আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
414 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
edited by
আমার নাম আরাফাত। ঘটনাটি অনেকদিনের হবে। অনেকদিন আগে আমি একটা কমিকস ম্যাগাজিন পড়েছিলাম। সেই ম্যাগাজিনের গল্পটিতে একটা লোক ছিল। সেই লোকটা খুব অবহেলিত ছিলো সমাজে। এজন্য সে তার মাথায় কল্পনায় একটি চরিত্র সৃষ্টি করে এবং তার কল্পনার সেই চরিত্রটির সাথে সে সময় কাটাতে থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে তার কল্পনায় থাকা সেই চরিত্রটি তাকে(ঐ লোককে) তার(চরিত্রটি) আয়ত্তে নিয়ে আসে এবং ঐ লোকটির দ্বারা বিভিন্ন খারাপ কাজ করিয়ে নেয়। ঐ লোকটি তার মাথায় থাকা সেই চরিত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঐ লোকটি যতই চেষ্টা করে কিন্তু লাভ হয় না। অবশেষে ঐ লোকটি সেই চরিত্রটিকে তার(লোকটি) আয়ত্তে নিয়ে আসে। তো আমার মাথায়ও এরকম একাধিক চরিত্র আছে যারা আমাকে খুব কষ্ট দেয়। তো এরকম একটা চরিত্র যদি আমার মাথা থেকে বলে," আল্লাহর কসম! আমি(চরিত্রটি) যদি নৌকা চালাই তাহলে আরাফাত(যার মাথায় ওই চরিত্রটি রয়েছে) সে মুসলান না এবং আল্লাহ যেন আরাফাতকে মুসলমান হিসেবে কবুল না করেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি(চরিত্রটি) বলি।" এই কথাটি বলার পর সেই চরিত্রটি যদি আমাকে(আরাফাতকে) নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নৌকা চালিয়ে ফেলে তবে আমি আরাফাত কিভাবে আবার মুসলমান হতে পারবো? এক্ষেত্রে আমার(আরাফাতের) মাথার ভিতরে থাকা সেই চরিত্রটি ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আল্লাহ কি কখনোই আমাকে মুসলামান হিসেবে কবুল করবেন না?আমার মাথার ভিতর থাকা একটি চরিত্র যদি আল্লাহকে বলে," আল্লাহর কসম! আমি(চরিত্রটি) যদি নৌকা চালাই তাহলে আরাফাত(যার মাথায় ওই চরিত্রটি রয়েছে) সে মুসলান না এবং আল্লাহ যেন আরাফাতকে কখনো মুসলমান হিসেবে কবুল না করেন।" এবং এই কথায় আমি আরাফাতেরও যদি সায় থাকে এবং আমি যদি বলি,"ঠিকাছে আমি তোমার(সেই চরিত্র) কথা মানলাম" তাহলে সেই চরিত্রটি না বলা পর্যন্ত কি আল্লাহ আমাকে কখনোই মুসলমান হিসেবে কবুল করবেন না?

আল্লাহ আপনার এ কষ্টের উত্তম প্রতিদান দিক।

জাজাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

মনে মনে কুফরী কিছু বললে কেউ কাফের হয়ে যায়না।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যে মনে মনে বলেছেন যে আমি যদি অমুক কাজ করি,তাহলে আমি মুসলমান না,
এটা যেহেতু আপনি মনে মনে বলেছেন,মৌখিক বলেননি,তাই আপনি কাফের হবেননা । 
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وفیہ أیضاً(۱۷۶/۱):عن أبی ھریرۃ رضی الله عنہ قال: قال ﷺ "إن الله تجاوز عن أمتی ماحدثت بہ أنفسھا مالم تعمل أو تتکلم" أخرجہ البخاری 

যার সারমর্ম হলো নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উপেক্ষা করেন, যতক্ষন পর্যন্ত উক্ত কাজ না করবে বা মুখে কোনো কথা না বলবে,ততক্ষন পর্যন্ত কোনো বিধান জারী হয়না।

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي عَمَّا لَمْ تَتَكَلَّمْ بِهِ، أَوْ تَعْمَلْ بِهِ، وَبِمَا حَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا 

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মাতের মনে যা উদয় হয় তা যতক্ষণ না সে মুখে বলে অথবা কার্যে পরিণত করে ততক্ষণ তা উপেক্ষা করেন।
(আবু দাউদ ২২০৯)

أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ عَنْ مِسْعَرٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ 

উবায়দুল্লাহ ইবন সাঈদ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মতের মনে যা উদয় হয় বা খটকা লাগে, আল্লাহ্ তাআলা তা ক্ষমা করে দেবেন, যতক্ষণ না সে তা করে অথবা বলে।
(নাসায়ী শরিফ ৩৪৩৮)
,
শরীয়তের বিধান হলো ইচ্ছাপূর্বক ভাবে নিজেকে নিজে কাফের বলে পরিচয় দেওয়া কুফরী। 

সূরা নাহলের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-
مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (106)

“কেউ বিশ্বাস স্থাপনের পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় মুক্ত রাখলে তার উপর আল্লাহ ক্রোধ পতিত হবে এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে (সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অটল।” (১৬:১০৬)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আপনি অনিচ্ছায় নয়, বরং ইচ্ছাপূর্বক ভাবেই এমন কথা মুখ দিয়ে আওয়াজ করে বলে থাকেন,তাহলে উক্ত কাজ করলে আপনি কাফের হবেন।
সেই কাজ করে থাকলে পুনরায় ইসলাম গ্রহন করতে হবে। 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, এহেন কথা কোনোক্রমেই বলা ঠিক নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...