আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
১শায়খ আমার  প্রশ্ন হলো আমি যখন  রাস্তায় হাটি তখন মেয়েদের দিকে চোখ যাওয়ার ভয় নিচে তাকিয়ে থাকলেও তাদের চেহারার দিকে দৃষ্টি যাওয়া থেকে বাঁচলেও তাদের শরীরের অন্য অংশ চোখ বন্ধ না করা পর্যন্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও চোখে পড়ছে।যদি আমি একদমই । কিন্তু যেহেতু রাস্তায় গাড়ি চলাচল করে  সবসময় চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না । শায়খ যেমন আমি হাটছি আমি মাটির দিকে তাকিয়ে আছি এমন সময় একজন মহিলা যাচ্ছে যেহেতু আমি মাটির দিকে তাকিয়ে আসছি তখন সামনে থেকে মহিলা আসার কারণে তার চেহারা দেখা থেকে আমি বেঁচে গেলেও। কিন্তু তার শরীরের নিচের অংশ আমার চোখে পড়ছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার কি পাপ হবে?

২ রিকশায় চলার সময় বিল্ডিং, রাস্তা ও গাছপালার দৃশ্য উপভোগ করার সময়  মেয়েরা পর্দা ছাড়া হাঁটার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বেগানা নারীদের দেখা হয় যদিও ওই সময় কোনো ইচ্ছা থাকে না মেয়েদের শরীর দেখার এরপরও দৃশ্য দেখতে গিয়ে ওদেরও দেখা হয়ে যাচ্ছে এখন এটাকি জায়েজ হবে?

৩শায়খ আমরা বিভিন্ন খাদ্য পণ্য খাই  সেখানে পণ্যের গায়ে হালাল সার্টিফিকেশন থাকে মানে "  হালাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন" লেখা থাকে এখন হালাল একটা সুন্দর শব্দ আরবিতে বৈধ জিনিস কে হালাল বলা হয় এবং "ইসলামিক- ফাউন্ডেশন " দুটি শব্দের মধ্যে প্রথমটি হলো ইসলামিক। ইসলামিক শব্দটি اسلام থেকে এসেছে। এখন" হালাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন"এর সার্টিফিকেট সহ পণ্যের প্যাকেট কি ফেলে দেয়া জায়েজ হবে? যেহেতু এখানে হালাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন লেখা থাকে?

,

৪ শায়খ আমার প্রশ্ন হলো ওযু করার সময় যদি আমি কল অনেক আস্তেও  ছাড়ি, যেমন: কুলি করার জন্য হাতে মুঠ করে পানি নিলাম সাথে সাথেই বন্ধ করে দিলাম কিন্তু এর পরও কিছু ফোঁটা পানি পড়ে যায় এটাকি অপচয় হবে?

৫ শায়খ যখন আমি ক্ষমা চাইবো সকল গুনাহের জন্য তখন কি ইস্তিগফারের শেষেই এটা ভাববো যে আমি মাফ পেয়ে গেছি নাকি অন্য কিছু ভাববো?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ؛ فَإِنَّمَا  لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ “

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ  হযরত আলী রাঃ কে বলেন, হে আলী! [সহসা] একবার দেখার পর পুনরায় [কোন বেগানা নারীকে] দেখো না। কারণ, তোমার জন্য প্রথমবারে অনুমতি রয়েছে [যখন তা অনিচ্ছায় হয়ে যাবে], কিন্তু দ্বিতীয়বারের অনুমতি নেই।
 {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৯৭৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৫১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৭৭}

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا “

হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা। তবে এক্ষেত্রে যেহেতু বেগানা নারীর শরীরের নিচের অংশ আপনার চোখে পড়ছে,তাই সেখান হতেও যথাসম্ভব চোখ ফিরিয়ে নেয়া চেষ্টা করবেন।

কুচিন্তা মাথায় আনা যাবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত প্রথম দৃষ্টির দরুন আপনার গুনাহ হবেনা। তবে অনিচ্ছাকৃত নজরের পর সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে নজর দেয়া যাবেনা।

(০৩)
উক্ত প্যাকেট ফেলে দেয়া জায়েজ আছে।
এতে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৪)
এতো অল্প পানি যে যাহা হতে বেঁচে থাকা মুশকিল,সেক্ষেত্রে অপচয় হবেনা।

(০৫) 
বান্দার হক ব্যাতিত আল্লাহর হক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তওবার সমস্ত শর্তাবলী মেনে খালেস দিলে কান্নাকাটি ও অনুনয় বিনয় করে তওবা করার পর আপনি যদি এমনটি ভাবেন,সেক্ষেত্রে সমস্যা নেই,ভাবতে পারেন।

তবে তওবা কবুল হওয়ার বিষয় যেহেতু সুনিশ্চিত নয়,তাই উলামায়ে কেরামগন তওবা অফ না রেখে নিয়মিত তওবা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...