জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ওয়াতনে আসলি তথা স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।
فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলী, ওয়াতনে আসলিত দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা।
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।
আরো জানুনঃ
সফরের দুরত্বে তবে,সেখানে যদি ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকার নিয়ত করে,তাহলে সেই স্থান ওয়াতনে ইকামত বলা হবে।
সেখানে পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হবে।
আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ
মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)
অপর হাদিসে এসেছে,
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)
আরো জানুনঃ
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রথমেই নির্ণয় করতে হবে যে আপনাদের ওয়াতনে আসলি কোনটা?
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার পরিবার বিগত প্রায় ৪০ বছর যাবৎ ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।
সুতরাং আপনি কি স্ত্রী সন্তান সহ সারাজীবন এর জন্য ঢাকাতেই থাকার নিয়ত করেছেন?
নাকি বি-বাড়িয়ায় দাদার এলাকায় সারাজীবন থাকার নিয়ত করেছেন?
যদি আজীবন ঢাকাতে ঐ এলাকায় স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত করে থাকেন,সেক্ষেত্রেঃ-
(০১)
এমতাবস্থায় সফরের রাস্তায়
আপনি মুসাফির হবেন,কসর নামাজ আদায় করবেন।
তবে ঢাকা যেহেতু আপনার ওয়াতনে আসলি, তাই ঢাকায় পৌঁছানোর পর আপনি মুসাফির থাকবেননা, কসর আদায় করতে পারবেননা।
(০২)
হ্যাঁ, আপনি সফরের রাস্তায় এবং সিলেটে পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
এমতাবস্থায় সিলেটে কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৩)
এমতাবস্থায় সফরের রাস্তায়
আপনি মুসাফির হবেন,কসর নামাজ আদায় করবেন।
তবে ঢাকা যেহেতু আপনার ওয়াতনে আসলি, তাই ঢাকায় পৌঁছানোর পর আপনি মুসাফির থাকবেননা, কসর আদায় করতে পারবেননা।
(০৪)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং বি-বাড়িয়ায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৫)
এমতাবস্থায় সফরের রাস্তায়
আপনি মুসাফির হবেন,কসর নামাজ আদায় করবেন।
তবে ঢাকা যেহেতু আপনার ওয়াতনে আসলি, তাই ঢাকায় পৌঁছানোর পর আপনি মুসাফির থাকবেননা, কসর আদায় করতে পারবেননা।
(০৬)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং কুমিল্লায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৭)
কুমিল্লা থেকে বি-বাড়িয়ার দূরত্ব যেহেতু ৬৬ কি.মি।
সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি সফরের রাস্তায় এবং বি-বাড়িয়ায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেননা।
উভয় ক্ষেত্রেই পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।
(০৮)
কুমিল্লা থেকে বি-বাড়িয়ার দূরত্ব যেহেতু ৬৬ কি.মি।
সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি সফরের রাস্তায় এবং কুমিল্লায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেননা।
উভয় ক্ষেত্রেই পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।
যদি আজীবন বি-বাড়িয়ার এলাকায় স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত করে থাকেন,সেক্ষেত্রেঃ-
(০১)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং ঢাকায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০২)
হ্যাঁ, আপনি সফরের রাস্তায় এবং সিলেটে পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
এমতাবস্থায় সিলেটে কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৩)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং ঢাকায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৪)
এমতাবস্থায় সফরের রাস্তায়
আপনি মুসাফির হবেন,কসর নামাজ আদায় করবেন।
তবে বি-বাড়িয়া যেহেতু আপনার ওয়াতনে আসলি, তাই বি-বাড়িয়ায় পৌঁছানোর পর আপনি মুসাফির থাকবেননা, কসর আদায় করতে পারবেননা।
পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।
(০৫)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং ঢাকায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৬)
এমতাবস্থায় আপনি সফরের রাস্তায় এবং কুমিল্লায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেন।
কসর নামাজ আদায় করবেন।
(০৭)
কুমিল্লা থেকে বি-বাড়িয়ার দূরত্ব যেহেতু ৬৬ কি.মি।
সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি সফরের রাস্তায় এবং বি-বাড়িয়ায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেননা।
উভয় ক্ষেত্রেই পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।
(০৮)
কুমিল্লা থেকে বি-বাড়িয়ার দূরত্ব যেহেতু ৬৬ কি.মি।
সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি সফরের রাস্তায় এবং কুমিল্লায় পৌঁছানোর পর মুসাফির হবেননা।
উভয় ক্ষেত্রেই পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।