রাসুল সা. ভ্রু উপড়ে ফেলা, দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করা ইত্যাদি রূপচর্চাকে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে বিকৃতি গণ্য করে এগুলো যারা করে তাদের অভিশপ্ত বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
( ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﻤَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻔَﻠِّﺠَﺎﺕِ ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻨَﻤِّﺼَﺎﺕِ ﺍﻟْﻤُﻐَﻴِّﺮَﺍﺕِ ﺧَﻠْﻖَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ) ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ১
তরজমাঃ-
নবীজী সাঃ অভিশাপ করেছেন
সেই সব নারীদের উপর,
যারা দেহাঙ্গে উল্কি (ট্যাটু) অংকন করে,
এবং সৌন্দর্য প্রদর্শনের মানসে দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, এবং ভ্রু-কে চেঁছে সরু (প্লাক) করে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে।
[সুনানে নাসাঈ-৫২৫৩]
বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা করে বলেনঃ
ﻭَﺍﻟْﻤُﺮَﺍﺩ ﻣُﻔَﻠِّﺠَﺎﺕ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ ﺑِﺄَﻥْ ﺗَﺒْﺮُﺩ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦ ﺃَﺳْﻨَﺎﻧﻬَﺎ ﺍﻟﺜَّﻨَﺎﻳَﺎ ﻭَﺍﻟﺮُّﺑَﺎﻋِﻴَّﺎﺕ ... ﻭَﺗَﻔْﻌَﻞ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻌَﺠُﻮﺯ ﻭَﻣَﻦْ ﻗَﺎﺭَﺑْﺘﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴِّﻦّ ﺇِﻇْﻬَﺎﺭًﺍ ﻟِﻠﺼِّﻐَﺮِ ﻭَﺣُﺴْﻦ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ , ﻟِﺄَﻥَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻔُﺮْﺟَﺔ ﺍﻟﻠَّﻄِﻴﻔَﺔ ﺑَﻴْﻦ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ ﺗَﻜُﻮﻥ ﻟِﻠْﺒَﻨَﺎﺕِ ﺍﻟﺼِّﻐَﺎﺭ , ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻋَﺠَﺰَﺕْ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓ ﻛَﺒُﺮَﺕْ ﺳِﻨّﻬَﺎ ﻓَﺘَﺒْﺮُﺩﻫَﺎ ﺑِﺎﻟْﻤِﺒْﺮَﺩِ ﻟِﺘَﺼِﻴﺮَ ﻟَﻄِﻴﻔَﺔ ﺣَﺴَﻨَﺔ ﺍﻟْﻤَﻨْﻈَﺮ , ﻭَﺗُﻮﻫِﻢ ﻛَﻮْﻧﻬَﺎ ﺻَﻐِﻴﺮَﺓ , ﻭَﻳُﻘَﺎﻝ ﻟَﻪُ ﺃَﻳْﻀًﺎ ﺍﻟْﻮَﺷْﺮ , ﻭَﻣِﻨْﻪُ : ( ﻟَﻌْﻦ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﺮَﺓ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﺮَﺓ) , ﻭَﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻔِﻌْﻞ ﺣَﺮَﺍﻡ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻔَﺎﻋِﻠَﺔ ﻭَﺍﻟْﻤَﻔْﻌُﻮﻝ ﺑِﻬَﺎ ﻟِﻬَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄَﺣَﺎﺩِﻳﺚ , ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﻐْﻴِﻴﺮ ﻟِﺨَﻠْﻖِ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ , ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﺰْﻭِﻳﺮ ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﺪْﻟِﻴﺲ
ভাবার্থঃ- ﻣُﻔَﻠِّﺠَﺎﺕএর দ্বারা উদ্দেশ্য হল,
দাতের মধ্যখানে রেত দ্বারা ফাক সৃষ্টি করা,
আর এ কাজ বয়স্ক মহিলারা সোন্দর্য্য প্রদর্শন ও বয়স লুকানোর জন্য করে থাকে।কেননা শুধুমাত্র ছোট অবস্থায়-ই দাতের মধ্যে ফাক-ফোকর থাকে,বড় হলে আর তা থাকে না। আর তাই কিছুসংখ্যক মহিলা যখন বড় হয়ে যায়,তখন তারা বয়স লোকানোর জন্য এ পদ্ধতিকে গ্রহণ করে থাকে।
এ পদ্ধতিকে বুঝানোর জন্য الوشر (আল-ওয়াশর)শব্দকে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে,
এজন্য অন্য হাদীসে বলা হয়েছে ﻟَﻌْﻦ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﺮَﺓ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﺮَﺓ(দাত ফাককারী ও যার দাত ফাক করা হয়েছে উভয়ের উপর আল্লাহর লা'নত)।
উপরুক্ত প্রমাণাদির ধরুণ দাত ফাক করার উক্ত পদ্ধতিকে হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে।
রাসুলের (সা.) যুগে এক ব্যক্তির নাক কেটে গেলে তিনি রুপার ও রাসুলের (সা.) নির্দেশে পরবর্তীতে স্বর্ণের নাক বানিয়ে নিয়েছিলেন। আরফাজা ইবনে আসআদ (রা.) বলেন, জাহেলি যুগের কুলাব যুদ্ধের সময় আমার নাকে আঘাত লাগে। তখন আমি একটি রূপার নাক বাঁধিয়ে নেই। কিন্তু তা দুর্গন্ধময় হয়ে পড়লে রাসুল (সা.) একটি স্বর্ণের নাক বানিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৭৭৬)