আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
221 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

১। নবী রাসূল গণ কবিরা গুনাহ থেকে মুক্ত, তারা ত মাসুম, অনেক আলেম বলেন নবী রাসূল রা সগীরা গুনাহ থেকে মুক্ত নন,
২। নবী রাসূল গণ দের এই বিষয় এ আমাদের আকিদাহ টা কি হওয়া উচিত, তারা কি সকল গুনাহ থেকে মাসুম?? আমাদের আকিদাহ টা কি রাখা উচিত এই সম্পর্ক এ

৩। এছাড়া হযরত আদম ( আঃ) জান্নাত এ যে নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন, এইটা কি গুনাহ ছিল??
*** যেহেতু নবী রাসূল গণ মাসুম, তাহলে ফল খাওয়ার কারণে কি গুনাহ কি হয়েছিল তার?
৪। অনেকে বলে, নবীজিকে স. সৃষ্টি না করা হলে দুনিয়া সৃষ্টি করা হতো না। এই কথা কি কুরআন হাদিস এর কোথাও কি আছে? এই বিষয়ে আমাদের আকিদাহ টা কি হওয়া উচিত।

৫। হযরত ঈসা ( আঃ)  শেষ জামানায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত হয়ে কি আকাশ থেকে অবতরণ করবেন??

৬। কোন জালিম / অত্যাচারি কোন ব্যক্তি / অত্যাচারি কোন শাষক ও তার সহোযোগিদের  কে কি  লানত দেওয়া যাবে কি??
  ***লানত দিলে কি কোন গুনাহ হবে??

ওস্তাদ কষ্ট করে উওর দিলে অনেক উপকার হয়।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মা'সুম বলা হয় কথা-বার্তা, চাল-চলন, আকীদা-বিশ্বাস, লেনদেন সবদিক থেকে আল্লাহ তাআলা যাকে বিশেষ অনু্গ্রহে শয়তানের প্রভাব থেকে সর্বদা মুক্ত রেখেছেন। ফলে তার দ্বারা কোনো কবীরা কিংবা সগীরা গুনাহ সংঘটিত হয় না। আর সমস্ত নবীগণই এই গুণে গুণান্বিত ছিলেন।

নবিগন ছগিরা ও কবিরা সমস্ত গুনাহ থেকেই মুক্ত,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত। 

এতদ্বসত্ত্বেও কোনো কোনো নবী থেকে প্রকাশিত যে কাজগুলোকে বাহ্যিকভাবে অপরাধ মনে হয় বাস্তবে তা কোনো অপরাধ ছিল না। বরং তা ছিল উত্তমের বিপরীতে অনুত্তম কাজ।
কিন্তু আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দাদের থেকে যেন অনুত্তম কোনো কাজও প্রকাশিত না হয় তাই এ ধরনের অনুত্তম কাজের জন্যও তাদেরকে সতর্ক করে দেন।

মোল্লা আলী কারী রহঃ র্ব্ণনা করেছেন,

اَلْأَنْبِيَاءُ مَعْصُوْمُوْنَ قَبْلَ النَّبُوَّةِ وَبَعْدَهَا عَنْ كَبَائِرِ الذُّنُوْبِ وَصَغَائِرِهَا وَ لَو سَهْوًا عَلى مَاهُوَ الْحَقُّ عِنْدَ الْمحقِّقين

“নবীগণ নবুয়াতের পূর্বে ও পরে কবীরা-সগীরা উভয় প্রকার গুনাহ থেকে নিষ্পাপ পবিত্র এমনকি অনিচ্ছাকৃতভাবেও । এটাই মুহাক্কিক ওলামাদের নিকট হক কথা।”(মিরকাত)

আল্লামা তাফতাযানী রহঃ বলেন,রাসুলুল্লাহ সাঃ হতে সগিরা গোনাহ সংগঠিত হতে পারে,সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে জমহুর উলামায়ে কেরাম বলেন,রাসূলুল্লাহ থেকে যেভাবে কবিরা গোনাহ হয়নি ঠিক সেভাবে সগিরাও সংগঠিত হয়নি।

আরো জানুনঃ- 

নবি রাসুল দের নিষ্পাপ হওয়া সংক্রান্ত জানুনঃ 

(০২)
আমরা আকীদাহ রাখবো যে তারা সকল গুনাহ থেকে মা'সুম।

(০৩)
সুরা বাকারার ৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

 وَ قُلۡنَا یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَ زَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ وَ کُلَا مِنۡہَا رَغَدًا حَیۡثُ شِئۡتُمَا ۪ وَ لَا تَقۡرَبَا ہٰذِہِ الشَّجَرَۃَ فَتَکُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۳۵﴾

এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাকো এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাকো, কিন্তু এই গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে।

فَاَزَلَّہُمَا الشَّیۡطٰنُ عَنۡہَا فَاَخۡرَجَہُمَا مِمَّا کَانَا فِیۡہِ ۪ وَ قُلۡنَا اہۡبِطُوۡا بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ ۚ وَ لَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ مُسۡتَقَرٌّ وَّ مَتَاعٌ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۳۶﴾

 শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল, তা থেকে তাদের বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও, তোমরা পরস্পর একে অপরের শত্রু হবে এবং তোমাদের সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।

নবীগণ পাপ থেকে বিমুক্ত ও পবিত্র। 
চার ইমাম ও উম্মতের সম্মিলিত অভিমতেও নবীগণ ছোট-বড় যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত ও পবিত্র। এ ধরনের ঘটনাবলি সম্পর্কে উম্মতের সর্বসম্মত অভিমত এই যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা অনিচ্ছাকৃত কারণে নবীদের দ্বারা এ ধরনের কাজ সংঘটিত হয়ে থাকবে। কোনো নবী (আ.) জেনেশুনে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহপাকের হুকুমের পরিপন্থী কোনো কাজ করেননি। এ ত্রুটি ইজতেহাদগত ও অনিচ্ছাকৃত এবং তা ক্ষমাযোগ্য।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের আকীদা রাখতে হবে যে সেটি গুনাহ নয়।
এটি ইজতিহাদগত বিষয় ছিলো।
,
একটি কথা আছে "নিকটস্থ মুহাব্বত ওয়ালা লোকের উনুত্তম কাজকেও ত্রুটি ধরা হয়,তাই এটাকে এটার জন্য আদম আঃ তওবা করছিলেন।
,
এটি মুহাব্বতের বহিঃপ্রকাশ ছিলো।

(০৪)
এ সংক্রান্ত হাদীস গুলোর কিছু মওযু' আর কিছু জয়ীফ হাদীস।

সব কিছু বিবেচনা করে উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে দুনিয়া সৃষ্টির কারণ যদি বলা হয় রাসূল সাঃ কে সৃষ্টি আর মাকসাদ যদি বলা হয় ইবাদত,তাহলে এটি সহীহ।

(০৫)
তিনি রাসুলুল্লাহ সাঃ এর উম্মত হবেন,ও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শরীয়তের নীতিমালা মেনে চলবেন।

(০৬)
হ্যাঁ, লা'নত দেয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...