আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,
শায়খ আমি আমার পরিবারের ডিটেইলস উল্লেখ করছি ইনশাআল্লাহ পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন।

**আমি,আমার মা,আমার ছোটো বোন এই তিনজনের সংসার।আমি জব করি,অবিবাহিত  এবং পরিবারের সকল ব্যয়ভার বহন করছি।ছোটো বেলায় আমার বাবা মারা যান এবং আমার মা দীর্ঘদিন দিন যাবত চাকুরী করে আমাদের সংসার চালিয়েছেন,আপাদত কিছুদিন যাবত জব ছেড়েছেন।

***আমার মায়ের কিছু সঞ্চিত টাকা আছে,তিনি একটি জমি কিনতে ইচ্ছুক।কিন্তু জমি কিনতে যে পরিমান টাকার দরকার তার ৫০-৬০% টাকা তার হাতে আছে।তিনি চাইছেন জমি কিনার বাকি টাকাটা আমি দিব এবং ভবিষ্যতে বাড়ি করার টাকাও আমাকেই দিতে হবে।কিন্তু আমি শুনেছি এইভাবে পরিবারের সবাই মিলে কিছু কিছু টাকা দিয়ে সম্পত্তি রাখলে পরবর্তী তে বন্টনে ঝামেলা হয়,যেটাতে কারো প্রতি জুলুম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

১.এমতাবস্থায় আমার কি উচিত আম্মুকে বলে তার টাকাটা ধার নিয়ে আমার নামেই জমি কিনা? এক্ষেত্রে অবশ্য আম্মু মাইন্ড করতে পারে।

২.নাকি আম্মুকে জমি কিনার জন্য বাকি টাকাটা আমি এমনিতেই দিয়ে দেব?
 যাতে সে জমি কিনতে পারে,তিনি ত আর টাকাটা ফেরত দিতে পারবেন না,উল্লেখ সেক্ষেত্রে যদি আমার টাকায় বাড়ি করি আর জমিটা আম্মুর নামে হয়,তাহলে পরবর্তীতে এর শরয়ী পদ্ধতি তে বন্টনে কি কোনো ঝামেলা হবে??

আশা করি সঠিক পরামর্শ দিয়ে উপকৃত করবেন এবং কিভাবে আমার আম্মুকে সঠিক টা বুঝাতে পারি যাতে তিনি রাগ না করেন সেই ব্যাপারেও নসীহা করবেন।

جزاكالله خيرا

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

জুলুম কেবল অন্যের প্রতি নয়, নয় কেবল বান্দার হক নষ্ট করার মাধ্যমে; জুলুম হয় নিজের প্রতিও- বিভিন্ন গোনাহ ও শরীয়তের হুকুম লঙ্ঘনের মাধ্যমে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ مَنْ يَّتَعَدَّ حُدُوْدَ اللهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهٗ..

কেউ আল্লাহর (স্থিরীকৃত) সীমারেখা লঙ্ঘন করলে, সে তো তার নিজের উপরই জুলুম করল। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ১

আল্লাহর হুকুমের সামান্য বরখেলাফও যে নিজের প্রতি জুলুম, সেই অনুভূতি জাগ্রত হয়েছিল মানবের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু, মানবজাতির পিতা হযরত আদম আ.-এর পবিত্র হৃদয়ে। তাই তিনি বলেছিলেন-

رَبَّنَا ظَلَمْنَاۤ اَنْفُسَنَا وَ اِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَ تَرْحَمْنَا لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ.

হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজ সত্তার উপর জুলুম করে ফেলেছি। আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন ও আমাদের প্রতি রহম না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অকৃতকার্যদের অন্তভুর্ক্ত হয়ে যাব। -সূরা আরাফ (৭) : ২৩

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَّ لَا تُمْسِكُوْهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعْتَدُوْا  و مَنْ يَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَه.

(স্ত্রীদেরকে) কষ্ট দেওয়ার লক্ষ্যে এজন্য আটকে রেখ না যে, তাদের প্রতি জুলুম করতে পারবে। যে ব্যক্তি এরূপ করবে, সে স্বয়ং নিজ সত্তার প্রতিই জুলুম করল। -সূরা বাকারা (২) : ২৩১

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি চাইলে আপনার নামে জমি ক্রয় করবেন,বাদ বাকি টাকা আপনার আম্মু থেকে ধার নিয়ে মাসে মাসে পরিশোধ করবেন।

অথবা আপনার আম্মুর নামে জমি ক্রয় করবেন, বাদ বাকি টাকা আপনি আপনার আম্মুকে ধার দিবেন।
যেটা পরবর্তীতে আপনার আম্মু আপনাকে শোধ করবে।

তবে উভয় ছুরতেই আপনার আম্মু মাইন্ড করতে পারে।

সেজন্য আপনি নিম্নোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেনঃ-

ক,
আপনি আর আপনার আম্মু উভয়ে মিলে জমি ক্রয় করবেন,জমি ক্রয়ে যে যত টাকা দিবে,সেই পরিমান জমি নিজের নামে দলিল করে নিবেন।

মানে এখানে দলিল হবে ২ টা।

আপনার মায়ের টাকায় যতটুকু জমি ক্রয় করা হবে,সেই জমির দলিল আপনার মায়ের নামে করে নিবেন।

আর আপনার টাকায় যতটুকু জমি ক্রয় করা হবে,সেই জমির দলিল আপনার নামে করে নিবেন।

খ,
পুরো জমিটাই আপনার মায়ের নামে বা আপনার নামে করে নিবেন। সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ে আপনার যতটুকু অংশ আছে,সকলকে বসিয়ে স্পষ্ট বলে রাখবেন যে আম্মু মারা যাওয়ার পর আপনার অংস বন্টন হবেনা।
শুধু আপনার মায়ের অংশ আপনাদের মাঝে বন্টন হবে।

★জমি ক্রয়ের পর বাড়ি করা বাবদ আপনি যেই টাকা দিবেন,সেটা নিয়ে যেনো পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা না হয়,সেজন্য সকলকে বসে মাশওয়ারা করবেন, সিদ্ধান্ত জানাবেন যে আপনি যেহেতু বাসা নির্মান বাবদ পুরো টাকা দিয়েছেন,সুতরাং বাড়ির এই পরিমান (পরামর্শ মোতাবেক সকলের সন্তুষ্টি চিত্তে)  অংশ আপনাকে দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...