আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আমার সাদ্রাসাবের ও বায়ুর সমস্যা আছে। এমতাবস্থায়, আমি নামাযের সময় কোনোরকমে নামাজ পড়ি। আমি একজন হিফজের ছাত্রী। আমার প্রায় সারাদিনই কুরআন পড়তে হয়। তাই পড়ার সময় বারবার ওযু করা সম্ভব নয়।এতে পড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে।(১)এখন আমি কি সাদাস্রাব বা বায়ুর কারণে অযু ভাঙার পরও হাতে মৌযা পড়ে কুরআন এর মুসহাফ স্পর্শ করে পড়তে পারব?(আমার মুখমন্ডল, থুতনি ইত্যাদি কুরআন পড়ার সময় খোলা থাকে।তাই অসাবধানতা বশত এগুলো কুরআনের সাথে লেগে যেতে পারে)

(২)আমি শিরকের ওয়াসওয়াসায় মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত ছিলাম।কিছুক্ষন পরপরি মনে হতো ইমান চলে গেছে, আবার কালেমা পড়ে  ইমান আনতাম। যেকোনো বিষয়,কথা কেই আমার শিরক মনে হয় যেগুলো আসলে শিরকের কাতারেই পড়েনা।আমি যদি চিন্তা করি যে কোনটাতে শিরক হচ্ছে,বা এই কাজটাতে শিরক হয়ে যাচ্ছে,তাহলেই মূলত সমস্যা হয়।বর্তমানে এসব চিন্তা করা বাদ দেওয়ার ফলে দেখি ওয়াসওয়াসা নেই বললেই চলে।কিন্তু আমার সন্দেহ হয় এই চিন্তা না করার ফলে যদি সত্যিই আমার দ্বারা কোনো শিরক হয়ে যায়! **আমি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত কি এসব চিন্তা বাদ দিতে পারি ? যেহেতু, আমি ইমান ভঙ্গের কারণ বা শিরক, কুফর ইত্যাদি সম্পর্কে  জানি,তাই আমার মনে হয় আমার এইসব চিন্তা বাদ দেওয়ার ফলে শিরক হবার সম্ভাবনা নেই।

(৩)আর মনের মধ্যে শিরকি চিন্তা আসলে, আমার আজ্ঞাতসারে যদি আমি সেটা কিছুক্ষন চিন্তা করে ফেলি এবং বুঝতে পারার সাথে সাথেই বাদ দেই। তাহলে কি ভুলে চিন্তা করে ফেলার জন্য কোনো সমস্যা হবে?আমি আমার অতীত,বর্তমানে, ভবিষ্যতে অজ্ঞাতসারে হওয়া শিরকের জন্য আগেই মাফ চেয়ে নিয়েছি।বারবার কিছুক্ষণ পরপর মাফ চাইতে গেলে ওয়াসওয়াসার সমস্যা বেড়ে যায়।

1 Answer

0 votes
by (54,210 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55711/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

আলহামদুলিল্লাহ! আপনাকে বলবো দয়াকরে আপনি এই তালাকের ওয়াসওয়াসাকে পরিহার করুন। কিভাবে পরিহার করবেন,সেটা হল, যখনই মনে এরকম ওয়াসওয়াসা আসবে, সাথে সাথেই মনকে বলবেন, আমি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রোগী, তাই আমার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুমে শীতিলতা রয়েছে। আমি অন্য দশজনের মত নই। কেননা ওয়াসওয়াসা রোগি কাউকে হত্যা করলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে কেসাস আসেনা। ওয়াসওয়াসার রোগী সারাদিন কুফরি বাক্য উচ্চারণ করলেও সে কাফির হয়না। বরং তার ঈমান বহাল থাকে।

যদি ওয়াসওয়াসা থেকে আপনি বের না হন,তাহলে আপনার ভবিষ্যত আপনি নিজেই নষ্ট করবেন।ওয়াসওয়াসা থেকে বের হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল, এই চিন্তাকে পরিহার করে ভিন্ন চিন্তা গ্রহণ করা,লোকদের সাথে হাশিখুশিতে থাকা।

ইবনে হাজার হাইতামি রাহ এ সম্পর্কে বলেন,

وسئل نفع الله به عن داء الوسوسة هل له دواء ؟

فأجاب بقوله : له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان - فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون) (الفتاوى الفقهية الكبرى 1/149

মর্মার্থ - পরিপূর্ণ ভাবে এই চিন্তাকে পরিহার করার চেষ্টা করাই এর সর্বোত্তম চিকিৎসা।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835  


ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।


এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।


রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)


ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আলাদা একটা কাপড় রাখবেন বা অন্য কাগজ ভাঁজ করে রাখবেন। সেটা দিয়ে কুরআনের পৃষ্ঠা উল্টাবেন।

২. জ্বী, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সব রকম ওয়াসওয়াসা পরিহার করে চলবেন। এতে আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ।

 কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...