আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
মানু্ষ নিজেরা নিজেরা বিয়ে করতে পারেনা। দুজন সাক্ষীর প্রয়োজনে ইজাব ও কবুলের প্রয়োজন হয়। অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন হয়। এ হিসেবেএই সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য ও সাক্ষী ও ইজাব কবুল থাকা ও অভিভাবক কে বিষয়টি অবগত করা অধিকতর যুক্তিসংগত।


মুখের কথায় যেমন হুট করে বিয়ে হতে পারেনা, একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তেমনি মুখের কথায় ও হুট করে তালাক না হতে পারাই যুক্তিসংগত ছিল।


তালাক এত সহজে হয়ে যায় তা তো একদিক থেকে যুক্তিহীন অপরদিকে দাম্পত্য জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। ইসলামের বিধান হবার কথা ছিল কল্যাণকির। অথচ তালাকের বিধানে কল্যাণ থেকে অকল্যাণ ই বেশি। এই বিধানের কারণে কত মানুষের উপর জিনার বোঝা চাপানো হচ্ছে তা বেহিসাব।


এখন মুখে তালাক বললেই তালাক হয়ে যাওয়ার বিধানের যৌক্তিকতা এবং কল্যাণের দিক টি ব্যাখ্যা করুন। কেন বিয়ের মত তালাকের বিধানেও কোন সুগঠিত প্রক্রিয়া নেই? এই বিধান তো মুসলিম দের উপর জুলুম।
by
জানতে চাই৷ তবে ইসলামের নিয়ম তো আল্লাহ প্রদত্ত 

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শরয়ী সাক্ষী উপস্থিত থাকা শর্ত। সাক্ষী ব্যতিত বিয়ে হবে না। তবে তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য সাক্ষী শর্ত নয় বরং মুস্তাহাব।
في تفسیرالقرطبی:
"قوله تعالى: {وأشهدوا} أمر بالإشهاد على الطلاق. وقيل: على الرجعة. والظاهر رجوعه إلى الرجعة لا إلى الطلاق. فإن راجع من غير إشهاد ففي صحة الرجعة قولان للفقهاء. وقيل: المعنى وأشهدوا عند الرجعة والفرقة جميعاً. وهذا الإشهاد مندوب إليه عند أبي حنيفة، كقوله تعالى: {وأشهدوا إذا تبايعتم} [البقرة: 282] . وعند الشافعي واجب في الرجعة، مندوب إليه في الفرقة. وفائدة الإشهاد ألايقع بينهما التجاحد، وألايتهم في إمساكها، ولئلايموت أحدهما فيدعي الباقي ثبوت الزوجية". (18 / 157، سورۃ الطلاق، ط؛ الھیۃ المصریۃ العامہ لکتاب)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিয়ের জন্য সাক্ষী শর্ত তবে তালাকের জন্য সাক্ষী শর্ত নয়। এটা শরীয়তের বিধান। জরুরী নয় যে, প্রত্যেকটি বিধানের হেকমত মানুষের বুঝে আসবে। বরং শরীয়তের প্রত্যেকটি বিধান ও বিধানের বৈরিতার অবশ্যই যুক্তিসংগত হেকমত রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব হল, হেকমতের দিকে না থাকিয়ে শরীয়তের বিধানকে মেনে চলা। চায় আমার বুঝে আসুক বা না আসুক।

আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। 
وَعَن عَليّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ: لَوْ كَانَ الدِّينُ بِالرَّأْيِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلَاهُ وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُ على ظَاهر خفيه 
তিনি বলেন, দ্বীন/শরীয়ত যদি (মানুষের জন্য) বুদ্ধি অনুসারেই হতো, তাহলে মোজার উপরের চেয়ে নীচের দিকে মাসাহ করাই উত্তম হত। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি যে, তিনি তাঁর মোজার উপরের দিক মাসাহ করেছেন। [মিশকাত-৫২৫,সুনানু আবি দাঊদ ১৬২, দারাকুত্বনী ৭৮৩]

হেকমতের আলোচনায় আসলে বলা যাবে যে,
বিয়ের মাধ্যমে যেহেতু যৌক্তিকভাবে একজন নারীর কিছু স্বাধীনতা খর্ব হয়, এবং বিয়ের মাধ্যমে তৃতীয় একজন তথা সন্তানের অধিকার পিতা-মাতার সম্পত্তিতে প্রমাণিত হয়, তাছাড়া স্ত্রীর মহর, ভরণপোষণ ও বাসস্থান স্বামীর উপর ওয়াজিব হয়,  তাই এজন্য বিয়ের ক্ষেত্রে সাক্ষী শর্ত হয়ে থাকে। তবে তালাকের দ্বারা যেহেতু কারো অধিকারকে খর্ব করা হয় না বরং স্ত্রী নিজ স্বাধীনতা ফিরে পায়, তাছাড়া যেহেতু তালাকের স্বীকারোক্তি স্বামী নিজেই দেয়, আর স্বীকারোক্তির জন্য স্বাক্ষীর কোনো প্রয়োজনিয়তা থাকে না, তাই তালাকের ক্ষেত্রে সাক্ষীর কোনো প্রয়োজনিয়তা নেই।

একজন মুসলমান হিসেবে বিয়ের পূর্বে বিয়ে তালাক সম্পর্কে জ্ঞানার্জন ফরয। কোন কথা দ্বারা তালাক হবে আর কোন কথা দ্বারা তালাক হবে না, সেটা বিয়ে পূর্বেই জেনে নিতে হবে। এবং জেনে নেওয়াটা ফরয। সুতরাং তখন তালাক পরবর্তী হারাম সংসারের আলোচনা গৌণ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...