ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
নামাজের মধ্যে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছে মনে করে সাহু সিজদা আদায় করে নামাজ শেষ করা হল, কিন্তু নামাজের পরে জানা গেল যে সাহু সিজদা প্রকৃতপক্ষে ওয়াজিব হয়নি।এমন পরিস্থিতে নামায হয়ে যাবে।পুনরায় পড়তে হবে না।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৪৪৯)
(২)
নামাযের যে সমস্ত দু'আ রয়েছে।এর মধ্যে তাশাহুদ আর কুনুত হল,ওয়াজিব।বাকীগুলো সুন্নত।
সুতরাং এই সুন্নত দু'আ গুলোর মধ্যে একটির স্থলে অন্যটি পড়ে নিলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।ঠিকতেমনিভাবে,সুন্নত দু'আ গুলির স্থলে ওয়াজিব দু'আ গুলিকে কেউ পড়ে নিলে,তাতেও সাহু সিজদা আসবে না।সুন্নত দু'আ গুলির স্থলে কেউ কেরাত পড়ে নিলে তাতেও সাহু সিজদা আসবে না।তবে ওয়াজিব দু'আ গুলির স্থলে সুন্নত দু'আ পড়ে নিলে,সাহু সিজদা আসবে।এবং কেরাতের স্থলে দু'আ পড়লে,চায় সুন্নত দু'আ হোক বা ওয়াজিব দু'আ হোক।সর্বাবস্থায় সাহু সিজদা আসবে।তবে শুধুমাত্র
প্রথম রাকাতে সূরায়ে ফাতেহার স্থলে আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কোনো দু'আ পড়লে,তখন সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।তবে দ্বিতীয় রাকাতে হলে সাহু আসবে।
যে সমস্ত স্থানে একটির স্থলে অন্যটি পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়ে থাকে।প্রশ্ন হল,কতটুকু পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।উত্তরে বলা হবে,এক রুকুন পরিমাণ সময় কেউ একটির স্থলে অন্যটি পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।
এক রুকন এর পরিমাণ নিয়ে ফুকাহাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।কেউ বলেন,১৮হরফ, কেউ বলেন,২৩হরফ,কেউ বলেন,৩০হরফ,আবার কেউ বলেন,৪২ হরফ পড়ে নিলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।এর মধ্যে মুসাল্লির জন্য সহজ হল,৪২ হরফ। তাই পরবর্তী অনেক ফকিহ ৪২ হরফের কথা বলে ফাতাওয়া দেন।(বিস্তারিত আহসানুল ফাতাওয়া-৪/৩০)
(৩)
বিতির নামায পড়ার সময়ে কেউ দু'আ য়ে কুনুত না পড়ে রু'কুতে চলে গেলে,সে রুকুতেই দু'আয়ে কুনুত পড়বে।যদি রুকুতেও না পড়ে তবে,যেহেতু দু'আয়ে কুনুত ওয়াজিব,তাই নামাযের শেষে সাহু সেজদা দিয়ে দিবে।সাহু সেজদা না দিলে ওয়াক্তের ভিতর হলে নামাযকে আবার দোহরাতে হবে।
যেহেতু এক রুকুন পরিমাণ সময় ব্যয় হয়নি বরং শুধুমাত্র রুকুতে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়েছে এতে এক রুকুন পরিমাণ সময় ব্যয় হবে না,তাই সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।
(৪)
- ক. যেই বাক্যে এসে আটকে গেছে, সেই বাক্যটি যদি বারবার পড়তে থাকে এবং এর মধ্যে ভুলে যাওয়া অংশ স্মরণে আসে, তারপর পুরো দোয়া কুনুত পড়ে নামায আদায় করে; তাহলে এমতাবস্থায় সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।
- খ. যেই বাক্যে এসে আটকে গেছে, সেই বাক্যটি যদি বারবার পড়তে থাকে কিন্তু তারপরেও কিছুতেই যদি ভুলে যাওয়া অংশ স্মরণ না হয়, তাহলে করণীয় হল,
যেমনটা 2027 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ করেছি যে
যে ব্যক্তি উপরোক্ত দু'আ গুলোকে ভালভাবে পড়তে জানে না,সে যেন সূরা বাকারা ২০১নং আয়াত "রাব্বা আতিনা " দু'আ শেষ পর্যন্ত পড়ে নেয়।(মুহিত)অথবা 'আল্লাহুম্মাগফির-লানা" তিনবার পড়ে নেয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১১১)