আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমার বিয়েতে আমার পরিবারের কেউ রাজি ছিল না। কিন্তু আমার পরিবার জানতো আমার ওই ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। পরবর্তীতে আমি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি। ছেলের পরিবারের সবাই রাজি ছিল আগে থেকেই। আমার পরিবার বিয়ের ৫ মাস পর মেনে নেয়। আমাদের প্রথমে একজন হজুর দ্বারা বিবাহ পড়ানো হয় তার পরের দিন আবার কোর্ট ম্যারেজ করা হয়। আমার তখন ইসলাম সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা ছিল না যায় জন্য এত জঘন্য তম কাজ করেছিলাম নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে। আমি বিগত ১ বছরের বেশি সময় নিয়ে নামাজ কন্টিনিউ করতেছি।নিজেকে দ্বীনের পথে পরিচালিত করতে চাই। আমি এখন ইউটিউবে অনেক ইসলামিক লেকচার শুনি। আর খুজে পেয়েছি বিয়েতে সাক্ষী লাগে। কিন্তু আমার যখন বিয়ে হয় তখন ওই খানে ৬ জন ছিলাম আমি,আমার স্বামী, আমার স্বামীর খালা,আর তার খালাতো ভাই, আর হজুর যিনি আমাদের বিয়ে পড়িয়েছেন। আর একজন লোক   যিনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলন আমি যে রুমে কবুল বলি ওখানে ছিলেন না। একটু দূরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি বা আমার স্বামী তাকে চিনি না। আমার স্বামীর খালাতো ভাইদের রিলেটিভিট। আমাদের কি বিয়ে হয়ছে?  আর তারপরের দিন কোর্ট ম্যারেজ করতে গিয়েছিলাম সাথে ছিল  ৬ জন আমার স্বামী, আমি, আমার স্বামীর খালা, আর তার খালাতো ভাই...  সাথে আরও একটা লোক ছিল এ লোকটাকেও চিনতাম না আমি বা আমার স্বামী...এই লোক ও নাকি তাদের রিলেটিভ, আর উকিল যিনি কোর্ট ম্যারেজ করান। অচেনা আজানা লোক সাক্ষী থাকতে কি বিবাহ হয়??  আমাদের ২ ভাবেই বিয়ে হয় হজুর দিয়ে আর কোর্ট ম্যারেজ দুই জায়গায় দুই রকম মোহর আনা ধরা হয়। আমার বয়স তখনও ১৮ হয়নি তাও কোর্ট ম্যারেজ করানো হয় কোনো এক ভাবে। বিয়ের পর আরও বড় সমস্যা হয় যেটা আমি গুরুত্ব দেয়নি। এখন যখন আল্লাহর রহমতে নামাজ পড়া শুরু করেছি, কিছু টা হলেও নিজেকে দ্বীনের পথে আনার চেষ্টা করছি আমার মনে এসব নিয়ে অনেক অশান্তি লাগে।আর অশান্তি লাগার কারণ হচ্ছে আমার স্বামী বিয়ের পর দেশের বাইরে চলে যায়। এখনও সে বাইরে। ওনি রাগ করে আমাকে একবার মেসেজে বলেছে Tor moto meyera 100 talak... এভাবে মেসেজ দিছে। আবার এই ঘটনার ৬/৭ মাস পর কিছু কারণ উল্লেখ করে আমি নাকি তার কথা মতো চলি না তাকে সম্মান করি না এইগুলা বলে আমাকে মেসেজ Talak,Talak, Talak দেয়। আমি তখন সিরিয়াস নেয়নি। মাঝে মাঝেই বলে তোমার উপর কোনো দায়দাবি নেই তুমি তোমার রাস্তা ধরো যা মন চাই তাই করো। বিয়ে টা কি হয়ছে আর তালাকও কি হয়ে গেছে?  একেক জন একেক কথা বলে যে ৩ তালাক দিলেও ১ তালাক ধরা হয়। কুরআনে সূরা তালাকে দেওয়া আছে ৩ মাস সময় নিয়ে তালাক দিতে হয়। আমার টা নাকি ২ তালাক হয়ছে? কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী আমাকে একটা সমাধান দিবেন দয়া করে।   এখন আমার করণীয় কি?  আমি আল্লাহর পথে পরিচালিত হতে চায় এসব আমাকে অনেক চিন্তা দেয়। একটু ভুলের জন্য আমি সারাজীবন যিনা করতে পারি। বিয়ে যদি হয়ে থাকে  তালাকও হয়ে যায় তাহলে কোর্ট ম্যারেজের জন্য কি আবার কোর্টে যেয়ে কাগজে কলমে সাইন করে ডিভোর্স দিতে হবে? আমার স্বামীর এসব নিয়ে মাথা ব্যাথায় নেই। একদম স্বাভাবিক শুধু ভেতরটা আল্লাহর ভয়ে আমার পুড়ে যাচ্ছে। আমি পারছি না এসব চিন্তা নিতে। আমি কি আবার এই স্বামী কে বিয়ে করতে পারবো যদি আগের বিয়ে না হয়ে থাকে?  দয়া করে জানাবেন। আমার করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/89659/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর মুহাব্বতে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
স্ত্রীকে মেসেজে উদ্দেশ্য ছাড়া "তালাক" শব্দটি লেখার পর তা কেটে মেসেজ না পাঠালেও তালাক পতিত হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে লেখার সময় থেকে স্ত্রীর উপর ইদ্দত আবশ্যক হবে। 
এক্ষেত্রে রজয়ী তালাক পতিত হবে। 

