ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা)
আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।
■
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ
صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার
উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ
পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَمْرٍو قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: قَالُوا: يَا
رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا شَيْئًا مَا نُحِبُّ أَنْ
نَتَكَلَّمَ بِهِ وَإِنَّ لَنَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، قَالَ: «أَوَ
قَدْ وَجَدْتُمْ ذَلِكَ؟» قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ»
আবু হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মনের মধ্যে এমন কিছু চিন্তার উদ্রেক
হয় যা সূর্য উদিত হওয়ার পরিধির মধ্যকার (মূল্যবান) সবকিছুর বিনিময়েও কথায় প্রকাশ
করা আমরা মোটেও সমীচীন মনে করি না। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি তা অনুভব করো? তারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ
এটিই ঈমানের সুস্পষ্ট পরিচয়। (মুসলিম, আবু দাউদ,
ইবনে হিব্বান) আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ১২৯৬ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ
الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ
الْجُرَيْرِيِّ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ،
حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ
الْجُرَيْرِيِّ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ
حَنْظَلَةَ الأُسَيْدِيِّ، وَكَانَ، مِنْ كُتَّابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ مَرَّ بِأَبِي بَكْرٍ وَهُوَ يَبْكِي فَقَالَ مَا لَكَ يَا حَنْظَلَةُ
قَالَ نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا أَبَا بَكْرٍ نَكُونُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ
فَإِذَا رَجَعْنَا إِلَى الأَزْوَاجِ وَالضَّيْعَةِ نَسِينَا كَثِيرًا . قَالَ
فَوَاللَّهِ إِنَّا لَكَذَلِكَ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم . فَانْطَلَقْنَا فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَا لَكَ يَا حَنْظَلَةُ " . قَالَ نَافَقَ حَنْظَلَةُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ نَكُونُ عِنْدَكَ تُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ
كَأَنَّا رَأْىَ عَيْنٍ فَإِذَا رَجَعْنَا عَافَسْنَا الأَزْوَاجَ وَالضَّيْعَةَ
وَنَسِينَا كَثِيرًا . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لَوْ تَدُومُونَ عَلَى الْحَالِ الَّذِي تَقُومُونَ بِهَا مِنْ عِنْدِي
لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ فِي مَجَالِسِكُمْ وَفِي طُرُقِكُمْ وَعَلَى
فُرُشِكُمْ وَلَكِنْ يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةً وَسَاعَةً وَسَاعَةً " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হানযালা আল-উসাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সচিবগণের
অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি কোন একদিন কাঁদতে কাঁদতে আবূ বাকর (রাঃ) এর সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
আবূ বাকর (রাঃ) তাঁকে প্রশ্ন করেন, হে হানযালা! তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন, হে আবূ বাকর!
হানযালা তো মুনাফিক্ব হয়ে গেছে। আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মাজলিসে অবস্থান করি এবং তিনি আমাদেরকে জান্নাত-জাহান্নামের স্মরণে নাসীহাত করেন, তখন মনে হয় যেন
আমরা সেগুলো স্বচক্ষে দেখছি। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পর স্ত্রী-পুত্র-পরিজন ও বিষয়-সম্পদের
কাজে ব্যাকুল হয়ে পড়ি এবং অনেক কিছুই ভুলে যাই। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ!
আমাদেরও তো এই অবস্থা। চলো আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট যাই। তারপর আমরা সেদিকে যাত্রা শুরু করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দেখে প্রশ্ন করেন, হে হানযালা! কি সংবাদ? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হানযালা
তো মুনাফিক্ব হয়ে গেছে। আমরা যখন আপনার নিকটে থাকি আর আপনি জান্নাত-জাহান্নামের নাসীহাত
করেন, তখন মনে হয় যেন আমরা সেগুলো প্রত্যক্ষভাবে দেখছি। পরে যখন বাড়ি
ফিরে গিয়ে স্ত্রী-পুত্র-পরিজন ও বিষয়-সম্পদের কাজে ব্যাকুল হয়ে পড়ি তখন অনেক কিছুই
ভুলে যাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা আমার নিকট
হতে যে অবস্থায় ফিরে যাও, যদি সবসময় সেই অবস্থায় থাকতে তাহলে অবশ্যই তোমাদের বৈঠকে, বিছানায় এবং
পথে-ঘাটে ফেরেশতারা তোমাদের সাথে মুসাফাহা (করমর্দন) করতো। হে হানযালা! সেই অবস্থা
মাঝে মধ্যে হয়ে থাকে। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৫১৪; সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪২৩৬), মুসলিম। আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। হাদিসের মান
: সহিহ হাদিস
https://ifatwa.info/3012/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ
রয়েছে যে,
■ কুফরী বাক্যর অর্থ জানা নেই এবং বলার ইচ্ছে নেই তবে মুখ ফসকে
কোনো কুফরী বাক্য মুখ থেকে উচ্ছারণ হয়ে গেছে,এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাফির হবে না। যেমন হযরত আবুযর
রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رضي الله عنه قَالَ :قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :(إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ
وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মত থেকে ভূল ভ্রান্তি এবং নিরুপায় মূলক কাজ কে ক্ষমা
করে দিয়েছেন।(সুনানু উবনি মা'জা-২০৪৩)
■ কুফরী বাক্যর অর্থ জানা রয়েছে, এবং বলার ইচ্ছাও
রয়েছে,তবে কাফির হওয়ার জন্য বলেনি, বরং রং তামাশ মূলক কেউ
বলল, তাহলে এমতাস্থায় সে কাফির হয়ে যাবে,
"مَنْ
تَكَلَّمَ بِكَلِمَةِ الْكُفْرِ هَازِلًا أَوْ لَاعِبًا كَفَرَعِنْدَ الْكُلِّ
وَلَا اعْتِبَارَ بِاعْتِقَادِه
যে ব্যক্তি কোনো কুফুরি বাক্য রং তামাশা করে বলবে, সে কাফির হয়ে
যাবে। যদিও তার এ'তেকাদ বা বিশ্বাসে কুফরি না থাকুক। (বাহরুর রায়েক-৫/১৩৪, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/২৭৫-২৭৬)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ভুলবশত মুখ ফসকে হঠাৎ উক্ত কথা বের হয়ে গেলে এতে ঈমানের কোনো
সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে তারপরও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া ও তওবা করা।
আর মনের মধ্যে আজে বাজে চিন্তা আসলে সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা
করবেন।