আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
739 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (100 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
১.পিরিয়ড শেষের দিকে সপ্তম দিনে যদি দুপুরে গোসলের সময় সাদাস্রাব দেখা যায় কিন্তু তখন ফরজ গোসল করার জন্য প্রস্তুত না থাকে তার পরের দিন ফরজ গোসল করে আগের দিনের ৫ ওয়াক্তের কাজা নামাজ পরে নিলে হবে?! ষষ্ঠ  দিনে সামান্য সাদাস্রাব কিছুটা লাল রঙের হয়েছিলো যেটাকে হায়েজ বলে সম্ভবত!  তাই সপ্তম দিনে ফরজ গোসলের জন্য প্রস্তুত ছিলো না!  অষ্টম দিনে ফরজ গোসল করে নিলেই হবে?  নাকি গুনাহ হবে একদিন বিলম্ব করার কারনে? এমতাবস্থায় করনীয় কি?

২.পরের দিন কাজা পরার নিয়ম কি?! প্রতি ওয়াক্তের ফরজগুলো পরতে হয় শুধু? ফরজ গোসল শেষে আগে কাজা নামাজগুলো পরে নিতে হয় তারপর চলতি দিনের ওয়াক্তের নামাজ পরতে হয় নাকি যে কোনো একসময় কাজা নামাজগুলো পরে নিলেই হয়?! যদি আগে কাজা পরে নিতে হয় সেক্ষেত্রে এতো রাকাআত কাজা পরতে পরতে চলতি দিনের ওয়াক্তের নামাজে দেরি হলে করনীয় কি? আছরের পরে কাজা নামাজ পরা যাবে?!
৩.কাজা নামাজগুলোর নিয়ত কেমন হবে?!

জাজাকিল্লাহ খাইরান!

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


নামাজের উপর সার্বক্ষণিকই গুরুত্ব দিতে হবে। ইচ্ছকৃতভাবে নামাজ কাযা করলে তাকে অনেক দিন জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে। সুতরাং একজন মুসলিম হিসেবে সব সময়ই লক্ষ্য রাখতে হবে যেন, কোনোভাবেই যেন নামাজ ছুটে না যায়। তবে কোনো কারণে যদি সময় মতো নামাজ নাও পড়া হয় তবে অবশ্যই সেই নামাজ কাযা আদায় করে নিতে হবে।
,
সুরা নিসার ১০৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فَاِذَا قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا ﴿۱۰۳﴾

অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।

এই আয়াতে নামাযকে তার যথানির্ধারিত সময়ে পড়ার তাকীদ করা হয়েছে। 
যদি কোনো কারনে কাজা হয়েই যায়,তাহলে দ্রুত কাজা আদায় করে নিবে।
,
ইবনে হাজার (রা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো নামাজ পড়ল না, সে সেই নামাজ কখনোই পূর্ণ করতে পারবেন না। কাজা করলেও হবে কিন্তু কাজা করার কারণে কিয়ামতের দিনে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। (আল-মুহাল্লাহ, ২/২৩৫)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ষষ্ঠ  দিনে সামান্য সাদাস্রাব কিছুটা লাল রঙের হয়েছিলো যেটাকে হায়েজ বলা হবে।
সপ্তম দিন দুপুরে যখন আপনার হায়েজ শেষ হয়ে গিয়েছিলো,সেই ওয়াক্তের ভিতরেই পবিত্রতা অর্জন করে জোহরের নামাজ পড়া আপনার উপর ফরজ ছিলো।
,
পরের দিন গোসল করে নামাজ যে কাজা করা হয়েছে,এটি কোনোভাবেই বৈধ কাজ হয়নি।
এতে গুনাহ হয়েছে।
,
কাজা আদায়ের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে খালেছ দিলে তওবা করতে হবে। 
আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে যে আগামীতে এহেন ভুল হবেনা।     
 
(০২)

আপনি যদি সাহেবে তারতীব হন,তথা সারা জীবনে এখন পর্যন্তও আপনার ছয় রা'কাতের বেশী নামায কাযা না  হয়ে থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় আপনার উপর ছুটে যাওয়া ওয়াক্ত গুলোর নামায সমূহকে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে  কা'যা করা ওয়াজিব।

ছুটে যাওয়া নামাযকে আদায় না করলে বর্তমান নামাযই আদায় হবে না।
,
তবে যদি কারো ছয় ওয়াক্তের ছেয়ে বেশী নামায কা'যা থাকে,তাহলে উনার উপর পূর্বের নামায প্রথমে পড়া ওয়াজিব হবে না।তবে সময়-সুযোগ থাকলে অবশ্যই পড়ে নেয়াই উচিৎ।

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত হয়েছেন আপনি যদি সাহেবে তারতিব হোন,তাহলে আগে উক্ত নামাজ গুলো আদায় করতে হবে।
আর যদি আপনি সাহেবে তারতিব না হোন,তাহলে এই সময়েই আদায় করা আপনার উপর আবশ্যক নয়,সময় সুযোগ মতো আপনি আদায় করে নিবেন।
,
কাজা আদায়ের সময় শুধু ফরজ নামাজ গুলো আদায় করবেন,সুন্নাতের কাজা করতে হবেনা।
তবে বিতর নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।
,
হ্যাঁ আছরের পর কাজা আদায় করা যাবে।        
,
(০৩)
এই ভাবে নিয়ত করবেন যে আমি অমুক দিনের অমুক নামাজের কাজা পড়িতেছি।
যেমন আমি সোমবারের ফজরেত নামাজের কাজা পড়িতেছি।  , 
আর যদি কাজা নামাজ অনেক বেশি হয়ে যায়,তাহলে সেক্ষেত্রে কাজা আদায়ের জন্য এই ভাবে নিয়ত করবেঃ
 ‘অমুক ওয়াক্তের সবচেয়ে প্রথম বা শেষ নামাজ পড়ছি। এভাবে নামাজের ‘কাজা’ আদায় করলে তা এক সময় পরিপূর্ণ আদায় হয়ে যাবে।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 76)
'' كثرت الفوائت نوى أول ظهر عليه أو آخره''۔
''(قوله: كثرت الفوائت إلخ) مثاله: لو فاته صلاة الخميس والجمعة والسبت فإذا قضاها لا بد من التعيين؛ لأن فجر الخميس مثلاً غير فجر الجمعة، فإن أراد تسهيل الأمر، يقول: أول فجر مثلاً، فإنه إذا صلاه يصير ما يليه أولاً أو يقول آخر فجر، فإنّ ما قبله يصير آخراً، ولا يضره عكس الترتيب؛ لسقوطه بكثرة الفوائت''.

সারমর্মঃ যদি অনেক গুলো নামাজ কাজা হয়ে যায়,তাহলে তার উপর প্রথম জোহরের বা শেষ জোহরের নিয়ত করবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...