আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
94 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম শাইখ,

নামাজের ২য় রাকাআতে অর্ধেক আত্যাহিয়্যাতু পাঠ করতে হয়। এখানে অর্ধেক বলতে তাশাহুদ এর কতটুকু অংশ বোঝানো হয়েছে? ফরজ সালাতের তৃতীয় রাকাআতে কি ফাতিহার সাথে সুরা মিলিয়ে পড়তে হয়? সেজদায় কি চোখ বন্ধ করা যায় না?
অনেক সময় বেতের নামাজ তাহাজ্জুদ নামাজের পরে পড়বোএমন চিন্তা থেকে রেখে দেই কিন্তু উঠে দেখা গেলো ফজরের আজান হচ্ছে এমতাবস্থায় আমি বেতের নামাজ টা কিভাবে আদায় করবো? বেতের নামাজ কি এক রাকাআত পড়া যায়? গেলে সেটা কিভাবে? শুনা যায় বেতের নামাজ না পড়লে ওইদিনের কোন নামাজের হিসেব আমলনামায় আসে না এটা কতটুকু সহিহ??

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিতর নামাজ তিন রাকাত।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

     

 عن أبي سلمة بن عبد الرحمن أنه سأل عائشة رضي الله عنها كيف كان صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم في رمضان؟ قالت ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة، يصلي أربعا فلا تسأل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي أربعا فلا تسأل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي ثلاثا

 

আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রমযানুল মুবারকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামায কীরূপ হত?’ উম্মুল মুমিনীন বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে ও রমযানের বাইরে এগারো রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন-এত সুন্দর ও দীর্ঘ সে নামাযযা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতঃপর চার রাকাত পড়তেন-এরও দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে চেয়ো না। এরপর তিন রাকাত পড়তেন।’

 

(সহীহ বুখারী ১/১৫৪সহীহ মুসলিম ১/২৫৪সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬)

 

.  عن سعد بن هشام أن عائشة حدثته أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان لا يسلم في ركعتي الوتر.

 

সা’দ ইবনে হিশাম বলেন, (উম্মুল মুমিনীন) আয়েশা রা. বলেছেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না।’

 (সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ১৫১)

 

كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يسلم في الركعتين الأوليين من الوتر. هذا حديث صحيح على شرط الشيخين ولم يخرجاه

 

ইমাম হাকেম রাহ. সা’দ ইবনে হিশামের বিবরণ এভাবে বর্ণনা করেছেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না।’ 

 (আলমুস্তাদরাক ১/৩০৪)

 

 শরীয়তের বিধান মতে  বিতির নামাজেরও কাজা আদায় করতে হবে।

 

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى

 

অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়েবা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর। (সহীহ মুসলিমহাদীস নং-১৬০১মুসনাদে আহমাদহাদীস নং-১২৯৩২সুনানে বায়হাকী কুবরাহাদীস নং-৪১৮২)

 

 ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

 

وفي الفتاوى رجل يقضي الفوائت فإنه يقضي الوتر وإن لم يستيقن أنه هل بقي عليه وتر أو لم يبق فإنه يصلي ثلاث ركعات ويقنت ثم يقعد قدر التشهد ثم يصلي ركعة أخرى فإن كان وترا فقد أداه وإن لم يكن فقد صلى التطوع أربعا ولا يضره القنوت في التطوع

 

ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,একজন ব্যক্তি সে তার জীবনের ছুটে যাওয়া নামায সমূহের কা'যা করতেছে। তাহলে সে বিতিরেরও কা'যা করবে।যদি নিশ্চিত না থাকে যে,তার উপর কোনো বিতির কা'যা রয়েছে কি নাতাহলে সে তিন রা'কাত কা'যা পড়বে,এবং কুনুত করবে। অতঃপর তাশাহুদ পরিমাণ সময় বৈঠক করবে।অতঃপর আরো এক রাকাত পড়বে।যদি সেটা বিতির হয়ে থাকেতাহলে সেটা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি বিতির না হয়ে থাকে,তাহলে তো সে চার রাকাত পড়েই নিয়েছে যা নফল হিসেবে গণ্য হবে। নফল নামাযে কুনুত করাতে কোনো সমস্যা নেই। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২৫)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে  প্রথম বৈঠকে আত্যাহিয়্যাতু পুরাটা পড়বে অর্থাৎ ‘আবদুহু ওয়া রসূলুহু’ পর্যন্ত পড়বে। দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাসূরা পড়বে না।

২. ফরজ সালাতের তৃতীয় রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হয় না।

৩. সেজদায় চোখ বন্ধ রাখা অনুত্তম।

৪. ছুটে যাওয়া বিতরের নামাজ পরে কাযা করে নিবেন।

৫. বিতরের নামাজ তিন রাকাত। এক রাকাত নয়।

৬. প্রশ্নোক্ত কথাটি সঠিক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 75 views
0 votes
1 answer 201 views
+1 vote
1 answer 135 views
...