হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া।
সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি এই ১৫০ টাকা অন্য কাউকে ধার দেন,কিংবা কারো নিকট জমা রাখেন, তাহলেও আপনাকে কুরবানি দিতে হবে।
তবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখের আগেই যদি আপনি এই ১৫০ টাকা খরচ করে ফেলেন,বা কাউকে হাদিয়া দেন,আপনার মালিকানায় যদি এর এক টাকাও না থাকে,আপনার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।
(০২)
ক,
হ্যাঁ, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
খ,
এক্ষেত্রে ঋনের টাকা বাদ দিলে যদি তার মালিকানায় আর এক টাকাও না থাকে,তার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।
(০৩)
উভয়ের গুলো আলাদাভাবে হিসেব করা হবে।
(০৪)
১০ লক্ষ টাকা হতে তার ঋনের টাকা বাদ দিয়ে যদি নেসাব পরিমান টাকা থাকে,সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
(০৫)
আপনাকে যদি তারা গেলো মে মাসের বেতন কুরবানী ঈদের পর দেয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
তবে যদি তারা গেলো মে মাসের বেতন আপনাকে আগেই দিয়ে দেয়,আর আপনি জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখের আগেই তাহা খরচ করে ফেলেন,এমতাবস্থায় জিলহজ্জ মাসের ১০,১১,১২ তারিখে আপনার মালিকানায় যদি এর এক টাকাও না থাকে,আপনার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো জমি/বাসা বাড়ি/দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্রও না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।