আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!

এতগুলো প্রশ্ন করার জন্য প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

১।  আমার নিকট প্রায় এক থেকে দেড়ভরির মতো স্বর্ণ আছে।

এখন কুরবানির তিনদিনের মধ্যে যদি আমার নাম নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত ১৫০ টাকা জমা থাকে,তাহলে কি আমার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে?

যদি এ ১৫০ টাকা আমি অন্য কাউকে ধার দিই কিনবা কারো নিকট জমা রাখি তাহলে কি কুরবানি দিতে হবে?

২।  কারো নিকট যদি ১ ভরির মতো স্বর্ণ থাকে এবং সে যদি সাংসারিক কোনো জিনিস ক্রয় করার জন্য কিছু টাকা জমা রাখে এবং ঈদের পর ওই জিনিস টা ক্রয় করে,তাহলে কি তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে?

অথবা তার যদি ঋণ থাকে, সে যদি ঋণ পরিশোধ করার টাকাগুলো কুরবানির দিনগুলোতে জমা রাখে,ঈদের পর ঋণ পরিশোধ করে,তার উপর কি কুরবানি ওয়াজিব হবে কি না?

৩। নিসাবের ক্ষেত্রে সন্তানদের অলংকার কি মায়ের অলংকারের সাথে একত্রে হিসেব করা হবে নাকি উভয়ের গুলো  আলাদাভাবে হিসেব করা হবে?
৪। কারো যদি থাকার নিজস্ব ঘর না থাকে,সে বাসাভাড়া থাকে এবং তার প্রায় ১০ লক্ষ টাকার জমি থাকে,যেটা এমনে পড়ে আছে,কিংবা অন্যকেউ সেখানে বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করে খায় এবং ঐ জমির মালিক যদি ঋণগ্রস্ত হয় তার উপর কি কুরবানি ওয়াজিব হবে?

৫। আমি একটা টিউশনি করাই,আমি প্রথমে টাকা নিতে চাই নি,কিন্তু উনারা নিজ ইচ্ছাতেই প্রতিমাসে আমাকে ৪০০০ টাকা দেয় এবং আমিও সেটা গ্রহণ করি।

যেহেতু প্রথমে আমি টাকা নিতে চাই নি কিন্তু আমি জানি তারা টাকা দিবে,সে হিসেবে কি আমি টাকাটা তাদের নিকট পাওনা?

পাওনা হলে যদি কুরবানির দিনগুলোতে তারা আমাকে টাকা না দেয়,আমি যদি জানি ঈদের কয়েকদিন পর টাকা দিবে এবং আমার প্রায় দেড়ভরির মতো স্বর্ণ থাকে,তাহলে কি আমার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।

এক্ষেত্রে আপনি যদি এই ১৫০ টাকা অন্য কাউকে ধার দেন,কিংবা কারো নিকট জমা রাখেন, তাহলেও আপনাকে কুরবানি দিতে হবে।

তবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখের আগেই যদি আপনি এই ১৫০ টাকা খরচ করে ফেলেন,বা কাউকে হাদিয়া দেন,আপনার মালিকানায় যদি এর এক টাকাও না থাকে,আপনার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

(০২)
ক,
হ্যাঁ, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। 

খ, 
এক্ষেত্রে ঋনের টাকা বাদ দিলে যদি তার মালিকানায় আর এক টাকাও না থাকে,তার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

(০৩)
উভয়ের গুলো আলাদাভাবে হিসেব করা হবে।

(০৪)
১০ লক্ষ টাকা হতে তার ঋনের টাকা বাদ দিয়ে যদি নেসাব পরিমান টাকা থাকে,সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে। 

(০৫)
আপনাকে যদি তারা গেলো মে মাসের বেতন কুরবানী ঈদের পর দেয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব। 

তবে যদি তারা গেলো মে মাসের বেতন আপনাকে আগেই দিয়ে দেয়,আর আপনি জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখের আগেই তাহা খরচ করে ফেলেন,এমতাবস্থায় জিলহজ্জ মাসের ১০,১১,১২ তারিখে আপনার মালিকানায় যদি এর এক টাকাও না থাকে,আপনার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...