আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in সালাত(Prayer) by (11 points)
১/নামাজের সময় সালোয়ার ছোট মনে হলে নিচে নামালে যদি নাভির নিচে নেমে যায়, তাহলে কি নামাজে প্রবলেম হবে?

২/সূরা ওয়াকিয়াহ বা সন্ধ্যার মাসনূন আমল মাগরিবের আজানের আগে পড়ে নিলে হয়?

৩/সাদাস্রাবের প্রবলেম বেশি, ওযু করে চার বা ছয় রাকাত পড়তেই হয়ে যাচ্ছে,এ অবস্থায় কি নামাজ শেষ করে,নফল নামাজ বা যে তেলাওয়াত গুলো করা হয় ওগুলো শেষ করা যাবে?নাকি ওযু করে নফল নামাজ বা তেলাওয়াত শেষ করবো?ধরো,এশার পর তো সূরা মূলক পড়ি,এখন নামাজের মাঝে হলে তো নামাজ শেষ করতে পারবো বলে জানি।কিন্তু ওযু করে সূরাটা পড়বো?

৪/আমি স্বামী এবং সন্তানের উদ্দ্যেশে দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়ি। এখন এগুলো কি রেগুলার পড়লে গুনাহ হবে? আর দুই জনের উদ্দ্যেশে কি একই নিয়্যাতে একত্রে নামাজ পড়লে হবে?মাঝে মাঝে সময় স্বল্পতা থাকে, তখন তো আলাদা করে পড়তে সময় লাগে, তাই।

৫/বেতর নামাজ এক রাকাত পড়ার বিষয়ে জানতে চাচ্ছি,নিয়ম সহ।

1 Answer

0 votes
by (567,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নামাজে সতর ঢাকা ফরজ।

সুরা আ'রাফের ৩১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۳۱﴾

হে আদম সন্তান! প্রত্যেক সলাতের সময় তোমরা সাজসজ্জা গ্রহণ কর, আর খাও, পান কর কিন্তু অপচয় করো না, অবশ্যই তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।


https://ifatwa.info/101509/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ صَفِيَّةَ ابْنَةِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ الْحَائِضِ إِلاَّ بِخِمَارٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . وَقَوْلُهُ " الْحَائِضُ " . يَعْنِي الْمَرْأَةَ الْبَالِغَ يَعْنِي إِذَا حَاضَتْ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا أَدْرَكَتْ فَصَلَّتْ وَشَيْءٌ مِنْ شَعْرِهَا مَكْشُوفٌ لاَ تَجُوزُ صَلاَتُهَا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ قَالَ لاَ تَجُوزُ صَلاَةُ الْمَرْأَةِ وَشَيْءٌ مِنْ جَسَدِهَا مَكْشُوفٌ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَقَدْ قِيلَ إِنْ كَانَ ظَهْرُ قَدَمَيْهَا مَكْشُوفًا فَصَلاَتُهَا جَائِزَةٌ .

হান্নাদ (রহঃ) ...... আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে মেয়ের ঋতুবতী হওয়ার বয়স হয়েছে, উড়না ব্যবহার করা ছাড়া তার সালাত কবূল হয় না। - ইবনু মাজাহ ৬৫৫, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৭৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

এই বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত এই হাদীসটি হাসান। আলিমগণ এই হাদীস অনুসারে আমল গ্রহণ করেছেন। তাঁরা বলেনঃ কোন সাবালিকা মহিলা যদি তার চুলের কিছু অংশ অনাবৃত রেখে সালাত আদায় করে, তবে তার সালাত হবে না। ইমাম শাফিঈ-এর অভিমতও এ-ই। তিনি বলেনঃ শরীরের কিছু অংশ অনাবৃত রেখে কোন মহিলার সালাত হবে না। তিনি আরও বলেনঃ বলা হয় সালাত আদায়ের সময় যদি কোন মহিলার পায়ের পিঠ খোলা থাকে, তবে তার সালাত আদায় হয়ে যাবে।

