ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/43119/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
শরীয়তের
বিধান হলো এক বৈঠকে ৩ তালাক দেওয়া হোক, বা একাধিক বৈঠকে, এক শব্দে ৩ তালাক দেওয়া হোক বা একাধিক শব্দে ৩ তালাক
দেওয়া হোক,
সব
ছুরতেই ৩ তালাকই পতিত হয়ে যাবে। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত স্ত্রীর উপর
তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।
তিন
তালাক দেবার পর উক্ত মহিলা আর নিজের স্ত্রী থাকে না। পর মানুষ হয়ে যায়। এটিই অমোঘ বিধান।
এক্ষেত্রে
সূরত একটিই বাকি আছে। তা হল, তার এই
স্ত্রীর অন্যত্র বিবাহ হতে হবে। তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার
করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি এই (সাবেক)
স্ত্রীকে তালাক দেয়,
তারপর
ইদ্দত শেষ হয়,
তাহলেই
কেবল প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তি আবার উক্ত
মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন। এছাড়া দ্বিতীয় কোন
রাস্তা খোলা নেই।
মহান
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
فَإِن
طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن
يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ
يَعْلَمُونَ
তারপর
যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর
সাথে বিয়ে করে না নেবে,
তার
জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই
পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা
থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য
এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]
হাদীস শরীফে
এসেছে-
وقال الليث
عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي
صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك
হযরত
নাফে রহ. বলেন,যখন
হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’
(রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন- “যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো
তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন।
যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য
স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}
আরো
জানুনঃ
https://ifatwa.info/3190/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি সত্যিই তিনি তার স্ত্রীকে তিন
তালাক দিয়ে থাকেন তাহলে তার স্ত্রীর উপর
তিন তালাক পতিত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই এখন তার
স্ত্রী তার জন্য হালাল নন। এখন তাদের সংসার করা জায়েজ নয়। এমনকি দেখা সাক্ষাত করাও
জায়েজ নয়। করলে গোনাহ হবে এবং সহবাস করলে
যিনার গোনাহ হবে।
তবে যদি তার স্ত্রীর অন্য কোথাও বিয়ে হয় এবং তার সাথে
দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর তাকে তালাক দিলে অথবা বিবাহের সময় স্ত্রী কর্তৃক
তালাকের অধিকার নিয়ে রেখে সহবাসের পর নিজের উপর মহিলা তালাক গ্রহণ করলে ইদ্দত
পূরণের পর তথা তিন ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়ার পর নতুন করে মহর ধার্য করে প্রস্তাব ও
গ্রহণের মাধ্যমে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে আবার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হতে পারবেন।
২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু
তিন তালাক হয়ে গিয়েছে তাই দ্বিতীয়বার বিয়েটা সহীহ হয়নি এবং হবেও না। যতক্ষণ উপরোক্ত
বিষয়গুলো না পাওয়া যাবে। তবে আরো স্পষ্টের জন্য নিকটস্ত কোনো নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে
সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।