জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
নামাজ ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম কারন হলো নামাজে শব্দ করে হাসা,কথা বলা,,।
নামাজে শব্দ করে অট্টহাসি দিলে ওজুসহ ভেঙে যায়। (কানযুদ্দাকায়েক ১/১৪০)
মুআবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস সুলামি (রা.) নওমুসলিম অবস্থায় নামাজে কথা বললে রাসুল (সা.) নামাজের পর তাঁকে বলেন, ‘নামাজের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশত তাসবিহ, তাকবির বা কোরআন পাঠ করতে হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩৭)
,
★নামাজে যদি হাসে,তাহলে এক্ষেত্রে তিন ছুরত।
যদি শুধু দাঁত খুলে,হাসির আওয়াজ একেবারেই না হয়,তাহলে নামাজও ভেঙ্গে যাবেনা।
অযুও ভেঙ্গে যাবেনা।
তবে এটি মাকরুহ।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)
,
আর যদি এতটুকু আওয়াজ হয় যে নিজে শুনতে পারে,অথবা একেবারে কাছের মানুষ শুনতে পারে,তাহলে শুধু নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
,
আর যদি এত জোড়ে হাসে,যে অন্যান্য লোকেরা অথবা মজলিসের লোকেরা শুনতে পারে,তাহলে নামাজ এবং অযু উভয়টাই ভেঙ্গে যাবে।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا بِهِ مُحَمَّدُ بْنُ مَخْلَدٍ ، نَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَتِيقُ ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ الْمُحَبَّرِ ، نَا أَيُّوبُ بْنُ خُوطٍ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يُصَلِّي بِنَا ، فَجَاءَ رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ ، فَوَطِئَ فِي خَبَالٍ مِنَ الْأَرْضِ ، فَصُرِعَ ، فَضَحِكَ بَعْضُ الْقَوْمِ ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَنْ ضَحِكَ أَنْ يُعِيدَ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ
মুহাম্মাদ ইবনে মাখলাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে নামায পড়ছিলেন। তখন এক অন্ধ ব্যক্তি এসে পিচ্ছিল মাটিতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। তাতে কতক লোক হেসে দিলো (নামাযরত অবস্থায়)। যারা হেসেছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে পুনরায় উযু করে নামায পড়ার নির্দেশ দিলেন।
(সুনানে দারা কুতনি ৫৮০
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে
(وَمِنْهَا الْقَهْقَهَةُ) وَحَدُّ الْقَهْقَهَةِ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلِجِيرَانِهِ وَالضَّحِكُ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا يَكُونُ مَسْمُوعًا لِجِيرَانِهِ وَالتَّبَسُّمُ أَنْ لَا يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا لِجِيرَانِهِ. كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ الْقَهْقَهَةُ فِي كُلِّ صَلَاةٍ فِيهَا رُكُوعٌ وَسُجُودٌ تَنْقُضُ الصَّلَاةَ وَالْوُضُوءَ عِنْدَنَا. كَذَا فِي الْمُحِيطِ سَوَاءٌ كَانَتْ عَمْدًا أَوْ نِسْيَانًا كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
وَلَا تَنْقُضُ الطَّهَارَةَ خَارِجَ الصَّلَاةِ وَالضَّحِكُ يُبْطِلُ الصَّلَاةَ وَلَا يُبْطِلُ الطَّهَارَةَ وَالتَّبَسُّمُ لَا يُبْطِلُ الصَّلَاةَ وَلَا الطَّهَارَةَ،
হাসি তিন প্রকার। প্রত্যেকটির সংজ্ঞা নিম্নরূপ। যথা-
(১)ক্বাহ্ক্বাহাঃ যা সে নিজেও শুনবে এবং তার প্রতিবেশীগণ ও শুনবে।
(২)দ্বিহকঃযা সে নিজে শুনবে,তবে তার প্রতিবেশীগণ শুনবে না।
(৩)তাবাস্সুমঃযা সে নিজেও শুনবে না এবং প্রতিবেশীরা ও শুনবে না।(যাখিরাহ)
আমাদের মাযহাবমতে প্রত্যেক রুকু-সেজদা বিশিষ্ট নামাযে ক্বাহ্ক্বাহা নামায এবং অজু উভয়টিকে নষ্ট করে দেয়।(মুহিত) চায় ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক(খুলাসাহ)তবে নামাযের বাহিরে হলে অজু নষ্ট হবে না।আর দ্বিহক নামাযকে নষ্ট করে দিলেও অজুকে নষ্ট করবে না।আর তাবাস্সুম নামায এবং অজু কিছুকেই নষ্ট করবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/১২)
বিস্তারিত জানুনঃ
مصنف عبد الرزاق الصنعاني (2/ 376):
"عن معمر، عن قتادة، عن أبي العالية الرياحي: أن رجلًا أعمى تردى في بئر والنبي صلى الله عليه وسلم يصلي بأصحابه، فضحك بعض من كان يصلي مع النبي صلى الله عليه وسلم، فأمر النبي صلى الله عليه وسلم: «من ضحك منكم فليعد الصلاة»".
