আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (3 points)
প্রশ্নঃ
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রান গ্রুপের ডিলারশিপ ব্যবসা আছে, আমি অগ্রিম টাকা দিয়ে পন্য ক্রয় করি, নষ্ট ও ভাল মাল কোম্পানি ফেরত নেবে এই শর্তে। তবে লিকুইড দুধের ক্ষেত্রে শর্ত হলো, প্যাকেট নষ্ট হলে দুধ ভালো থাকলেও দুধ ফেলে দিয়ে শুধু প্যাকেট জমা দিতে হয়। আমার পন্য বিক্রি করার জন্য কোম্পানির পক্ষ থেকে এস,আর নিয়োগ দেওয়া আছে, এস,আর এ-র কাজ হলো আমার ক্রয়কৃত পন্যের উপর ৫ থেকে ৬ % লাভে বিক্রি করা, আমার কাজ আমার ডি,এস,আর দিয়ে পন্য ডেলিভারি দেওয়া। অনেক সময় এস,আর এ-র সুবিধার জন্য % কম বেশি হয়, এবং এস,আর কম লাভে অর্ডার কাটে, বাকি টাকা তার নামে লিখে রাখতে বলে এবং মাস শেষে তার বেতন থেকে টাকা দিয়ে দেয়। আর ডি,এস,আর কোন পন্য নষ্ট করলে বা হারিয়ে ফেললে তাকে জরিমানা দিতে হয়। এখন প্রশ্ন হলো :-
১- প্রান গ্রুপের ডিলারশিপ ব্যবসা করা যাবে কিনা?
২-এস,আর কাছ থেকে এভাবে টাকা নেওয়া যাবে কিনা?
৩-ডি,এস,আর কাছ থেকে জরিমানা নেওয়া যাবে কিনা?
৪-% কম বেশি করে বিক্রি করা যাবে কিনা? (কোম্পানির শর্ত ৫ থেকে ৬ % লাভে বিক্রি করা)
৫- দুধ ফেলে না দিয়ে তা কম দামে বিক্রি করা যাবে কিনা, (দুধের প্যাকেট জমা দিয়ে আমি আমার আসল টাকা ফেরতপাব) অথবা কাউকে বিনামূল্যে দেওয়া যাবে কিনা, অথবা কোন গরীব লোককে দেওয়া যাবে কিনা? (ভালো দুধ অহেতুক নষ্ট করা হচ্ছে, শুধু প্যাকেট নষ্ট থাকার কারণে। এখন আমার করনিয় কি জানালে খুবই উপকৃত হব।

1 Answer

0 votes
by (566,910 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
কাদিয়ানী বা কোনো অমুসলিম কোম্পানিতে চাকুরী করা নাজায়েয হবে না। কেননা কোনো কিছু তৈরী করা বানানো বা সেল করা মূলত কোনো হারাম কাজ নয় বরং তা বৈধ কাজই।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গিয়েছে যে প্রান এবং আরএফএল এগুলো কাফিয়ানীদের পণ্য।
,
একজন মুসলিম কোন অন্যায় দেখলে সবার আগে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে, না পারলে মুখ দিয়ে না পারলে মন থেকে অন্যায়কে ঘৃণা করবে। হাদিসে বর্ণিত অন্যায়ের প্রতিবাদের এই সুন্দর সংজ্ঞায়ন আমাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে হবে।

পণ্য বয়কট সেই উপায় যার মাধ্যমে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে পারি।

যেহেতু তাদের পন্য ক্রয় করলে ইসলাম বিরোধীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা হয়,এবং শক্তিশালী অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, কাজেই এসব দেশের পণ্য ক্রয় করা,এবং এসব কোম্পানিতে চাকুরী করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা চাই।

তাদের পন্য ক্রয় করে তাদেরকে সহযোগিতা করা যাবেনা।  

আল্লাহ তায়ালা বলেন 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، ح وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَخْرَجَ مَرْوَانُ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَبَدَأَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا مَرْوَانُ خَالَفْتَ السُّنَّةَ أَخْرَجْتَ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ وَلَمْ يَكُنْ يُخْرَجُ فِيهِ وَبَدَأْتَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَنْ هَذَا قَالُوا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ . فَقَالَ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ "

