আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম।

আমি ৫ বছর হল দ্বীনের পথে ফেরার চেষ্টায় আছি।প্রথম যখন আমি সব হারাম বাদ দিয়ে তওবা করি,বুঝতে পারি হয়ত তওবা কবুল হয়েছে ইনশাআল্লাহ। তখন আমার অন্তরে তাকওয়া এত তীব্রতর ছিল যে প্রতিনিয়ত আমি আল্লহর ভয়ে কাদতাম!আমার অন্তরে যে চিন্তা হত আল্লহ সেটা কবুল করে নিতেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু ধীরে ধীরে আমার অন্তর শক্ত হয় আখলাক দুর্বল হয়,অনেক গুনাহ হয়ে যায়,যদিও আগের সেই জাহালতে পুরোপুরি ফেরত যাইনায় কিন্তু সেই কানেক্টিভিটি আর নেই আল্লহর সাথে।

আবার আমি নতুন করে খাস দিলে তওবা করি আল্লহর কাছে,নামাযে কান্নাকাটি করে,কিন্তু এক ওয়াক্ত কাদলে পরের ওয়াক্তে আর পারিনা,অন্তর ফাকা ফাকা লাগে।আমি চাই প্রতি ওয়াক্তে আমি কান্নাকাটি করি গুনাহের জন্যে,আল্লহর সাথে সেই কানেকশন টা ফিল করতে চাই।ফরয নামায ছাড়া সুন্নাত,নফল্র পাবন্দি করতে ভিষন কষ্ট হয়।দুনিয়াবি কোন জিনিস চাইতেও কেমন অনীহা লাগে,অস্থিরতা কাজ করে।

আমি আমার রব্বের সাথে সেই সান্নিধ্যে টা চাই যা আগে ছিল।আমি গুনাহ থেকে দূরে থাকার ট্রাই করি যথাসম্ভব।অতিরিক্ত আমল খুব বেশি করা হয়না।জিকির করতে নিলে জিহবা নাড়াতে ইচ্ছা করেনা,মনে মনে করি এমন লাগে।আমি এখন কি করতে পারি যাতে আবার আল্লহর প্রিয় হতে পারি?আমার উপর আমার রব রেগে নেই এটা বুঝব কিভাবে?সারাদিন কেমন অলস আর ঘুমেই কেটে যায়।

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/49423/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাতিব হানযালা আল উসায়দী (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ حَنْظَلَةَ الأُسَيِّدِيِّ، قَالَ - وَكَانَ مِنْ كُتَّابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ - لَقِيَنِي أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ كَيْفَ أَنْتَ يَا حَنْظَلَةُ قَالَ قُلْتُ نَافَقَ حَنْظَلَةُ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ مَا تَقُولُ قَالَ قُلْتُ نَكُونُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ حَتَّى كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالأَوْلاَدَ وَالضَّيْعَاتِ فَنَسِينَا كَثِيرًا قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَوَاللَّهِ إِنَّا لَنَلْقَى مِثْلَ هَذَا . فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَمَا ذَاكَ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَكُونُ عِنْدَكَ تُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ حَتَّى كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالأَوْلاَدَ وَالضَّيْعَاتِ نَسِينَا كَثِيرًا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنْ لَوْ تَدُومُونَ عَلَى مَا تَكُونُونَ عِنْدِي وَفِي الذِّكْرِ لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ عَلَى فُرُشِكُمْ وَفِي طُرُقِكُمْ وَلَكِنْ يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةً وَسَاعَةً " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ

তিনি বলেন, একদা আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কেমন আছ, হে হানযালা? তিনি বলেন, আমি বললাম, হানযালা তো মুনাফিক হয়ে গেছে। তখন তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ তুমি কি বলছ? তাকে [হানযানা (রাঃ)] বলেন, আমি বললাম, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসি, অবস্থান করি, তিনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেন চোখ দিয়ে আমরা তা প্রত্যক্ষ করছি। কিন্তু আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে বের হয়ে নিজেদের স্ত্রী-সন্তান এবং ধন-সম্পদের মাঝে ডুবে যাই তখন আমরা এর অনেক কিছু ভুলে যাই।


আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! আমারও তো এই অবস্থা। তারপর আমি এবং আবূ বকর (রাঃ) রওনা হলাম এবং আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! হানযানা মুনাফিক হয়ে গিয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা কী? আমি বললাম, আমরা আপনার নিকট থাকি, আপনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেন আমরা তা প্রত্যক্ষ দেখতে পাই। কিন্তু এরপর আমরা যখন আপনার কাছ থেকে বের হই এবং স্ত্রী-সন্তান সন্ততি ও ধন-সম্পদের মাঝে যাই তখন আমরা এর অনেক কিছু ভুলে যাই।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ আমি তাঁর শপথ করে বলছি! আমার নিকট থাকাকালে তোমাদের যে হাল হয়, যদি তোমরা সর্বদা এ অবস্থায় অবিচল থাকতে এবং সর্বদা আল্লাহর যিকরে মশগুল থাকতে তবে অবশ্যই ফিরিশতাগণ তোমাদের বিছানায় ও তোমাদের রাস্তায় তোমাদের সাথে মুসাফাহা করতো। কিন্তু হে হানযালা! ক্রমান্বয়ে ক্রমান্বয়ে (ধীরে ধীরে) হবে- (পার্থিব) ব্যয় করবে। কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বললেন। (সহীহ মুসলিম-৬৭১৩)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!


ঈমান বাড়ে এবং কমে। সব সময় ঈমানের হালত এক রকম থাকে না। তাই দুআয় কান্না করার চেষ্টা করবেন। তবুও কান্না না আসলে কান্না করার ভান করবেন। সুতরাং ঈমান বাড়ানোর জন্য আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, সর্বদা হালাল খাবার গ্রহণ করতে হবে। অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার, ফরজসহ নফল নামাজ পড়তে হবে। সাধ্যানুযায়ী দান ছদকাহ করতে হবে। ইনশা'আল্লাহ আস্তে আস্তে আপনার ঈমান আরো মজবুত হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...