আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
আসসালামু আলাইকুম আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো
১. আমি একদিন রিকশায় উঠে ভার্সিটি যাই, উঠার সময় ভাড়া ঠিক করে উঠেনি। আমার প্রথমে জানা ছিলো না যে রিকশাওয়ালা এই এলাকায় নতুন। যখন নেমেছি, তখন আমি যা ন্যায্য ভাড়া এবং প্রতিদিন যা দিয়ে আসছি তাই দিয়েছি। কিন্তু রিকশাওয়ালা ১০ টাকা বেশি দাবি করলো এবং বলে দেই ভাড়া ১০ টাকা বেশি হলে আমি ১০ টাকা বেশিই দিতাম। এক পর্যায়ে উনি বললেন হাশরের ময়দানে এর বিচার দিয়েন। তারপর আমি এসে পড়েছি।
এখন আমার কি করণীয়? আমার কি গুণাহ হয়েছে বা হক নষ্ট করেছি?

২. দুইজন মিলে জামাত করলে একজন আরেকজনের পেছনে দাড়াব নাকি একই লাইনে?

৩. আমাদের মসজিদে মিলাদ কেয়াম হয়, এবং রাসূল (সা) এর নাম নিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে যায়। এরকম মসজিদে নামাজ পড়া যাবে? আশেপাশের মসজিদ অনেক দূরে।

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি যেহেতু ন্যায্য ভাড়াই দিয়েছেন,সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হয়নি। আপনি তার হক নষ্ট করেননি।

(০২)
মুক্তাদী যদি মাত্র ১জন হন তাহলে অবশ্যই তাকে ইমামের ডান পার্শ্বে ইমামের সাথে একই বরাবরে দাঁড়াতে হবে।

যদি মুক্তাদি দুই বা তার অধিক হয়,তাহলে ইমামের পিছনের কাতারে দাড়াবে। (ইমাম আর তাদের দাড়ানোর মাঝে এক কাতার সমপরিমাণ দূরত্ব থাকবে,যার মাঝে তারা ঠিকঠাক ভাবে সেজদাহ আদায় করতে পারে।)

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন,
صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ ﷺ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ بِرَأْسِي مِنْ وَرَائِي، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى
একরাতে আমি নবী ﷺ–এর সঙ্গে নামায আদায় করতে গিয়ে তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পেছনের দিক ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে এলেন। তারপর নামায আদায় করলেন….। (বুখারী ৬৯০)


★বারা ইবনু ‘আযিব  হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-
كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينِهِ ، فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ حِينَ انْصَرَفَ: “رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ”.

অর্থ- আমরা যখন রাছূলুল্লাহ 1 এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা তাঁর ডানদিকে দাঁড়াতে পছন্দ করতাম। ছালাম ফিরানোর পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি “রাব্বী ক্বীনী ‘আযাবাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবাদাকা” (অর্থ- হে আমার প্রতিপালক! যে দিন তুমি তোমার বান্দাহ্দেরকে বিচারের জন্য উঠাবে, সেদিন আমাকে তোমার ‘আযাব হতে রক্ষা করো)।
(আবু দাউদ নাসায়ী।

 ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাছ  হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-
بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ، فَقُمْتُ أُصَلِّي مَعَهُ ، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ ، فَأَخَذَ بِرَأْسِي فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ.
অর্থ- একদা আমি আমার খালার (উম্মুল মু’মিনীন মাইমূনাহ এর) নিকট রাত্রি যাপন করি। রাছূলুল্লাহ 1 উঠে রাতের সালাত পড়তে লাগলেন, আমিও উঠে গেলাম তাঁর সাথে নামায পড়তে এবং গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথায় ধরে (আমাকে তাঁর পিছন দিকে ঘুরিয়ে) ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন।
(বুখারী মুসলিম)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দুইজন পুরুষ মিলে জামাত করলে মুক্তাদীকে  ইমামের ডান পার্শ্বে ইমামের সাথে একই বরাবরে দাঁড়াতে হবে।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত ইমাম সাহেবের যদি আকীদা ঠিক থাকে,সেক্ষেত্রে তার পিছনে নামাজ হবে।
সমস্যা নেই।

তবে যদি তার আকীদা ঈমান বিরোধী হয়,তথা রাসূল সাঃ হাজির নাজির,তিনি গায়েবের খবর জানতেন,এমন আকিদা শিরকী আকিদা তথা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা,যা ঈমান নিয়ে নিবে এমন আকীদার অধিকারী হয়,সেক্ষেত্রে এমন আকিদা ওয়ালা কারো পিছনে নামায বিশুদ্ধ হবে না। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ

অর্থ: (হে নবী) আপনি বলুন! আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া আসমান-যমীনে অন্য কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখেনা। এবং তারা জানে না কখন তারা উত্থিত হবে। (সূরা নামল, আয়াত-৬৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عن عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «وَمَنْ حَدَّثَكَ أَنَّهُ يَعْلَمُ الغَيْبَ، فَقَدْ كَذَبَ، وَهُوَ يَقُولُ: لاَ يَعْلَمُ الغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ»

অর্থ: হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তোমাকে বলে নবীজি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানেন, সে মিথ্যাবাদী। কারণ নবীজি (স.) নিজেই বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ গায়েব জানে না। (সহীহ বুখারী-৭৩৮০)

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...