আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,
আমার প্রশ্নটি লেখার আগে সমস্যাটি একটু ভূমিকা করে লিখতে হচ্ছে। আপনি আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে লেখাটি পড়তে হবে এজন্য প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আর সেই সাথে অনেক বেশি শুকরিয়া ও জানাচ্ছি!

আমি আমার স্বামী,  একজন মেয়ে সন্তান সহ আমার শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি,  ননশ,  ননদের সাথে একই বাসায় থাকি। আমার ননশ বিবাহিত এবং চাকুরীজীবি। আর উনার দুই সন্তান নিয়ে এখানে থাকেন। উনার স্বামী প্রতি  সপ্তাহে এখানে আসেন এবং ৩ দিনের জন্য থাকেন।
আমার শ্বশুরবাড়ির মানুষ সবাই ভালো। কিন্তু উনাদের লাইফ স্টাইল, চিন্তাভাবনা, এমনকি খাদ্যাভাস ও আমার সাথে মিলে না। আমি বাকি সব কিছু কম্প্রোমাইজ করে একসাথে থাকতে পারলেও,  আমার ননশের সাথে একসাথে থাকাটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
কারণ যদি আমি সংক্ষেপে বলি,  উনি বাসায় থাকেন না। উনার বাচ্চারা ইচ্ছামত যা ইচ্ছা করে, নানা নানী ও সেটা প্রশ্রয় দেন। আমি আমার বাচ্চাকে রুটিনমাফিক একটা লাইফস্টাইল দিতে চাচ্ছি, সেটাতে প্রবলেম হচ্ছে। আবার উনার হাজবেন্ড যখন আসেন, ইচ্ছামত সব রুমে চলাচল করে, তখন আমার স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত হয়। তাছাড়া আমি আমার স্বাধীন মত একটা সংসার চাই, যেখানে আমি আমার নিয়ম মত চলব আর সবকিছু চালাব। উনার উপস্থিতিতে সেটা সম্ভব হচ্ছেনা। বাসায় সব কিছু আমার শ্বাশুড়ি আর উনি ডিসাইড করেন।
আমার স্বামী হচ্ছে উনাদের একমাত্র ছেলে সন্তান। আলাদা বাসা নেওয়ার এবিলিটি থাকলেও আমার স্বামী এটাতে রাজি না। আমি বলেছি, তাহলে বাসায় আমাকে আমার মত একটা পরিবেশ দিতে। উনি এই সমস্যা গুলো নিয়ে উনার বাবা মার সাথে, বোনের সাথে কথা বলছে। কিন্তু উনারা গত ৩ বছরেও কোন সমাধান করেননি। আমি নিজে একান্তভাবে আমার শ্বাশুড়িকে আমার সমস্যার কথা ৩/৪ বার বলেছি, কিন্তু উনি কোন সমাধান দিতে পারেন নি।
এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি? আমি আমার পরিবারের জন্য একটা দ্বীনী পরিবেশ চাই, আর আমি আমার স্বামী সন্তানকে নিয়ে একটা রুটিনমাফিক জীবন চাই। এই সিচুয়েশনে আমি কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনার স্বামীর  আলাদা বাসা নিয়ে থাকার সামর্থ আছে,সেক্ষেত্রে আপনার স্বামীর জন্য আলাদা বাসস্থানে ব্যবস্থা করা ওয়াজিব।
আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা না করলে তার গুনাহ হবে।

তবে যেহেতু উক্ত বিষয় বলার পরেও কাজ হচ্ছেনা,সুতরাং আপনার জন্য করনীয় হলো উভয় পরিবারের মুরব্বিদের নিয়ে বসে আপনার পূর্ণ পর্দায় থাকার বিষয় নিশ্চিত করা।
আপনার পরিবারের জন্য একটা দ্বীনী পরিবেশ তৈরী করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...