স্বামীর কাছ থেকে ঘৃনাজনিত কারনে দূরে সরে আসলে হক নষ্ট হবে কিনা ।

Question

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্ । আমার বাবা মা আজ ৩৭ বছর যাবত একসাথে আছেন ।আমডা তিন ভাই বোন । মার ভাইয়া ২০১৬ সালে ২৮ বছর বয়সে আল্লাহ্ তা'আলার কাছে চলে গেছে, আমি দুই সন্তানের মা এবং আমার ছোটবোন বিবাহ যোগ্য । আমরা ছোট থেকেই আমার মায়ের সাথে হওয়া নানা অবিচার দেখে আসছি ।আমার জন্মের পর আব্বু পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলো, এখনও কিছু চারিত্রিক সমস্যা রয়েছে । এবং এর দোষ নানাভাবে আম্মুকে দিয়ে থাকে । অকারণে আম্মুকে অকথ্য ভাষায় রাগারাগি করে । আম্মু অনেক আগেই আব্বুর বিছানা ত্যাগ করেছে । এরকারনে প্রতিনিয়ত আব্বু অভিশাপ দেয়, কিন্তু আম্মু আর আাকে মেনে নিতেই পারছে না ।তবুও তার হক্ব আদায়ের চেষ্টা করে । এমতাবস্থায় আম্মু যখন কোরআনে কারীম তেলাওয়াত করে বা নামাজ পড়ে, আব্বু নানাভাবে আম্মুকে অভিশাপ দেয় যে স্বামীর হক্ব আদায় না করে এসব করে লাভ নেই, জাহান্নামেই যাবা, হাবিয়া দোযখেও জায়গা হবে না এবং আরো নানা কথা । আম্মু তার ভয়ে বেশিক্ষণ ধরে নামাজও আদায় করতে পারেনা ।কারন সে মসজিদ থেকে এসে আম্মুকে জায়নামাজে দেখলেই রেগে যায় আর বলে ৫ মিনিটের নামাজ আধাঘন্টা ধরে পড়ার কিছু নেই ।স্বামীর সেবা না করলে জান্নাত পাবা না । এমতাবস্থায় আম্মু খুব মনোকষ্টে আছে এবং আমলেও মনোযোগী হতে পারছে না । তার প্রশ্ন হলো-
১. আমার বাবার দেওয়া অভিশাপ কি লেগে যাবে ?  আসলেই কি এমন অবস্থায় তার স্বামীর হক্ব আদায় হচ্ছে না ?
২. স্বামীর হক্ব আদায় না করলে কি ইবাদত কোনো কাজে আসবে না ? আমার মা কি জাহান্নামেই যাবে ?
৩. বিছানা ত্যাগ করলে তো ফেরেশতারা অভিশাপ দেয়, আমার মা তো হাজার চেয়েও আর নিজের মনের ওপর জোর করতে পারছে না ।সেক্ষেত্রে কি ফেরেশতারা অভিশাপ দিচ্ছে ?

৪. আমি সন্তান হয়ে অনেক সময় তার আচরনের কারনে না চাইতেও রাগ করে ফেলি। আমার করনীয় কি ?
আমি আমার বাবার দোষ কারোর সামনে আনার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলিনি। আমার নিয়্যত ছিলো শুধুমাত্র মাসায়েল জানা ।আমি সন্তান হিসেবে গখনও আমার বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ এবং তাকে সম্মান করি ।জাযাকাল্লাহু খইরন ।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

আমাদের মনে রাখতে হবে, পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। 

(সূরা ফাতির-১৮)এ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/295

পিতা পরক্রিয়া বা কোনো প্রকার গোনাহে লিপ্ত থাকার পরও সন্তান পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।সাথে সাথে হেকমত ও প্রজ্ঞার সাথে পিতাকে বুঝানোর চেষ্টা করবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার বাবা যদি পরক্রিয়া বা গোনাহের কাজে লিপ্ত হন, তাহলে তিনি অবশ্যই এজন্য পরকালে জবাবদিহিতা করবেন। তবে আপনার মা বিছানা পরিত্যাগ করার কারণে তার গোনাহ হবে। আপনার মায়ের উচিৎ, অতিদ্রুত নিজের ভূলকে সংশোধন করে নেওয়া।