনা হলাম এবং আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! হানযানা মুনাফিক হয়ে গিয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা কী? আমি বললাম, আমরা আপনার নিকট থাকি, আপনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেন আমরা তা প্রত্যক্ষ দেখতে পাই। কিন্তু এরপর আমরা যখন আপনার কাছ থেকে বের হই এবং স্ত্রী-সন্তান সন্ততি ও ধন-সম্পদের মাঝে যাই তখন আমরা এর অনেক কিছু ভুলে যাই।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ আমি তাঁর শপথ করে বলছি! আমার নিকট থাকাকালে তোমাদের যে হাল হয়, যদি তোমরা সর্বদা এ অবস্থায় অবিচল থাকতে এবং সর্বদা আল্লাহর যিকরে মশগুল থাকতে তবে অবশ্যই ফিরিশতাগণ তোমাদের বিছানায় ও তোমাদের রাস্তায় তোমাদের সাথে মুসাফাহা করতো। কিন্তু হে হানযালা! ক্রমান্বয়ে ক্রমান্বয়ে (ধীরে ধীরে) হবে- (পার্থিব) ব্যয় করবে। কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বললেন। (সহীহ মুসলিম-৬৭১৩)

https://ifatwa.info/105339/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে, 
রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করে-
التائب من الذنب كمن لا ذنب له
অর্থঃ গুনাহ থেকে তাওবাকারী ঐ ব্যক্তির ন্যায় যার কোন গোনাহ নেই।–সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৪২৫০

খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

তাওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।
দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।
তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
আর ইস্তেগফার হলো শুধু মৌখিকভাবে আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
,
★তবে শুরুতে ২ রাকাত তাওবার নফল নামাজ পড়ার পর তওবা করা উত্তম, সুন্দর পদ্ধতি, এটাই বুযুর্গানে দ্বীনদের বাতলিয়ে দেওয়া আমল।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১-২. কখনো ভুল বা গোনাহ হয়ে গেলে আল্লাহ তাআলার কাছে খাঁটি দিলে তাওবাহ করবেন। কখনো শয়তানের ধোঁকায় গুনাহ হয়ে যেতে পারে। কারণ ঈমান বাড়ে এবং কমে। সব সময় ঈমানের হালত এক রকম থাকে না। সুতরাং ঈমান বাড়ানোর জন্য আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, সর্বদা হালাল খাবার গ্রহণ করতে হবে। অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার, ফরজসহ নফল নামাজ পড়তে হবে। সাধ্যানুযায়ী দান ছদকাহ করতে হবে। ইনশা'আল্লাহ আস্তে আস্তে আপনার ঈমান আরো মজবুত হবে।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...