আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি নিজের মেধা নিয়ে খুব হীনমন্যতায় ভুগছি,সবাই যে জিনিস খুব সহজে বুঝে বা ভালো বুঝতে পারে অল্প সময়ে আমি কেন পারি না,আমার এটা নিয়ে খুবই পীড়া হচ্ছে।মানে স্বাভাবিক ভাবে আমি আমার ফ্রেন্ড সার্কেল, আব্বা -আম্মা সবার কাছেই বোকা এছাড়া মাথা মোটা কাতলা ইত্যাদি ট্যাগ ও পেয়েছি।

নিজের স্মরনশক্তি,মেধা কিভাবে বাড়াবো, অল্পতেই কিভাবে সব বুঝে পড়তে পারব, এমন কি কোন আমল আছে? আমি সত্যিই কার অর্থেই এখন খুব কষ্ট পাচ্ছি,উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে বসে থাকি আর খুব ইমভ্যারেসড ফিল হয়।আর সারাদিন অইটা মাথায় ঘুরে স্বাভাবিক হতে পারি না।আল্লহ তো চাইলে আমাকেও ভালো মেধা দিতে পারতেন এমন উলটা পালটা জিনিস মাথায় আসে।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/17720/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মুখস্ত করার যোগ্যতা মহান আল্লাহ তায়ালার দেয়া এক বড় নেয়ামত। কেউ চাইলেই যেমন কোনো কিছু স্মরণ রাখতে পারে না, আবার চাইলে যে কেউ কোনো কিছু মুখস্ত করতে পারে না। এজন্য আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

অনেক কম সময়ে ছোট থেকে বড় মানুষরাও পবিত্র কুরআনুল কারিম মুখস্ত করেছেন। হযরত ইমাম শাফেঈ রাহ. থেকে শুরু করে ৪ বছরের শিশুও রয়েছে এ তালিকায়। মুখস্ত শক্তি বা স্মরণশক্তি নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ তাআলার বড় নেয়ামত।

কুরআনুল কারিম মুখস্ত রাখার কৌশল তথা স্মরণশক্তি বাড়াতে আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দোয়া শিখিয়েছেন, যা উম্মতে মুসলিমার জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

হযরত জিবরিল আলাইহিস সালাম যখন ওহি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাসের কাছে আসতেন। ওহি নাজিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন। আর তা ছিল বিশ্বনবির জন্য অনেক কষ্টসাধ্য কাজ।
তখন আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের একটি আয়াত নাজিল করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উপদেশ দিলেন এবং একটি দোয়া শিখিয়ে দিলেন।
এ নসিহত এবং দোয়ার বরকতেই কুরআন আয়ত্ব করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কষ্ট দূর হয়ছিল। আর তাতে তিনি কুরআনের ওহি আয়ত্ব করেও প্রশান্তি লাভ করেন।

আর এ দোয়া ও নসিহতের আমলেই মানুষের মুখস্ত শক্তি ও স্মরণশক্তি দ্রুত বেড়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘সত্যিকার মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ তাআলা। আপনার কাছে আল্লাহর ওহি সম্পুর্ণ হওয়ার আগে আপনি কুরআন আয়ত্বের জন্য তাড়াহুড়া করবেন না।’
[আয়াতের প্রথমাংশে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওহি আসার পর তা মুখস্ত করার বিষয়ে তাড়াহুড়ে করতে নিষেধ করেছেন। বরং ধীরস্থিরতা অবলম্বনের উপদেশ দিয়েছেন।]

অতপর কুরআন আয়ত্ব করতে আয়াতের শেষাংশে এ দোয়া করতে বলেছেন-
‘আর বলুন- হে আমার প্রভু! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ১১৪)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেয়া এ উপদেশ ও দোয়াই মানুষের মুখস্ত শক্তি বাড়ানোর অন্যতম উপায়।
এখন মানুষের উচিত, যে কোনো পরিস্থিতিতে তাড়াহুড়ো না করে, বরং ধীরস্থিরভাবে মহান আল্লাহর সাহায্য নিয়ে তা আয়ত্ব করার প্রচেষ্টা করা আর আল্লাহর কাছে একান্ত মনে এ দোয়া করা-
উচ্চারণ : ‘রাব্বি যিদনি ইলমা।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আমার জ্ঞান (মুখস্ত বা স্মরণ শক্তি) বাড়িয়ে দিন।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নসিহত ও দোয়ার মাধ্যমে মুখস্ত শক্তি বাড়িয়ে তোলার তাওফিক দান করুন।(পরামর্শক্রমে মু,আব্দুল অদুুদ)

قَالَ رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي
মূসা বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন।
وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي
এবং আমার কাজ সহজ করে দিন।
وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي
এবং আমার জিহবা থেকে জড়তা দূর করে দিন।
يَفْقَهُوا قَوْلِي
যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।
(সীরা ত্বাহা-২৫--২৮)

প্রত্যেক ফরয নামাযের পর এবং প্রত্যেক সকাল সন্ধা আপনি এই দু'আ পড়বেন।

স্বরণশক্তি বাড়ানোর প্রথম ও প্রধান আ’মল হচ্ছে, গুনাহকে পরিত্যাগ করা। 

সুতরাং উপরোক্ত আমলের পাশাপাশি সর্বপ্রকারের গুনাহ পরিত্যাগ করে চলবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...