মহান আল্লাহ তাআলার কালাম তিলাওয়াতের বিশেষ নিয়ম ও আদব রয়েছে।
প্রত্যেক হরফকে মাখরাজ,ছিফাত অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে।
,
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا
কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরস্থির ভাবে, স্পষ্টরূপে। -সূরা মুযযাম্মিল (৭৩) : ৪
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
زينوا القرآن بأصواتكم
সুন্দর সূরের মাধ্যমে কুরআনকে (এর তিলাওয়াতকে) সৌন্দর্যমণ্ডিত কর। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬৮
হরফে ض নিজের মাখরাজ এবং ছিলো ছিফাতের দিক লক্ষ্য করে স্পষ্ট ظ নয়,আবার স্পষ্ট دال নয়,বরং একেবারেই পৃথক একটি হরফ।
উহাকে যেভাবে দাল দ্বারা পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষদের ন্যায় পড়া ভুল।
ঐ ভাবে স্পষ্ট ظ এর দ্বারা পরিবর্তন করে উচ্চারণ করা,যেমন কিছু সাধারণ ক্বারী সাহেব করে থাকেন,এটাও ভুল।
,
কিন্তু নামাজ ফাসাদ হওয়ার ব্যাপারে ফতোয়া ইহার উপর যে যদি জেনে বুঝে,বেপরোয়া হয়ে সঠিক উচ্চারণ এর উপর শক্তি থাকা সত্ত্বেও স্পষ্ট দাল বা স্পষ্ট ظ উচ্চারণ করে,তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
অবশ্য যদি না জানা,বা দুই হরফের মধ্যে পার্থক্য করে উচ্চারণ এর উপর শক্তি না থাকার কারনে সে যেটা পড়তেছে,সেটাকেই সঠিক মনে করে যে সেই ضই পরতেছে,তাহলে তার নামাজ ছহীহ হয়ে যাবে।
(জাওয়াহিরুল ফিকহ ১/৩৩৮,ফাতাওয়ায়ে রিয়াজুল উলুম ২/২৬৪)
,
وفي التاتار خانیۃ عن الحاوي :حکي عن الصفار أنہ کان یقول :الخطأ إذا دخل في الحروف لا یفسد ؛لأن فیہ بلویٰ عامۃ الناس ؛لأنہم لا یقیمون الحروف إلا بمشقۃ۔ وفیہا :إذا لم یکن بین الحرفین اتحاد المخرج ولا قربہ إلا أن فیہ بلویٰ العامۃ کالذال مکان الضاد أو الزاء المحض مکان الذال والظاء مکان الضاد لا تفسد عند بعض المشائخ ۔الخ
قلت :ینبغي علیٰ ہذا عدم الفساد في إبدال الثاء سینا والقاف ہمزۃکما ہو لغۃ عوام زماننا فإنہم لا یمیزون بینہما ویصعب علیہم جدا کالذال مع الزاي ولا سیما علی قول القاضي أبي عاصم وقول الصفارالخ(شامي:۱؍۴۲۵)
সারমর্মঃ এই ভাবে দুই হরফের মাঝে পৃথক করা কষ্টকর হলে যারা উচ্চারণ করতে পারেনা,তাদের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
শায়েখ আব্দুল্লাহিল হাদী বলেছেনঃ
আরবী প্রতিটি অক্ষরকে তার মাখরাজ অনুযায়ী যথাযথভাবে উচ্চারণ করা অপরিহার্য।
আরবীতে উচ্চারণগত পার্থক্যের কারণে শব্দের অর্থগত পরিবর্তন সাধিত হয়। তাই তাজবীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মাখারিজুল হুরুফ বা হরফের উচ্চারণ স্থল। বিশুদ্ধ উচ্চারণের উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে যথার্থ জ্ঞানার্জন করা ও সেগুলো চর্চা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পৃথিবীতে একামাত্র আরবী ছাড়া আরও কোন ভাষায় হুবহু ‘যোয়াদ‘ এর মত উচ্চারণ নাই। তাই আরবীকে বলা হয় ‘যোয়াদের ভাষা’। আর উচ্চারণগত দিক দিয়ে এটি সবচেয় কঠিন উচ্চারণ। তাই অনারবদের জন্য এর যথার্থ উচ্চারণ করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
এই কারণে এর উচ্চারণ নিয়ে দ্বিমত পরিলক্ষিত হয়। আরেকটি কারণ হল,
(ض) এর উচ্চারণ বিষয়ে স্কলারদের মাঝেও কিছুটা দ্বিমত রয়েছে।
,
যাহোক, আমাদের চেষ্টা করতে হবে সঠিকভাবে উচ্চারণ করার। এর উচ্চারণ যত কঠিন হোক না কেন, আমরা জানি, চেষ্টার অপর নাম সাফল্য। চেষ্টা করলে এর সঠিক উচ্চারণটি আয়ত্ব করা কোন ব্যাপার নয়।
সুতরাং যোযাদ এর সঠিক উচ্চারণ শিক্ষা ও প্র্যাক্টিস করার জন্য নিম্নোক্ত ভিডিও দুটি ফলো করার জন্য অনুরোধ করব। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
.