ক্ষমাশীল মানুষ সর্বোত্তম ব্যবহারকারী ও ধৈর্যশীল। যিনি উদারপ্রকৃতির, তিনিই ক্ষমাশীল। যাদের এ ধরনের গুণাগুণ রয়েছে, তারা আল্লাহ তাআলার বিশেষ নেয়ামতপ্রাপ্ত। ক্ষমাকারী ধৈর্যবান ও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।
মহান আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। যে অন্যকে ক্ষমা করে তাকেও ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সম্বরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৪)
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ অন্যের রূঢ় বা কটু কথাবার্তা কিংবা অশোভনীয় আচার-আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন। ফলে একে অপরে মতবিরোধ তৈরি হয়। অনেক সময় মতবিরোধ ও মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে আদেশ দিয়েছেন, যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,
إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيرًا
‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান। ’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৪৯)
ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে পুরস্কার দেবেন। পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্নকারীও আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِّثْلُهَا ۖ فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ
‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না। ’ (সুরা শুরা, আয়াত: ৪০)
ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা কমে না। বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন করেছেন, সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)
উদারতা ও সহিষ্ণুতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কোমলতা ও হৃদয়ার্দ্রতা মুমিনদের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন সাহাবি মুয়াজ (রা.) ও মুসা (রা.) কে ইয়ামেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন, ‘লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না। ’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৮)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)
পরিবারিক, সামাজিক ও জীবনের অন্যান্য পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এমন হলে, মুসলমান হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়া। পারস্পরিক ভুল-ত্রুটিগুলোকে শুধরে দেওয়া। এতে সম্পর্ক ও বন্ধন আরো মজবুত ও অটুট হয়। আল্লাহ সবাইকে ক্ষমাশীল হওয়ার তাওফিক দান করুক।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য উচিত যদি উক্ত ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয় তাহলে আপনি নিজেই তার নিকট বিনয়ের সাথে নিজের অতীত ভুলের কারণে ক্ষমা চাইবেন। প্রয়োজনে তাকে হাদিয়া বা গিফট দিবেন যেন তিনি আপনাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন। এমতাস্থায় তার উচিত আপনাকে ক্ষমা করা। এরপরও যদি সে ক্ষমা না করে তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট বেশী বেশী ইস্তেগফার ও ক্ষমা চাইবেন, আশা করা যায় তিনি আপনাকে ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ। কিন্তু প্রথমত বান্দার নিকট মাফ নেওয়ার আপ্রণ চেষ্টা করতে হবে।
পূর্বের হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর দিন থেকে হিসাব করে এটা যদি ১৫ দিন পরে হয়,এবং সর্বনিম্ন ৩ দিন তিন রাত পর্যন্ত আসে,তাহলে এটা হায়েজ।
আপনার এই ২৫০০ টাকা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়, সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
মাগরিবের ওয়াক্ত চলে আসলো,অথচ আসরের নামাজ আপনি আদায় করলেননা,সেক্ষেত্রে আপনার উপর আসর নামাজ কাজা আদায় করা আবশ্যক হবে।