আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
১) কেউ যদি জন্মদিনের আগে বা পরের দিন বা কয়েকদিন আগে পরে জন্মদিন উদ্দেশ্যে কেক কাটে ,মানুষ দাওয়াত করে তখন সেটার হুকুম কি?[ মোমবাতি জ্বালাবে না]

২)  দাওয়াত দিলে ওখানে কি যাওয়া যাবে?যদি না যায় খাবার দিলে কি করবো?

৩)কিস্তিতে জিনিস নেওয়ার হুকুম নিয়ে জানতে চাই।

৪)হায়েজ চলাকালীন ৩ দিনের পর খুব কম ব্লাডের ফ্লু থাকে।কখনো কখনো এমন হয় যে মাঝে পুরো একদিন একদম দেখা যায়নি।তখন নামাজ +কোরআন পড়ে ফেলি।আবার পরেরদিন ব্লাড দেখি।মাঝখানে যে নামাজ কোরআন পড়লাম এটার কারণে কি গুনাহ হবে?সাধারণত ৪/৫/৬  দিনের দিন এরকম হয় ।তাহলে কি একেবারে ৭ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবো?
৫)এক বাচ্চার পক্ষ থেকে প্রশ্ন- আমি যদি বলি আল্লাহর কসম আমি কোনোদিন মাছ খাবো না।এটা বলা কি ঠিক হবে?

আর যদি মা জোর করে খাওয়ায় তখন কি করবে?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
যদিও এটি প্রচলিত জন্মদিন পালন নয়,তবে বিধর্মীদের সংস্কৃতি পালনের সাথে সাদৃশ্যতা রাখায় সতর্কতামূলক ইহা থেকে বেঁচে থাকারই পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
উক্ত দাওয়াতে যাবেননা,খাবার দিলে তাহা গ্রহন করবেননা।
খাবার গ্রহন করলে সেই খাবার গরিব মিসকিনকে দিয়ে দিবেন।

(০৩)
শরীয়তে ব্যবসা বাণিজ্য, ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ। 
 এ সম্পর্কে আল কুরআনেই বলা হয়েছে,
احل الله البيع وحرم الربا 
 ‘মহান আল্লাহ কেনাবেচাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম’ (সূরা আল বাকারাহ : ২৭৫)। 

রাসূল সা: এক ইহুদির কাছ থেকে বাকিতে খাদ্যদ্রব্য কিনেছিলেন এবং তাঁর লৌহবর্ম বন্ধক রেখেছিলেন (সহিহ আল বুখারি)। 

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  কিস্তিতে (বাকীতে মেয়াদের ভিত্তিতে)   ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয আছে।

বাকিতে লাভে পণ্য কেনাবেচা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, ‘কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এ কথা বলায় কোনো অসুবিধা নেই যে, নগদ হলে এত দাম আর বাকিতে হলে এত দাম। তবে ক্রেতা-বিক্রেতার সন্তুষ্টির ভিত্তিতেই তা হতে হবে’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
শরীয়তের বিধান হলো  কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয। 
তবে কিস্তির বিক্রির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে-
১. পণ্যের মূল্য ও আদায়ের তারিখ সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
২. চুক্তির সময় পণ্যের মূল্য চূড়ান্ত হওয়ার পর কিস্তি আদায়ে বিলম্ব বা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না।
৩. কিস্তি আদায়ের জন্য পণ্য আটকে রাখা যাবে না; বরং চুক্তির পরই পণ্য ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

(মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী জিদ্দা ৭/২/৩২-৩৬; বাইউত তাকসীত ওয়া আহকামুহু, সুলাইমান আততুরকী পৃষ্ঠা : ২২৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা, আল্লামা তাকী উসমানী ১/৭)
,
কিস্তির মেয়াদ কম বেশি হওয়ার কারণে পণ্যের মূল্য কম বেশি করা জায়েয। তবে শর্ত হল, কেনা বেচার সময় মেয়াদ অনুযায়ী একটা মূল্য চূড়ান্ত করে দিতে হবে। অর্থাৎ গ্রাহক যদি পণ্যটি কিস্তিতে নেয় তবে তা কত মাসে পরিশোধ করবে এবং মোট কত টাকা পরিশোধ করবে তা চুক্তির সময়ই নির্ধারণ করে নিতে হবে। বেচাকেনা সম্পন্ন হওয়ার পর কোনো কিস্তি আদায়ে বিলম্ব হলেও মূল্য বাড়ানো যাবে না। অথাৎ পূর্ব নির্ধারিত মূল্য অপরিবর্তীত থাকবে। তাই গ্রাহকের দায়িত্ব হবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কিস্তি আদায় করে দেয়া। যেন বিলম্বের কারণে বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

(জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩১; আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/৭; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩৭; রদ্দুল মুহতার ৫/৯৯,মাবসূত ১৩/৮; রদ্দুল মুহতার ৫/১৪২; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/৭-৮)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
একেবারে ব্লাড বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। একেবারে ব্লাড বন্ধ হয়ে গেলে সেই ওয়াক্তে গোসল করে সেই ওয়াক্ত হতেই নামাজ আদায় করবেন।

তার আগে নামাজ,কুরআন তিলাওয়াত করা যাবেনা।
ভুলক্রমে করে থাকলে আল্লাহর কাছে মাফ চাইলেই আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
এটা বলা ঠিক হবেনা।
তবে সে যেহেতু বাচ্চা মানুষ,তাই এটি কসম বলে গন্য হবেনা।
মা জোড় করে খাওয়ালে কসম ভঙ্গের দরুন তার উপর কাফফারা আবশ্যক হবেনা। 

এমতাবস্থায় দ্রুত কসম ভঙ্গের পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...