জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
যদি বলা হয় যে নবীদের আগের এবং পরের সব গুনাহ মাফ তাহলে আকীদাটি শুদ্ধ নয়।
কারন তারা নবুয়তের আগে এবং পরে কোনো গুনাহই করেননি।
সমস্ত নবী রাসুল নিষ্পাপ। এটি কোরআন, হাদিস, উম্মতের ঐকমত্য সিদ্ধান্ত ও অকাট্য যুক্তির আলোকে প্রমাণিত। তবে কিছু আয়াতে যে নবীদের তাওবা, ইস্তেগফার কবুল করা সংক্রান্ত এসেছে,তার মানে হলো বৈধতার সীমায় অবস্থান করে নবীরা যদি নিজস্ব ইজতিহাদ বা চিন্তার ভিত্তিতে কোনো অনুত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, আল্লাহ তাআলা সেটিও ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।
যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। সব নবী ও রাসুল নিষ্পাপ ছিলেন। কোনো নবীকে গুনাহগার বা কোনো কাজে আল্লাহর অবাধ্য মনে করলে ইমান নষ্ট হয়ে যাবে।
কাজি আয়াজ (রহ.) লিখেছেন : নবীগণ মাসুম তথা নিষ্পাপ হওয়ার বিষয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহ ঐকমত্য রয়েছে।
,
নবি রাসুল দের নিষ্পাপ হওয়া সংক্রান্ত জানুনঃ
যেহেতু আল্লাহপাকের দরবারে নবীগণের স্থান ও মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চে এবং যেহেতু মহান ব্যক্তিবর্গের দ্বারা ক্ষুদ্র ত্রুটি-বিচ্যুতি সংঘটিত হলেও তাকে অনেক বড় মনে করা হয়, সেহেতু কোরআন হাকিমে এ ধরনের ঘটনাবলীকে অপরাধ ও পাপ বলে অভিহিত করা হয়েছে। যদিও সেগুলো প্রকৃতপক্ষে আদৌ পাপ নয়।
,
★দারুল উলুম দেওবন্দ এর 40122 ফতোয়াতে বলা হয়েছে যে নবীদের দুনিয়াবি বিষয়ে কিছু ইজতিহাদী ভুল হতে পারে।
তবে সেটি শরীয়তের পরিভাষা অনুযায়ী গুনাহ নয়।
বিস্তারিত জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
সুরা ত্বহার ৪০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِذۡ تَمۡشِیۡۤ اُخۡتُکَ فَتَقُوۡلُ هَلۡ اَدُلُّکُمۡ عَلٰی مَنۡ یَّکۡفُلُهٗ ؕ فَرَجَعۡنٰکَ اِلٰۤی اُمِّکَ کَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُهَا وَ لَا تَحۡزَنَ ۬ؕ وَ قَتَلۡتَ نَفۡسًا فَنَجَّیۡنٰکَ مِنَ الۡغَمِّ وَ فَتَنّٰکَ فُتُوۡنًا ۬۟ فَلَبِثۡتَ سِنِیۡنَ فِیۡۤ اَهۡلِ مَدۡیَنَ ۬ۙ ثُمَّ جِئۡتَ عَلٰی قَدَرٍ یّٰمُوۡسٰی ﴿۴۰﴾
যখন তোমার বোন চলছিল। অতঃপর সে গিয়ে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একজনের সন্ধান দেব, যে এর দায়িত্বভার নিতে পারবে’? অতঃপর আমি তোমাকে তোমার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিলাম; যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে দুঃখ না পায়। আর তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে। তখন আমি তোমাকে মানোবেদনা থেকে মুক্তি দিলাম এবং তোমাকে আমি বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে অবস্থান করেছ। হে মূসা, তারপর নির্ধারিত সময়ে তুমি এসে উপস্থিত হলে’।
সুরা কাসাসের ১৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ دَخَلَ الۡمَدِیۡنَۃَ عَلٰی حِیۡنِ غَفۡلَۃٍ مِّنۡ اَهۡلِهَا فَوَجَدَ فِیۡهَا رَجُلَیۡنِ یَقۡتَتِلٰنِ ٭۫ هٰذَا مِنۡ شِیۡعَتِهٖ وَ هٰذَا مِنۡ عَدُوِّهٖ ۚ فَاسۡتَغَاثَهُ الَّذِیۡ مِنۡ شِیۡعَتِهٖ عَلَی الَّذِیۡ مِنۡ عَدُوِّهٖ ۙ فَوَکَزَهٗ مُوۡسٰی فَقَضٰی عَلَیۡهِ ٭۫ قَالَ هٰذَا مِنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۵﴾
আর মুসা আঃ শহরে প্রবেশ করল, যখন তার অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক। তখন সেখানে সে দু’জন লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত অবস্থায় পেল। একজন তার নিজের দলের এবং অপরজন তার শত্রুদলের। তখন তার নিজের দলের লোকটি তার শত্রুদলের লোকটির বিরুদ্ধে তার কাছে সাহায্য চাইল। অতঃপর মূসা তাকে ঘুষি মারল ফলে সে তাকে মেরে ফেলল। মূসা বলল, ‘এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে পথভ্রষ্টকারী প্রকাশ্য শত্রু’।
وكز
শব্দের অর্থ ঘুষি মারা। ঘুষির সাথেই লোকটি মারা গেল।
কার্যগত চুক্তির কারণে কিবতীকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হলে তা জায়েয হত না, কিন্তু মূসা আলাইহিস সালাম তাকে প্ৰাণে মারার ইচ্ছা করেননি; বরং ইসরাঈলী লোকটিকে তার যুলুম থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে হাতে প্রহার করেছিলেন। এটা স্বভাবতঃ হত্যার কারণ হয় না। কিন্তু কিবতী এতেই মারা গেল। [ফাতহুল কাদীর] মুসা আলাইহিস সালাম অনুভব করলেন যে, তাকে প্রতিরোধ করার জন্য আরও কম মাত্রার প্রহারও যথেষ্ট ছিল কাজেই এই বাড়াবাড়ি না করলেও চলত। এ কারণেই তিনি একে শয়তানের কারসাজী আখ্যা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
★মুসা আঃ ইচ্ছাকৃত উক্ত কিবতিকে হত্যা করেননি।মাজুলকে সাহায্য করার জন্যই মূলত তিনি তাকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দিতে চাইছিলেন।কেননা তখন কিবতিরা বনি ইসরাঈলের উপর জুলুম-নির্যাতনের ষ্টীম রোলার চালাতো।
মূসা আঃ কিবতিকে জুলুম-নির্যাতন থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে তাকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দিতে চাইছিলেন।কিন্তু ঘটনাক্রমে উক্ত ঘুষি দ্বারা ঘটনাস্থলেই কিবতি লোকটি মারা যায়।এদ্বারা মূসা হত্যাকারী সাব্যস্ত হচ্ছেন না। এবং উনার কোনো প্রকার গোনাহ ও হবে না।
বিস্তারিত জানুনঃ