আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
70 views
in সালাত(Prayer) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

 ওজুর পরে মুখ মোছা কি জরুরি?  ওজুর পরে সাথে সাথে নামাজে দাড়ালে অনেক সময় মুখের পানি বা ঠোটের আশেপাশের বা কিনারায় লেগে থাকা পানি নামাজের তাসবীহ পড়ার সময় ঢুকে যাওয়ার আশংকা হয়।ঢুকে গেলে কি নামাজ বাতিল হয়ে যাবে? ওজুর পরে মুখ মোছা জরুরি না জানতাম এজন্য মুছি না।বাহিরে থাকলে মোছার সুযোগ থাকে না এক্ষেত্রে কি করণীয়।আবার মোছা নিয়ে অতিরিক্ত ঘষাঘষি করলে ওয়াসওয়াসা সমস্যা তৈরি হয়।এটা নিয়ে কি করবো হুজুর।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু ও গোসলের পর কখনো কখনো কাপড় দ্বারা শরীর মুছেছেন। আবার কখনো মোছেননি। উভয় ধরনের আমলই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমানিত আছে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ، وَأَحْمَدُ بْنُ الأَزْهَرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ السِّمْطِ، حَدَّثَنَا الْوَضِينُ بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ مَحْفُوظِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ تَوَضَّأَ فَقَلَبَ جُبَّةَ صُوفٍ كَانَتْ عَلَيْهِ فَمَسَحَ بِهَا وَجْهَهُ .

সালমান ফারসী রা. থেকে বর্ণিত আছে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু করেন। এরপর তিনি তার গায়ের পশমী জুববা উল্টে নিয়ে চেহারা মুছেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪৬৮)

প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থ সুনানে ইবনে মাজাহর অযু ও গোসলের পর রুমাল ব্যবহার করা নামক অধ্যায়ে এসেছে, কায়েছ বিন সাআদ রা. বলেন, আমাদের কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন। আমরা তাঁর জন্য পানির ব্যবস্থা করলাম। তিনি গোসল করলেন। তখন আমরা তাঁকে হলুদ রঙ্গের একটি চাদর এনে দিলাম। তিনি সেটি গায়ে জড়িয়ে নিলেন। (ফলে সেটি শরীরের পানি মোছার জন্য রুমালের কাজ দিল)। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪৬৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৫১৪৩)

অবশ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু ও গোসলের পর কাপড় দ্বারা শরীর মোছেননি এমন হাদীসও আছে। যেমন, উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ফরয গোসল করছিলেন তখন (শরীর মোছার জন্য) একটি কাপড় এনে দিলাম। তিনি তা ফেরত দিলেন এবং শরীরের পানি (হাত দ্বারা) ঝাড়তে লাগলেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৭৪)

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي لَيْلَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعْدِ بْنِ زُرَارَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ شُرَحْبِيلَ، عَنْ قَيْسِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ أَتَانَا النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَوَضَعْنَا لَهُ مَاءً فَاغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَيْنَاهُ بِمِلْحَفَةٍ وَرْسِيَّةٍ فَاشْتَمَلَ بِهَا فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أَثَرِ الْوَرْسِ عَلَى عُكَنِهِ .

ক্বায়স ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলে আমরা তাঁর গোসলের পানি রাখলাম এবং তিনি গোসল করেন। অতঃপর আমি তাঁর জন্য একটি রঙ্গীন চাঁদর নিয়ে এলাম। তিনি তাঁর শরীরে সেটি পেচালেন। আমি যেন তাঁর পেটের উপর ওয়ারস ঘাসের বর্ণের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি।
(ইবনে মাজাহ ৪৬৬)

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، عَنْ خَالَتِهِ، مَيْمُونَةَ قَالَتْ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِثَوْبٍ حِينَ اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ فَرَدَّهُ وَجَعَلَ يَنْفُضُ الْمَاءَ .

মাইমূনাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি কাপড় নিয়ে এলাম, তখন তিনি নাপাকির গোসল করছিলেন। তিনি সেটি ফেরত দেন এবং তাঁর শরীর থেকে পানি ঝাড়তে থাকেন।
(ইবন মাজাহ ৪৬৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উভয় ধরনের আমলই প্রমাণিত আছে তাই নির্দিষ্টভাবে কোনো একটিকে সঠিক ও সুন্নত বলা এবং অন্যটিকে সুন্নত পরিপন্থী বলা যাবে না। বরং হাদীসের দৃষ্টিতে উভয় ধরনের আমলের সুযোগ আছে।

★ওজুর পরে সাথে সাথে নামাজে দাড়ালে অনেক সময় মুখের পানি বা ঠোটের আশেপাশের বা কিনারায় লেগে থাকা এক ফোটা পানি নামাজের তাসবীহ পড়ার সময় মুখের ভিতরে গিয়ে গলায় চলে গেলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে।

সুতরাং এমতাবস্থায় নামাজের আগে মুখ মুছে নামাজে দাড়ানোর পরামর্শ থাকবে। 

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...