জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
দোয়া করতে মূলত স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা আমাদের আদেশ করেছেন,আর রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাদের দোয়া করতে উদ্ভুদ্ধ করেছেন,তাই আমরা দোয়া করি।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
ادْعُونِىْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ
’’তোমরা আমাকে ডাকো (দোয়া করো), আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব ।’’ (সূরা আল মু’মিন/গাফির ৪০ : ৬০)
দোয়া করতে রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাদের উদ্ভুদ্ধ করেছেন,
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদতের মগজ। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৩২৯৩)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (الدعاء مخ العبادة) অর্থাৎ- দু’আই হলো ’ইবাদাত।
(তিরমিজি, হাদিস নং: ৩৩৭০)
দোয়া সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই। ’ তিরমিজি, হাদিস নং: ৩২৯২)
অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘যার জন্য দোয়ার দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে (অর্থাৎ যাকে দোয়া করার তাওফিক দান করা হয়েছে) তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৩৫৪৮)
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَعُ هَؤُلَاءِ الْكَلِمَاتِ حِينَ يُمْسِي وَحِينَ يُصْبِحُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي وَمَالِي اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَاتِي اللَّهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ يَدِي وَمِنْ خَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَن أُغتالَ من تحتي»
’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কক্ষনো সকাল-সন্ধ্যায় এ দু’আটি না পড়ে ছাড়েননি। (দু’আটি হলো)
’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ’আ-ফিয়াতা ফিদ্ দুন্ইয়া- ওয়াল আ-খিরাতি, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ’আফ্ওয়া, ওয়াল ’আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়া দুন্ইয়া-ইয়া ওয়া আহলী, ওয়ামা-লী। আল্ল-হুমাসতুর ’আওর-তী, ওয়া আ-মিন রও’আ-তী। আল্ল-হুম্মাহ্ ফাযনী, মিন বায়নি ইয়াদী ওয়ামিন খলফী, ওয়া ’আন ইয়ামীনী, ওয়া ’আন শিমা-লী, ওয়ামিন ফাওক্বী। ওয়া আ’ঊযু বি’আযামাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহতী’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার দীন, দুনিয়া, পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ সম্পর্কে নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমার দোষ-ত্রুটিগুলো গোপন রাখো এবং ভীতিকর বিষয় হতে আমাকে নিরাপদ রাখো। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার সামনের দিক হতে, পেছনের দিক হতে, আমার ডান দিক হতে, আমার বাম দিক হতে, আমার উপর হতে আমাকে হিফাযাত করো। হে আল্লাহ! আমি মাটিতে ধসে যাওয়া হতে তোমার মর্যাদার কাছে আশ্রয় চাই।)। ওয়াকী’ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ- ’ভূমিধ্বস হতে’।
সহীহ : আবূ দাঊদ ৫১৭৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯২৭৮, ইবনু মাজাহ ৩৮৭১, আহমাদ ৪৭৮৫, ইবনু হিব্বান ৯৬১, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ১২০০/৯১৬
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত দোয়া করা যাবে।
প্রশ্নে দোয়াট সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে,উপরে দোয়াটি বিস্তারিত দেয়া আছে,সেভাবে দোয়া করলে ভালো হবে।
সবগুলো নিয়ামত পাওয়ার জন্য এই দোয়া করা যায়।
তবে পুরো দোয়া করতে হবে,আংশিক নয়।
,
দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যান লাভের জন্য নিম্নোক্ত দোয়া করারও পরামর্শ থাকবেঃ-
اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
কেননা হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : كَانَ أَكثَرُ دُعَاءِ النَّبِيّ ﷺ اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ متفقٌ عَلَيْهِ زاد مسلم في روايتهِ قَالَ : وَكَانَ أَنَسٌ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدَعْوَةٍ دَعَا بِهَا فََإِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدُعَاءٍ دَعَا بِهَا فِيهِ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দু’আ এই হত, ’আল্লাহুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্য়্যা হাসানাহ, অফিল আ-খিরাতে হাসানাহ, অক্বিনা আযাবান্নার।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও এবং পরকালেও কল্যাণ দাও। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও। (বুখারী ৬৩৮৯, মুসলিম ৭০১৬)
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় বর্ধিত আকারে আছে, আনাস (রাঃ) যখন একটি দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন ঐ দু’আ করতেন। আবার যখন (বিভিন্ন) দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন তার মাঝেও ঐ দু’আ করতেন।