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ‘ঈদের দিন মারওয়ান ঈদের মাঠে মিম্বার স্থাপন করে সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করায় জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন, হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাত বিরোধী কাজ করলে। তুমি ‘ঈদের দিন বাইরে মিম্বার এনেছো এবং সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করেছো। অথচ ইতিপূর্বে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খুলাফায়ি রাশিদীনের যুগে) কখনো এমনটি করা হয়নি। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি কে? লোকজন বললো, অমুকের পুত্র অমুক। তিনি বললেন, সে তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোন গর্হিত (শারী‘আত বিরোধী) কাজ সংঘটিত হতে দেখলে তাকে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। এরূপ করতে অক্ষম হলে তা কথার দ্বারা প্রতিহত করবে। যদি এতেও অক্ষম হয় তাহলে সে তা অন্তরে ঘৃণা করবে (বা তা দূর করার উপায় অন্বেষনে চিন্তা-ভাবনা করবে)। তবে এটি হচ্ছে দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক।

(মুসলিম , ইবনু মাজাহ  হাঃ ১২৭৫,  হাঃ ৪০১৩), আহমাদ (৩/১০)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রান গ্রুপের ডিলারশিপ ব্যবসা করা জায়েজ আছে। এটি নাজায়েজ নয়। 

(০২)
এস,আর কাছ থেকে এভাবে টাকা নেওয়া যাবেনা।

এস,আর এর সাথে আপনার মূলত চুক্তি দুই পদ্ধতির যেকোনো এক পদ্ধতিতে হতে হবে।

এক, 
এস,আর এর বেতন থাকবে সুনির্দিষ্ট। 
কম লাভে অর্ডার কাটুক,বা বেধে দেয়া লাভ হতেও বেশি লাভে অর্ডার কাটুক,কম অর্ডার কাটুক, বা বেশি অর্ডার কাটুক, সর্ব ছুরতেই সেই সুনির্দিষ্ট বেতনই থাকবে।

তবে এক্ষেত্রে এস,আর এর সাথে এভাবে শর্ত করে নেয়া যাবে যে আপনার ক্রয়কৃত পন্যের উপর ৫ থেকে ৬ % লাভে বিক্রয় না করে তা থেকে কম লাভে অর্ডার কাটলে এস,আর এর কে তার  সুনির্দিষ্ট বেতন হতে তাহা পূরণ করতে হবে,এক্ষেত্রে উক্ত শর্তে এস,আর রাজী হলে এটা জায়েজ হবে।

খ,
এস,আর এর বেতন তার বিক্রয়ের উপর পার্সেন্ট আকারে নির্দিষ্ট থাকবে।

এভাবে বলা হবে যে ৫ থেকে ৬ % লাভে বিক্রয় করলে প্রতি পন্য বাবদ এতো লাভ এস,আর পাবে। ৫ থেকে ৬ % লাভ হতে বেশি লাভে বিক্রয় করলে অতিরিক্ত টাকাও এস,আর পাবে।

যে কয়টি পন্য বিক্রয় করবে,সে কয়টি হতে পার্সেন্ট সে পাবে।
অনেক পন্য বিক্রয় করলে অনেক পার্সেন্ট সে পাবে। কম পন্য বিক্রয় করলে কম পার্সেন্ট সে পাবে। 

প্রতিটি পন্যের উপর পার্সেন্ট আকারে সে লাভ পাবে। 

(০৩)
ডি,এস,আর আপনার কোন পন্য নিজ অবহেলায় নষ্ট করলে বা হারিয়ে ফেললে ডি,এস,আর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নেওয়া যাবে।

তবে অবহেলা বশত নষ্ট না হলে বরং এমনিতেই আবহাওয়া জনিত কারণে বা বেশি দিন থাকার কারনে পন্য নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ নেয়া যাবেনা।

(০৪)
% কম বেশি করে বিক্রি করা যাবে।

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
"লিকুইড দুধের ক্ষেত্রে শর্ত হলো, প্যাকেট নষ্ট হলে দুধ ভালো থাকলেও দুধ ফেলে দিয়ে শুধু প্যাকেট জমা দিতে হয়"

★সুতরাং এক্ষেত্রে সেই দুধ ফেলে না দিয়ে বিনামূল্যে কোনো গরিব লোককে দেয়া যাবে।

তবে সেটা খাওয়া ক্ষতিকর হলে তাহা ফেলে দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...