আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (91 points)
১. অট্টহাসি বলতে এতোদিন জানতাম হাহা করে জোরে জোরে হাসা, কিন্তু এক জায়গায় দেখলাম পিছনের কাতারের মানুষ শুনলেই তাকে অট্টহাসি ধরা হবে। আসলে অট্টহাসি কিরকম?অনেক সময় হাসি চাপাতে গেলেও একটা ছোট হাসির আওয়াজ আসে যা খুব আস্তেই হয় যে শব্দ পিছনের কাতার পর্যন্ত যায় এই অল্প আওয়াজ ও অল্প শব্দোর হাসিও কি অট্টহাসি? এই ব্যাপারে কি একটু বিস্তারিত বলবেন?কতোক্ষনব্যাপী ও কতোদূর শব্দ গেলে অট্টহাসি ধরা হবে?

২.সম্পূর্ণ মাথা মাসেহের ক্ষেত্রে কি মাথার সব জায়গায় হাত লাগা শর্ত না কি হাত চুলের উপর দিয়ে একবার সামন পিছন করলেই হয়ে যায়? দুই পাশের কানের চিপাও কি মাসেহ করতে হয়?

৩. অযুর সময় শাওয়ারে মাথা ভিজিয়ে নিলে বা কেবল এক মগ পানি ঢাললেই কি মাসেহের হক আদায় হয়? না কি হাত চালনাও মাসেহের শর্ত?

৪. ঘন দাড়ি কাকে বলে। একজয়গায় দেখলাম, দাড়ি যদি এমন হয় যে দাড়ির জন্য গালের চামড়া নজরে আসছে না তাহলে তা ঘন দাড়ি, তখন ওযুতো সেই চামড়ায় পানি না লাগলোও হবে। এটা কি সত্য, ঘন দাড়ির শর্ত পূরনে কি তা এক মুষ্টি হওয়া জরুরী?

৫. আমার বউকে৷ একদিক একটা ফিকহি মূলনীতি বলেছিলাম যে সন্দেহের কারণে কোনো কিছু কে নাপাক ধরা হবে না। এটা সে জানে। আমি কিছু কাপড় পরে কিছুদিন নামাজ পরছি না, তখন তাকে বলি এগুলো নাপাক সন্দেহ লাগায় পরে সালাত আদায় করি না, তখন সে বলে ধোতে দাও এগুলো, সন্দেহ থাকলে তা নাপাক ওই।

তার এরুপ বলায় কি কুফর হবে?


জাজাকাল্লাহ...

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নামাজে যদি হাসে,তাহলে এক্ষেত্রে তিন ছুরত।
যদি শুধু দাঁত খুলে,হাসির আওয়াজ একেবারেই না হয়,তাহলে নামাজও ভেঙ্গে যাবেনা।
অযুও ভেঙ্গে যাবেনা। 
তবে এটি মাকরুহ।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)
,
আর যদি এতটুকু আওয়াজ হয় যে নিজে শুনতে পারে,অথবা একেবারে কাছের মানুষ শুনতে পারে,তাহলে শুধু নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 
,
আর যদি এত জোড়ে হাসে,যে অন্যান্য লোকেরা অথবা মজলিসের লোকেরা শুনতে পারে,তাহলে নামাজ এবং অযু উভয়টাই ভেঙ্গে যাবে।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بِهِ مُحَمَّدُ بْنُ مَخْلَدٍ ، نَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَتِيقُ ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ الْمُحَبَّرِ ، نَا أَيُّوبُ بْنُ خُوطٍ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يُصَلِّي بِنَا ، فَجَاءَ رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ ، فَوَطِئَ فِي خَبَالٍ مِنَ الْأَرْضِ ، فَصُرِعَ ، فَضَحِكَ بَعْضُ الْقَوْمِ ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَنْ ضَحِكَ أَنْ يُعِيدَ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ

মুহাম্মাদ ইবনে মাখলাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে নামায পড়ছিলেন। তখন এক অন্ধ ব্যক্তি এসে পিচ্ছিল মাটিতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। তাতে কতক লোক হেসে দিলো (নামাযরত অবস্থায়)। যারা হেসেছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে পুনরায় উযু করে নামায পড়ার নির্দেশ দিলেন।
(সুনানে দারা কুতনি ৫৮০

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে

(وَمِنْهَا الْقَهْقَهَةُ) وَحَدُّ الْقَهْقَهَةِ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلِجِيرَانِهِ وَالضَّحِكُ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا يَكُونُ مَسْمُوعًا لِجِيرَانِهِ وَالتَّبَسُّمُ أَنْ لَا يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا لِجِيرَانِهِ. كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ الْقَهْقَهَةُ فِي كُلِّ صَلَاةٍ فِيهَا رُكُوعٌ وَسُجُودٌ تَنْقُضُ الصَّلَاةَ وَالْوُضُوءَ عِنْدَنَا. كَذَا فِي الْمُحِيطِ سَوَاءٌ كَانَتْ عَمْدًا أَوْ نِسْيَانًا كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
وَلَا تَنْقُضُ الطَّهَارَةَ خَارِجَ الصَّلَاةِ وَالضَّحِكُ يُبْطِلُ الصَّلَاةَ وَلَا يُبْطِلُ الطَّهَارَةَ وَالتَّبَسُّمُ لَا يُبْطِلُ الصَّلَاةَ وَلَا الطَّهَارَةَ،

 হাসি তিন প্রকার। প্রত্যেকটির সংজ্ঞা নিম্নরূপ।  যথা-
(১)ক্বাহ্ক্বাহাঃ যা সে নিজেও শুনবে এবং তার প্রতিবেশীগণ ও শুনবে।
(২)দ্বিহকঃযা সে নিজে শুনবে,তবে তার প্রতিবেশীগণ শুনবে না।
(৩)তাবাস্সুমঃযা সে নিজেও শুনবে না এবং প্রতিবেশীরা ও শুনবে না।(যাখিরাহ)
আমাদের মাযহাবমতে প্রত্যেক রুকু-সেজদা বিশিষ্ট নামাযে ক্বাহ্ক্বাহা নামায এবং অজু উভয়টিকে নষ্ট করে দেয়।(মুহিত) চায় ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক(খুলাসাহ)তবে নামাযের বাহিরে হলে অজু নষ্ট হবে না।আর দ্বিহক নামাযকে নষ্ট করে দিলেও অজুকে নষ্ট করবে না।আর তাবাস্সুম নামায এবং অজু কিছুকেই নষ্ট করবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/১২)

বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
ভেজা হাত চুলের উপর দিয়ে একবার সামনে পিছনে করলেই হয়ে যায়।
দুই পাশের কানের চিপাও মাসেহ করতে হবে।
এটা সুন্নাত।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
অযুর সময় শাওয়ারে মাথা ভিজিয়ে নিলে বা কেবল এক মগ পানি ঢাললেই মাসেহের হক আদায় হবে।

(০৪)
হ্যাঁ, এটা সহীহ।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

এক মুষ্টি হওয়া শর্ত নয়।
তবে চামড়া দেখা না গেলে সেক্ষেত্রে চামড়ায় না পৌছালেও দাড়ি খিলাল করতে হবে।

(০৫)
না,কুফরি হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...