আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,

আমি একজন পেশাদার লোগো ডিজাইনার, ঘটনাটা ২-৩ মাস আগের, একজন ক্লায়েন্ট আমাকে whatsapp এ নক করে, উনি arab amirate এ থাকেন, তো উনার agency এর জন্য উনার Business logo & guidelines design করতে হবে, যেহেতু উনি আমার কাজ পছন্দ করেই আমাকে নক দিছেন, তো উনার সাথে জুম এ মিটিং করলাম, যেহেতু আমরা দুই পক্ষ একজন আরেকজনকে চিনি না, তো freelancer হিসেবে আমি ক্লায়েন্ট থেকে আমাদের fixed করা বাজেট এর অর্ধেক আগে নিয়ে থাকি যাতে করে ক্লায়েন্ট আবার আমাকে টাকা না দিয়ে ভেগে চলে যায় অথবা যাতে প্রতারণা করতে না পারে আমার সাথে। তো উনি একজন মুসলিম ছিলেন নাম মুসতফা ইয়াসিন, উনার সাথে বাজেট fixed হয় $460 এর। যেহেতু logo & guidelines design এ খরচ করা সাধারণত কোম্পানির জন্য one time investment তাই দাম সাধারণত বেশী হয়ে থাকে।

সে যাই হোক, তবে বাজেটে আমরা দুইজনে দরকষাকষি করে $৪৬০ এ উপণিত হই। এর পর উনি বললেন যে জুমে একটু মিটিং করবে আমার সাথে, তাই আসলাম, অনেক কথা বলার পর আমি তাকে বললাম যে আমাকে কাজ শুরুর আগে ৫০% advance দিতে হবে। তো উনি আমাকে বললো যে না, তোমাকে ২০% পে করবো advance, কেননা তোমাকে তো আমি ভালো করে চিনি না, তাছাড়া তুমি যদি টাকা নিয়ে চলে যাও, তাই। তো মিটিং এর এক পর্যায়ে উনি আমাকে বললো যে কোন চিন্তার দরকার নাই, বাকি ৩০% টাকা আমি তোমাকে পাঠিয়ে দেব, তুমি শুধু logo design কাজ এর progress ব্যাপারে আমাকে জানাবা, ব্যাস, আমি নিজ থেকেই তোমাকে বকেয়া ৩০% পাঠিয়ে দিবো। আর বাকি ৫০% কাজ শেষ হলে দেবেন। উনি আমাকে সময় কতদিন লাগবে তা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি বললাম ৭ দিন মতো সময় লাগবে।

*আমাদের কমিউনিকেশন ইংরেজি ভাষায় হয়েছিলো।

তো তার কথা শুনে আমি রাজি হয়ে যায়, ২০% advance এ করার, $৪৬০ এর ২০% $৯২, যেহেতু পেপাল ফি কাটে ৮% তাই উনাকে আমি $১০০ দিতে বলি। উনি আমাকে পে ও করেন।

তো মিটিং এর কথা মতন, আমি logo Design এর কাজ শুরু করি, এবং logo design এর update দিতে থাকি মুস্তাফা ক্লায়েন্টকে, ২ দিন মতো সময় চলে যায় ক্লায়েন্ট এর লোগো পছন্দ হয় না। আমার যতদূর মনে পড়ে ৩-৫ দিন এর সময় ক্লায়েন্ট আমার লোগো ডিজাইন পছন্দ করেন। এবার আমি ক্লায়েন্ট কে আমার বকেয়া ৩০% পাঠানোর কথা বলি যেহেতু আমাদের কাজের শর্ত অনুযায়ী ওই পাওনা ৩০% আমার হক।

তো ক্লায়েন্টকে আমি টাকা পাঠানোর ইনভয়েস পাঠায়, ক্লায়েন্ট আমাকে বলেছিলো যে টাকা পাঠিয়ে দেবে, বাট ওইদিন টাকা পাঠান নি, এর পরের দিন ও বলি যে টাকা পাঠাতে, বাট ক্লায়েন্ট টাকা পাঠান নি, অথচ ক্লায়েন্ট আমাকে মেসেজে বলছিলো যে উনি আজকের মধ্যেই নিশ্চিত টাকা পাঠিয়ে দেবেন। কিন্তু তাও পাঠান নি।

যেহেতু আমি সময় দিয়েছিলাম কাজ শেষ করতে ৭ দিন সময় লাগবে আমার, তা পিছিয়ে গেলো। যেহেতু আমি আমার ৩০% এখন ও পাইনি, তাই আমি বাকি কাজ ও শুরু করতে আশা পাচ্ছিলাম না, তারপর ও logo design কাজ শেষে guidelines ডিজাইন এর কাজ এ কিছুটা শেষ করি প্রায় ৫০%।

