আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।আমার পরিবার আমার বিয়ের ব্যাপারে একজন আলেমের কাছে নিয়ে যান। তিনি প্রথমে সবার জন্য কিছু সময় আলোচনা করেন।তিনি বলেন যে জিন, যাদু ইত্যাদি কুফরি কালাম তিনি করেন না। কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চিকিৎসা করেন। সব তাবিজ জায়েজ না, কুরআনের আয়াত দিয়ে তাবিজ দেয়া জায়েজ তাই তিনি এইভাবেই তাবিজ দেন।আল্লাহর কাছেই সব কিছুর সমাধান এই বিশ্বাস রাখা, নামাজ পড়া, দুরুদ যিকির পড়া, মিথ্যা না বলা এইসব মানতে হবে উনার কাছে ট্রিটমেন্ট নিতে হলে।কিছুসময় দোয়া করে তিনি সবার সমস্যা শোনা শুরু করেন।হাদিয়া নির্দিষ্ট না খুশি হয়ে মানুষ যা দেয়।কারো সমস্যা না থাকলে বলে দেন যে সমস্যা নাই। কারো ক্ষেত্রে বলেন যে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে। আবার কাউকে বিভিন্ন খাবারে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দেন, তাবিজ দেন।
১।আমার ফেস দেখেই বলে দেন যে বিয়ের উদ্দেশ্যে গিয়েছি। তিনি বিয়ের জন্য তদবির করে দেন।৪১ দিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে  সুরা ইয়াসীন পড়া, এশার নামাজের পড়ার পর ১০ বার দুরুদ পড়ে ১০১ বার ইয়া আর রহমানুর রহীম পড়ে বিয়ের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলেন।চিরুনি এবং আয়না পড়া দিয়েছেন।উনি বলেন আমার খাবারে অরুচি জন্ডিস আছে তাই তিনি কলা পড়া, তেল পড়া, ইসুব গুলির ভুষি পড়া, কিসমিস পড়া দেন। উনার দেয়া এইসব আমল ফলো করা কি জায়েজ হবে?

২।আমি মাহরাম ননমাহরাম মেইনটেইন করি।উনি একজন বৃদ্ধ আলেম এবং আমি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গিয়েছি এই ভেবে আমি উনাকে ফেস দেখাই। ফেস দেখানোতে গুনাহ হয়েছে?উনি প্রয়োজন ছাড়া নারীদের দিকে তাকান না। একবার তাকিয়ে দৃষ্টি অবনত রাখেন।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
চিকিৎসার নিয়তে তার দেয়া এইসব আমল ফলো করা জায়েজ হবে।

(০২)
https://ifatwa.info/7711/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ  
শরীয়তের মূলনীতি হল, পুরুষ যাবে পুরুষ ডাক্তারের কাছে, মহিলা যাবে মহিলা ডাক্তারের কাছে। যদি পুরুষ ডাক্তার পাওয়া না যায়, তাহলে মহিলা ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারবে। অনুরূপভাবে মহিলার জন্যও যদি মহিলা ডাক্তার না পাওয়া না যায়, তাহলে পুরুষ ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারবে। (সারাখসী, আল-মাবসূত ১০/১৫৬ ; কাসানী,বাদাই ৫/১২২)


হযরত আনাস ইবনু মালিক রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كان رسول الله ﷺ يغزو بأم سليم ونسوة من الأنصار معه إذا غزا فيسقين الماء ويداوين الجرحى

রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন অভিযানে বের হতেন তখন তিনি উম্মু সুলাইম রাযি. ও কিছু আনসারী মহিলাকে সাথে নিয়ে যেতেন। তাঁরা পানি পরিবেশন করতেন এবং আহতদের চিকিৎসা করতেন। (মুসলিম ১৮১০)

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন,

وهذه المداواة لمحارمهن وأزواجهن ، وما كان منها لغيرهم لا يكون فيه مس بشرة إلا في موضع الحاجة

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, যুদ্ধক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে মেয়েদের বের হওয়া এবং পানি পরিবেশন ও চিকিৎসা প্রভৃতি কাজে তাদেরকে খাটানো জায়িয। তারা মাহরাম ও স্বামীদের চিকিৎসা ও সেবা করবে। অন্যদেরও সাধারণভাবে স্পর্শ করা ছাড়া চিকিৎসা করতে পারবে; তদুপরি জরুরতের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় স্থান স্পর্শ করতেও কোন অসুবিধা নেই। (নববী, শরহু মুসলিম, পৃ ৫১১)

ইবনু হাজার আসকালানী রহ. বলেন,

فيه جواز معالجة المرأة الأجنبية الرجل الأجنبي للضرورة

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে মহিলার জন্য বেগানা পুরুষের চিকিৎসা করা জায়িয হবে।  (ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৮০)

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাকে চেহারা দেখানোর দরুন আপনার গুনাহ হয়েছে। এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে আপনাকে খালেস দিলে তওবা করতে হবে।

তবে যদি সেই আলেম বয়োবৃদ্ধ ব্যাক্তি হয়,অতিশয় বৃদ্ধ হওয়ার দরুন যৌনকামনামুক্ত পুরুষ হয়,সেক্ষেত্রে আপনার তওবা করতে হবেনা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...