সারমর্মঃ এক অন্ধ ব্যাক্তির কুপে পড়ে যাওয়ার উপক্রম দেখে নামাজে কিছু ছাহাবী হেসেছিলো,রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে যারা হেসেছে,তারা যেনো নামাজ আবার আদায় করে।
سنن الدارقطني (1/ 307):
"عن منصور الواسطي هو ابن زاذان، عن ابن سيرين، عن معبد الجهني، قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم يصلي الغداة، فجاء رجل أعمى وقريب من مصلى رسول الله صلى الله عليه وسلم بئر على رأسها جلة، فجاء الأعمى يمشي حتى وقع فيها، فضحك بعض القوم وهم في الصلاة، فقال النبي صلى الله عليه وسلم بعدما قضى الصلاة: «من ضحك منكم فليعد الوضوء وليعد الصلاة»".
সারমর্মঃ এক অন্ধ ব্যাক্তির কুপে পড়ে যাওয়ার উপক্রম দেখে নামাজে কিছু ছাহাবী হেসেছিলো,রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে যারা হেসেছে,তারা যেনো নামাজ আবার আদায় করে।
عن أبي موسی رضي اللہ عنہ قال بینما رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم یصلي إذ دخل رجل فتردی فی حفرة کانت في المسجد وکان ببصرہ ضرر فضحک کثیر من القوم وہو فيا لصلاة فأمر رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم من ضحک أن یعد الوضوء ویعید الصلاة رواہ الطبراني في الکبیر ورجالہ موثقون․
أخبرنا أبو حنیفة قال حدثنا منصور بن زاذان عن الحسن البصري عن النبي صلی اللہ علیہ وسلم انہ قال: بینما ہو في الصلاة إذ أقبل رجل أعمی من قبل القبلة یرید الصلاة والقوم في صلاة الفجر فوقع في زبیة فاستضحک بعض القوم حتی قہقہ فلما فرغ رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم قال: من کان قہقہ منکم فلیعد الوضوء والصلاة رواہ الإمام محمد في کتاب الآثار․
এই হাদীস গুলোরও সারমর্মঃ এক অন্ধ ব্যাক্তির কুপে পড়ে যাওয়ার উপক্রম দেখে নামাজে কিছু ছাহাবী হেসেছিলো,রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে যারা হেসেছে,তারা যেনো নামাজ আবার আদায় করে।
وھي مایکون مسموعاًلہ ولجیرانہ وسواء ظہرت أسنانہ أو لا ۔ (مجمع الأنہر:۱؍۲۰)
অট্রহাসি বলা হয় যেটা নিজে এবং আশে পাশের লোকেরা শুনতে পারে। দাঁত প্রকাশ পাক বা না পাক।
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 11636 ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু হাসির কোনো শব্দই হয়নি,তাই নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
তবে এহেন কাজ মাকরুহ।