আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,203 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
যদি সরকারী জমি দখল করে মসজিদের আংশিক বা পূর্ণ অংশ নির্মিত হয় ( রেললাইন বা হাইওয়ের পাশের মসজিদগুলোর কিছু অংশ অনেক সময়ই রেলের বা হাইওয়ের জমির উপর চলে আসে) সেক্ষেত্রে বিধান কি? কিংবা হাতির ঝিলের উপর ভাসমান যে মসজিদটি ভাংগা হল এটা পুরোটাই সরকারি জমিতে ছিল, কোন ওয়াকফ করা জমিতে নয়। এসবক্ষেত্রে কি বিধান?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

সরকারী জমি চাই তাহা খাস জমি হোক,বা ভিন্ন কোনো জমি হোক,সরকারের লিখিত, মৌখিক অথবা অন্তত মৌনসম্মতি ব্যতীত মসজিদ তৈরি করা জায়েজ নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজ্তাবা)
(সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬)
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 146068 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সরকারী জমিতে মসজিদ বানাতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে যদি স্পষ্ট অনুমতি বা মৌন সমর্থন না থাকে,তাহলে সেই জায়গায় মসজিদ বানানো জায়েজ নেই। 
,
58857 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে যদি সরকারী জমিতে কোথাও মসজিদ তৈরী করেই,তাহলে চেষ্টা করে সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি নেওয়া উচিত,যাতে করে সেটি শরয়ী মসজিদ হয়ে যায়।
,

কাগজে ওয়াকফ করে না দিলেও এমনিতেই মৌখিক অনুমতি নিয়ে মসজিদ নির্মাণ করে তাতে নামায আদায় শুরু করে দিলে তা মসজিদ হিসেবে পরিগণিত হয়ে যাবে। এতে নামায পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

তবে পরবর্তীতে ঝামেলা থেকে বাঁচতে লিখিত আকারে ওয়াফক করে নেয়াই উত্তম।

وَأَبُو يُوسُفَ – رَحِمَهُ اللَّهُ – مَرَّ عَلَى أَصْلِهِ مِنْ زَوَالِ الْمِلْكِ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ أَذِنَ فِي الصَّلَاةِ أَوْ لَمْ يَأْذَنْ، وَيَصِيرُ مَسْجِدًا بِلَا حُكْمٍ؛ لِأَنَّهُ إسْقَاطٌ كَالْإِعْتَاقِ، وَبِهِ قَالَتْ الْأَئِمَّةُ الثَّلَاثَةُ. (فتح القدير، كتال الوقف، فصل فى احكام المسجد، إذَا بَنَى مَسْجِدًا لَمْ يَزُلْ مِلْكُهُ عَنْهُ-6/234)
সারমর্মঃ আবু ইউসুফ রহঃ বলেছেন যে শুধু মৌখিক কথাই যথেষ্ট, নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হোক বা না হোক,,,,        

উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে  কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সরকারী জমিতে স্থায়ীভাবে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। তবে অনুমতি না থাকলে স্থায়ীভাবে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না (মুগনিল মুহতাজ ১০/১১৯; ইবনুল মুফলেহ, আল-মুবনি‘ শারহুল মুক্বনি‘ ৫/১৭৬-৭৭)। 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীয়তের বিধান হলো যে স্থান একবার শরয়ী মসজিদ (ওয়াকফের মাধ্যমে)  হয়ে যায়, তা কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই বাকি থাকে, 

তাই সেই জায়গা কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই অক্ষুন্ন রাখতে হবে। 

বহুতল ভবনের জন্য বা মেরামত সংস্কারের জন্য মসজিদ ভাঙ্গা যেতে পারে,তবে ভাঙ্গার পর সেটি মসজিদ হিসেবেই নির্মান করতে হবে।
কিয়ামত পর্যন্ত অন্য কোনো কিছুই বানানো যাবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত মসজিদ গুলো যদি সরকারের অনুমতি সাপেক্ষেই মসজিদ তৈরী হয়ে থাকে,তাহলে রাস্তা নির্মানের জন্য সেটি ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ নেই।
,
অন্যথায় জায়েজ আছে।        


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...