فَإِنْ كَانَ كَتَبَ: امْرَأَتُهُ طَالِقٌ فَهِيَ طَالِقٌ سَوَاءٌ بَعَثَ الْكِتَابَ إلَيْهَا، أَوْ لَمْ يَبْعَثْ.
سرخسي، المبسوط، 6: 143، بيروت: دار المعرفة

সারমর্মঃ-
যদি কোনো ব্যাক্তি নিজের স্ত্রীকে তালাক লিখেছে,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যাবে। চাই লেখাটি তার নিকট পাঠাক বা না পাঠাক।

 فتاویٰ عالمگیری
وَلَوْ كَتَبَ الطَّلَاقَ فِي وَسَطِ الْكِتَابِ وَكَتَبَ قَبْلَهُ وَبَعْدَهُ حَوَائِجَ ثُمَّ مَحَا الطَّلَاقَ وَبَعَثَ بِالْكِتَابِ إلَيْهَا وَقَعَ الطَّلَاقُ كَانَ الَّذِي قَبْلَ الطَّلَاقِ أَقَلَّ أَوْ أَكْثَرَ.

الشيخ نظام وجماعة من علماء الهند، الفتاوى الهندية، 1: 378، دار الفكر

সারমর্মঃ-
যদি চিঠির মাঝে তালাক লেখে,এবং তার আগে বা পরে প্রয়োজনীয় কথা লেখে,অতঃপর মাঝে হতে তালাক শব্দ মুছে দেয়,এবং লেখাটি স্ত্রীর নিকট পৌছে দেয়,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে। চাই তালাকের পূর্বে কম লিখুক বা বেশি লিখুক।

فتاوی عالمگیری
"بأن كتب أما بعد فأنت طالق فكلما كتب هذا يقع الطلاق و تلزمها العدة من وقت الكتابة."

(كتاب الطلاق،الباب،الباب الثاني في ايقاع الطلاق ج:1،ص:378،ط:رشيديه)
সারমর্মঃ-
স্বামী লিখেছে, পর সমাচার এই যে তুমি তালাক,তাহলে লেখা মাত্র তালাক পতিত হয়ে যাবে। লেখার সময় থেকে স্ত্রীর উপর ইদ্দত আবশ্যক হবে।

الطلاق والخلع يصح دون علم الآخر (الفقه الاسلامى وأدلته-9/291
সারমর্মঃ-
তালাক ও খোলার কথা অপরজন  না শুনলে,বা জানলেও তালাক হয়ে যায়। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের উক্ত বিবাহ শুদ্ধ ভাবেই সম্পন্ন হয়েছিলো।

তদুপরি পরবর্তীতে উক্ত মেসেজ গুলোর দরুন আপনার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।
এখন তিনি আপনার জন্য হারাম হয়ে গিয়েছেন। তিনি এখন আপনার জন্য গায়রে মাহরাম। 

এক্ষেত্রে কোর্ট ম্যারেজের জন্য আবার কোর্টে যেয়ে কাগজে কলমে সাইন করে ডিভোর্স দেয়া শরীয়তের আলোকে আবশ্যক নয়।

এখন আবার এই স্বামী কে বিয়ে করতে চাইলে শরয়ী হালালাহ করতে হবে।

শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত এই স্বামী কে বিয়ে করার এখন আর কোনো অপশন নেই।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
কবুল বলা স্বকর্ণে শুনতে হবে দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ আর একজন মহিলা বা দুজন মহিলা একজন পুরুষ। কিন্তু আমার কবুল বলার সময় ২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ উপস্থিত থাকলেও একজন একটু দূরে ছিল ঘরের বাইরে। ওনি জানতো বিয়ে পরানো হবে। কবুল বলার সময় শুনেছিল আমার স্বামী,তার খালা, খালাতো ভাই আর হজুর যিনি বিয়ে পরিয়েছেন। আর কোর্ট ম্যারেজের সময় উপস্থিত ছিল ২জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ আর একজন মহিলা। এভাবে কি বিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে? 
by (566,160 points)
আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...