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে : বালেগা বা সাবালিকা অর্থাৎ- যে বয়সে পৌঁছলে মেয়েরা ঋতুবতী হয় বা স্বপ্নদোষ হয় কিংবা শারী‘আহ্ পালনের যোগ্য হয় সে বয়সের মেয়ের সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) খিমার বা ওড়না ছাড়া বৈধ বা বিশুদ্ধ হবে না । যে জিনিস কোন জিনিসকে ঢেকে রাখে তাকেই খিমার বলে। পরিভাষায় প্রত্যেক ঐ জিনিসকে খিমার বলে যা মাথাকে ঢেকে রাখে। অত্র হাদীসে খিমার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ বস্ত্ত যা দ্বারা মহিলারা তাদের মাথা এবং ঘাড় ঢেকে রাখে।

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নারীর মাথা ঢেকে রাখতে হবে। নারীর জন্য সলাতরত অবস্থায় মাথা ঘাড় ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এ হাদীসের দ্বারা ঋতুবতী নারীর কথা বর্ণনার দ্বারা স্বাধীন ও দাসী নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি। উভয়েই সমান। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সলাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শরীরের আকর্ষণীয় অংশ বা লজ্জাস্থান ঢাকা শর্ত।

কিছু মানুষের ধারণা, নামায অবস্থায় যদি কোনো মহিলার একটি চুল বের হয়ে থাকে তাহলেও নামায হবে না। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়।

নামাযে একটি দুইটি চুল বের হয়ে গেলে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না। কেননা সতরের ক্ষেত্রে মহিলাদের মাথার সমস্ত চুল এক অঙ্গ হিসেবে গণ্য। সুতরাং মাথার সমস্ত চুলের এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি তিনবার সুবহানা রাবিক্ষয়াল আযীম’ বলা পরিমাণ বের হয়ে থাকে তাহলে নামায ফাসেদ হবে; অন্যথায় নয়।

উল্লেখ্য, নামায পড়তে হবে সমস্ত মাথা ঢেকে পূর্ণ সতর্কতার সাথে; যেন চুলের কোনো অংশ বের না হয়ে যায়। -ফাতাওয়া শামী ১/৪০৯; ফাতহুল কাদীর ১/২২৬)
★ শরীয়তের বিধান হলো নামাযের মধ্যে সতরের আওতাধীন কোনো একটি অঙ্গের এক চতুর্থাংশ যদি স্বেচ্ছায় খুলা হয়,তাহলে এক মুহুর্তের জন্য খুলা হলেও নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।কিন্তু যদি অনিচ্ছায় এক চতুর্থাংশ খুলে যায়,তাহলে তিন তাসবিহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা) পরিমাণ সময় পর্যন্ত খুলে গেলে নামায ফাসিদ হবে। কিন্তু যদি তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় থেকে কম হয়,কিংবা এক চতুর্থাংশ থেকে কম হয়,তাহলে  নামায ফাসিদ হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তো আপনার সতর খুলে যায়নি,সুতরাং এমতাবস্থায় আপনার নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০২)
না হবেনা।
মাগরিবের পরে পড়ে নিতে হবে।

(০৩)
আপনি তো মা'যুর নন।
সুতরাং আপনি যেই নামাজেই থাকুন,সাদা স্রাব বের হলেই নামাজ ছেড়ে দিয়ে উক্ত স্থান পাক করে অযু করে এসে নামাজ আদায় করবেন।

কুরআন দেখে তিলাওয়াত করলে সেক্ষেত্রে সাদা স্রাব বের হলে কুরআন তিলাওয়াত অফ রেখে অযু করে এসে কুরআন তিলাওয়াত করবেন।

তবে কুরআন মুখস্থ পড়লে অযু করে আসা আবশ্যক নয়। কেননা এক্ষেত্রে তো কুরআন স্পর্শ করতে হচ্ছেনা।

(০৪)
এই নামাজ রেগুলার পড়লে কোনো গুনাহ হবেনা।

দুই জনের উদ্দ্যেশে একই নিয়্যাতে একত্রে নামাজ পড়লেও হবে।

কেননা নফল নামাজে একাধিক নফলের নিয়ত করা যায়।

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/54142/

(০৫)
এটা হানাফি মাযহাবের মত নয়।

হানাফি মাযহাবে ৩ রাকাতই আদায় করতে হবে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/859

তবে আপনি ভিন্ন মাযহাবের অনুসারী হলে তাদের মাযহাব অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে তাদের থেকে নামাজের পদ্ধতি জেনে নেয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 140 views
0 votes
1 answer 136 views
0 votes
1 answer 273 views
+1 vote
1 answer 183 views
...