আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায।
আমাদের গ্রামের মসজিদে ভেতরের এবং বাইরের রুম মিলিয়ে নামাজ পড়ার জন্য দুটি রুম রয়েছে। তীব্র গরমের কারণে মুসল্লিগণ ভেতরের রুম সম্পূর্ণ খালি রেখে বাইরের রুমে (মানে বারান্দায়) জামায়াত আদায় করার জন্য ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ভেতরের রুম সম্পূর্ণ খালি রেখে এবং ভেতরের রুমের দরজাও খোলা রেখে বারান্দায় নামাজের মূল জামায়াতের আয়োজন করার বিধান কি? ভেতরের রুম খালি রেখে বারান্দায় জামায়াতের নামাজ পড়ার কারণে নামাজের কোনো অসুবিধা হবে কি? নাকি এটা সম্পূর্ণ বৈধ? অনুগ্রহপূর্বক দালিলিক জবাব দিলে অনেক উপকৃত হতাম।

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (556,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

যদি মসজিদের ভিতরে জামাত হয়,আর কেহ মসজিদের বারান্দায় থেকে একাকী ইক্তেদা করে,সেক্ষেত্রে তার নামাজ মাকরুহ হবে। 

মসজিদের বারান্দা যদি মসজিদের অন্তর্ভুক্ত করে নির্মাণ করা হয়ে থাকে তাহলে ইমাম সাহেবের বারান্দায় জামাত করতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ মসজিদের যেকোনো স্থানে জামাত করা যাবে।

কিন্তু যদি বারান্দা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না হয় তাহলে সেখানে নামায আদায় করলে মসজিদে নামায আদায়ের সওয়াব লাভ হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত ওয়াবিসাহ ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ، أَنَّ رَجُلاً صَلَّى خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ فَأَمَرَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُعِيدَ الصَّلاَةَ.
এক ব্যক্তি (জামাতে নামায পড়া অবস্থায়)কাতারের পিছনে একাকী নামায আদায় করেছিল,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ তাকে পূনরায় নামায দোহড়ানোর আদেশ দিলেন।

মসজিদের সাথে যুক্ত বর্ধিতাংশকে বারান্দা বলা হলেও মূলত তা মসজিদের অংশবিশেষ এবং তাতে মসজিদের আদব-ইহতেরামের সকল হুকুমই প্রযোজ্য হবে। তাই ইতিকাফকারীগণও সেখানে যেতে পারবেন। তবে নির্মাণের সময়ই যদি কর্তৃপক্ষ তা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না করে তবে সেক্ষেত্রে ঐ বর্ধিতাংশ মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হবে না এবং মসজিদের হুকুমও তাতে প্রযোজ্য হবে না।

উল্লেখ্য, আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে যে বারান্দা থাকে তা সাধারণত মসজিদের অন্তর্ভুক্তই হয়ে থাকে। কারণ, নির্মাণকারীগণ তা মসজিদের বাহিরের জায়গা হিসাবে নির্মাণ করেন না। 

رَجُلٌ لَهُ سَاحَةٌ لَا بِنَاءَ فِيهَا أَمَرَ قَوْمًا أَنْ يُصَلُّونَ فِيهَا بِجَمَاعَةٍ فَهَذَا عَلَى ثَلَاثَةِ أَوْجُهٍ: أَحَدُهَا إمَّا أَنْ أَمَرَهُمْ بِالصَّلَاةِ فِيهَا أَبَدًا نَصًّا، بِأَنْ قَالَ: صَلُّوا فِيهَا أَبَدًا. أَوْ أَمَرَهُمْ بِالصَّلَاةِ مُطْلَقًا وَنَوَى الْأَبَدَ. فَفِي هَذَيْنِ الْوَجْهَيْنِ صَارَتْ السَّاحَةُ مَسْجِدًا لَوْ مَاتَ لَا يُورَثُ عَنْهُ، (الفتاوى الهندية، كتاب الوقف، الباب الحادى عشر فى المسجد-2/455، خانية على الهندية-3/290)

একজন ব্যক্তি যার একটি আঙ্গিনা আছে যেখানে কোন বিল্ডিং নেই,সে কওমকে সেখানে জামাতে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন, এর তিনটি দিক রয়েছে: তার মধ্যে একটি হল যে তিনি তাদেরকে সেখানে নামাজ আদায় করার আদেশ দিয়েছিলেন এই বলে: সেখানে চিরকাল নামাজ আদায় করুন। অথবা তিনি তাদের সম্পূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে আদেশ করেছিলেন এবং চিরকাল নামাজ আদায়ের ইচ্ছা করেছিলেন। এই দুটি ক্ষেত্রে, স্কোয়ারটি একটি মসজিদে পরিণত হয়েছিল, যদি তিনি মারা যান, তবে সেখানে ওয়ারাছাত চলবেনা। 

(ফাতাওয়া খানিয়া ১/৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬২)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাদের গ্রামের  মসজিদের বারান্দাও মসজিদে হিসেবে নির্মিত হয়ে থাকে। তাহলে সেটি মসজিদের হুকুমেই থাকবে। তাই বারান্দায় নামায পড়া মসজিদে নামায পড়ার হুকুমেই হবে।

সেই হিসেবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে গরমের কারনে বা অন্য কোনো প্রয়োজনে ভিতরের রুম খালি রেখে বারান্দায় জামাত পড়লেও মসজিদের জামাত হিসেবে ধর্তব্য হবে।
এটি জায়েজ আছে।

তবে যদি এক্ষেত্রে মুছল্লি এতো বেশি হয় যে কোনোক্রমেই জায়গার সংকুলান আর হয়না,সেক্ষেত্রে এটি অনুচিত। 

উল্লেখ্য,  যদি বারান্দা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না হয় তাহলে সেখানে নামায আদায় করলে মসজিদে নামায আদায়ের সওয়াব লাভ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...