ততদিনে timelime ৭ দিনের উপরে চলে যায়।

*আমার তো কোন দোষ ছিলনা, ক্লায়েন্ট যদি আমার পাওনা ৩০% দিয়ে দিতো তাহলে কাজটা ৭ দিনেই শেষ হয়ে যেত।

তো ৯-১১ দিনের মাথায় ক্লায়েন্ট হঠাৎ নক করে বলে যে, তুমি আমার কাজ শেষ কর নাই এখন ও, তুমি শুধু টাকার জন্য খোজ নিচ্ছ, আরো ইত্যাদি ইত্যাদি কথা শুনাই আমাকে।

তারপর উনি আমাকে জানান যে, উনার ডিসিশন ফাইলান, যে উনি আমাকে দিয়ে কাজ করাবেন না।

আমি উনাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করি, কিন্তু উনি নাছোড় বান্দা, উনার ডিসিশন ফাইনাল। আমাকে দিয়ে আর কাজ করালেন না। তো উনার লোগো ডিজাইন এর মূল ফাইল গুলো ও আমার থেকে নিলেন না। চলে গেলেন।

আমি আর উপায় না পেয়ে, উনার জিমেইল এ উনার জন্য করা logo design এর ফাইল Ai পাঠিয়ে দেয়,

উনি ওইগুলো রিসিভ করছেন কিনা জানি না, কিন্তু আমি আমার ৩০% এখন ও পাইনাই, যা আমার হক ছিলো।কাজ তো প্রায় ৬০% এর উপর কমপ্লিট হয়ে গেছিলো, উনি যদি ৩০% বকেয়া টাকা পাঠানো নিয়ে তালিমালি না করতেন তাহলে তো কাজ সুন্দর ভাবে শেষ হয়ে যেত।

কথা হয়েছিলো যে উনাকে কাজের আপডেট দিলে উনি ৩০% পাঠিয়ে দেবেন, এই দিকে logo design করে তা চয়েস ও করলেন উনি, আবার টাকা পাঠাবে বলে আর পাঠান নি।

*তাই আমার প্রশ্ন সম্মানিত শায়েখগণ,

১| এই যে তার পাঠানো মোট বাজেটের $৪৬০ এর ২০% $৯২, এই ৯২০০ টাকা কি আমার জন্য হালাল হবে ভোগ করা?

যেহেতু উনি আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে পরে উনার কাজের ফাইল না নিয়ে চলে গেলেন, যা আমি তাকে মেইলে পরে পাঠিয়ে দেয়, এখন টাকাটা হালাল হবে কিনা?

২| কাজ তো আমি করেই ফেলেছি, যেহেতু চুক্তি অনুযায়ী আমি কষ্ট করেছি, শ্রম দিয়েছি লোগোটা ডিজাইন করতে, তাই ওই টাকা কি আমার জন্য হারাম হবে কিনা? নাকি ফেলে দিবো ওই ৯২০০ টাকা?

৩| এখন ও বকেয়া ৩০% সহ আরো ৫০% তার কাছে আমার পাওনা, উনি কাজ না নিয়েই চলে গেলেন, তাই ওই ৩০% আমার প্রাপ্য টাকার কি হবে?

জাযাকাল্লাহু খইর ইয়া শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (554,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 

হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

★ইসলাম মানুষকে যেসব উন্নত চরিত্রের শিক্ষা দেয়, তন্মধ্যে অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি ও চুক্তির বাস্তবায়ন। যেকোনো ভালো কাজের অঙ্গীকার পূরণ করা ওয়াজিব।

 পবিত্র কোরআনে ওয়াদার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ হয়েছে, 
يا ايها الذين امنوا اوفوا بالعقود
'হে ইমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করবে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১)
الا الذين عاهدتم من المشركين.....

তবে যেসব মুশরিকের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, পরে তারা চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, আর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সেই চুক্তি তোমরা মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ দায়িত্বনিষ্ঠদের ভালোবাসেন। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
,
ওয়াদা (চুক্তি) পালনকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। যেমন তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ওয়াদা পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)। 
.
ইসলামে অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘন করা থেকেও নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, '(অমুহাজির মুসলমানরা) তোমাদের সাহায্য চাইলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্যকর্তব্য, তবে সে সাহায্য যদি এমন কোনো (অমুসলিম) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হয়, যাদের সঙ্গে তোমাদের কোনো চুক্তি আছে, তবে নয়।' (সুরা আনফাল, আয়াত : ৭২)
.
আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ৯২০০ টাকা আপনার জন্য ভোগ করা হালাল হবে।

(০২)
ঐ টাকা আপনার জন্য হালাল হবে।

(০৩)
এটা আপনার পাওনা থাকবে।

এটা শোধ না করার কারনে ঐ ব্যাক্তির বান্দার হক নষ্টের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...