আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
75 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায, আমার ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা সেক্টর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিলো।
১. ফেসবুক মনিটাইজেশন এর কাজ করে দিলে তা কি হালাল হবে? ফেসবুক এর কোনো পেইজ মনিটাইজেশন হলে সেই পেইজের ভিডিও তে এড আসে, ইউটিউব এর মত এড আসে আর এডের ভিত্তিতে পেইজের মালিকের ইনকাম হয়। আর এই মনিটাইজেশন অন কর‍তে হলে কিছু ক্রাইটেরিয়া ফিল আপ করা লাগে যেমন ৫০০০ ফলোয়ার হওয়া লাগবে, ভিডিও তে ৬০,০০০ মিনিট ওয়াচটাইম / ভিউস হওয়া লাগবে। তো এই ক্রাইটেরিয়া ফিল আপ এর কাজ কি নেয়া যাবে? যদিও পেইজে হালাল কন্টেন্ট থাকে তবুও কি এই কাজটা করে দেয়া জায়েজ হবে?
২. ইউটিউব চ্যানেল এ মনিটাইজেশন অন হলেও এড আসে। এই মনিটাইজেশন অন করতে হলেও উপরের মত কিছু শর্ত আছে, সাবস্ক্রাইবার গ্রো করা + নির্দিষ্ট মিনিট ওয়াচ টাইম ফিল আপ করা। এই কাজ করে দেয়া কি জায়েজ? হালাল কন্টেন্ট হলেও? যেহেতু মনিটাইজেশন অন হলে সে এড থেকে টাকা পাবে,  আর এই এড যেকোনো ধরনের হতে পারে, যেটায় হালাল ইনকাম হয়না জানামতে। তো এটা তো এক হিসেবে গুনাহের কাজে সাহায্য করা না? তাহলে তো ফেসবুক / ইউটিউব রিলেটেড কাজ গুলো করা যাবেনা?
৩. ফেসবুক এ কারো কোনো হালাল প্রোডাক্ট এর বুস্ট যদি করে দেই, কিন্তু তার পেইজে যদি নারীর ছবি থাকে সেটা কি জায়েজ হবে? যদিও আমি তার পেইজ প্রমোট করছিনা, তার কোনো একটা স্পেসিফিক পোস্ট বুস্ট করছি যেই পন্য হালাল এবং বেপর্দা নারীর ছবি নেই, এমন অবস্থায় কি এটা করা উচিত হবে?

৪. যারা অনলাইন বিজনেস করে পন্যের রিভিউ দেয়ার ক্ষেত্রে যদি কেউ নিজের এমন ছবি দেয় যেখানে নিজের পর্দা নষ্ট হয়, যেহেতু সে পর্দা করেনা, এক্ষেত্রে পেইজের ওনার হিসেবে আমার বা কোনো দ্বীন বুঝা ব্যক্তির করনীয় কি!

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(১-২)

বর্ণিত পেশা দুটি সন্দেহপূর্ণ।আর সন্দেহজনক পেশা বা কাজ থেকে বিরত থাকাই তাকওয়ার দাবী।সুতরাং এই ধরণের পেশা থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন।

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)

নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
عن عامر، قال: سمعت النعمان بن بشير، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "الحلال بين، والحرام بين، وبينهما مشبهات لا يعلمها كثير من الناس، فمن اتقى المشبهات استبرأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات: كراع يرعى حول الحمى، يوشك أن يواقعه، ألا وإن لكل ملك حمى، ألا إن حمى الله في أرضه محارمه، ألا وإن في الجسد مضغة: إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، ألا وهي القلب "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,(কোনো জিনিষ)হালাল (হওয়া)পরিস্কার।(এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যা এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা।যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকল, সে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হল, সে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো।এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যে, পশু ক্ষেতে নেমে যাবে।
জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে।এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,তার হারাম বিধি-বিধান।জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে।আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়,তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,ক্বলব বা অন্তর।(সহীহ বুখারী-৫২)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এক্ষেত্রে উক্ত হালাল প্রোডাক্ট বুস্ট করে দেয়া জায়েজ আছে।

(০৪)
আপনি তাদেরকে ছবি দেয়া থেকে নিষেধ করবেন। 
না মানলে তাদেরকে পেইজ থেকে বের ক-তে দিবেন। নতুবা আপনারও গুনাহের কাজে সহযোগিতার গুনাহ হবে। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...