আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)

السلام عليكم ورحمة الله وبركاته أستاذ

১) ‎ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘যদি লোকেরা জানত যে, একাকী সফরে কী ক্ষতি রয়েছে ; যা আমি জানি, তাহলে কোন সওয়ার একাকী সফর করত না ।’’

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৯৬৫


২) ‎আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা (আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘একজন (সফরকারী) আরোহী একটি শয়তান এবং দু’জন আরোহী দু’টি শয়তান । আর তিনজন আরোহী একটি কাফেলা ।’’

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৯৬৬

 

এখানে সফরের দূরুত্ব কতটুকু?

 আরো কি কি মাস'আলা রয়েছে এইদুটো হাদীসকে কেন্দ্র করে?

এগুলোর বিস্তারিত মাসায়েল এবং ব্যাখ্যা জানাবেন,

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

بَابُ اِسْتِحْبَابِ طَلَبِ الرُّفْقَةِ وَتَأْمِيْرِهِمْ عَلٰى أَنْفُسِهِمْ وَاحِدًا يُطِيْعُوْنَهُ

সফরের জন্য সাথী খোঁজ করা এবং কোন একজনকে আমীর (দলপতি) নিযুক্ত করে তার আনুগত্য করা শ্রেয়।

عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: لَوْ أَنَّ النَّاسَ يَعْلَمُونَ مِنَ الوحدَةِ مَا أعْلَمُ، مَا سَارَ رَاكبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ ! . رواه البخاري

ইবনে ’উমার রাদিয়াল্লাহু ’আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যদি লোকেরা জানত যে, একাকী সফরে কী ক্ষতি রয়েছে; যা আমি জানি, তাহলে কোন সওয়ার একাকী সফর করত না।’’
(সহীহুল বুখারী ২৯৯৮, তিরমিযী ১৬৭৩, ইবনু মাজাহ ৩৭৬৮, আহমাদ ৪৭৩৭, ৫২৩০, ৫৫৫৬, ৫৬১৮, দারেমী ২৬৭৯)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা: (لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِى الْوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ) মানুষ যদি জানতো একাকীত্বের মধ্যে কি ক্ষতি রয়েছে আমি যা জানি তাহলে কোনো আরোহী রাতে একাকী ভ্রমণ করত না।

‘আল্লামা মুযহির বলেনঃ এককীত্বের মধ্যে ধর্মীয় ক্ষতি রয়েছে; কেননা তার সাথে জামা‘আতে সালাত আদায় করার কেউ নেই, আর দুনিয়াবী ক্ষতিও রয়েছে, কারণ প্রয়োজনে তাকে সহযোগিতা করার কেউ নেই।

ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসের প্রকাশমান অর্থানুযায়ী বলা উচিত ছিল কেউ একাকী ভ্রমণ করত না। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো আরোহী রাতে একাকী ভ্রমণ করত না। রাতের কথা এজন্য বলা হয়েছে, কেননা রাতে ক্ষতির আশংকা অধিক। আর আরোহী এজন্য বলা হয়েছে, যাতে এ ধারণা করা না হয় যে, আরোহী তো একা নয় কারণ তার সাথে বাহন আছে। এতে এ ইঙ্গিতও রয়েছে যে, আরোহীর একাকী ভ্রমণের মধ্যে যদি ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলে পদব্রজে একাকী ভ্রমণ করার মধ্যে ক্ষতির সম্ভাবনা আরো অধিক। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

ইবনু হাজার বলেনঃ (مَا أَعْلَمُ) আমি যা জানি এর দ্বারা উদ্দেশ্য যে বিপদের কথা আমি জানি অর্থাৎ- একাকী ভ্রমণ করলে যে ধরনের বিপদ আসতে পারে- এ সম্পর্কে আমি যা জানি তা যদি ‘‘লোকেরা জানতো তাহলে কেউই একাকী ভ্রমণ করতো না’’। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৯৯৮)

প্রশ্নে উল্লেখিত ২য় হাদীসঃ-

بَابُ اِسْتِحْبَابِ طَلَبِ الرُّفْقَةِ وَتَأْمِيْرِهِمْ عَلٰى أَنْفُسِهِمْ وَاحِدًا يُطِيْعُوْنَهُ

সফরের জন্য সাথী খোঁজ করা এবং কোন একজনকে আমীর (দলপতি) নিযুক্ত করে তার আনুগত্য করা শ্রেয়।

عَنْ عَمرِو بنِ شُعَيْبٍ، عَن أَبِيهِ، عَن جَدِّهِ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «الرَّاكِبُ شَيْطَانٌ، وَالرَّاكِبَانِ شَيْطَانَانِ، وَالثَّلاَثَةُ رَكْبٌ ». رواه أَبُو داود والترمذي والنسائي بأسانيد صحيحةٍ، وَقَالَ الترمذي: «حديث حسن »

’আমর ইবনে শু’আইব তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’একজন (সফরকারী) আরোহী একটি শয়তান এবং দু’জন আরোহী দু’টি শয়তান। আর তিনজন আরোহী একটি কাফেলা।’’
(আবূ দাউদ ২৬০৭, তিরমিযী ১৬৭৪, আহমাদ ৬৭০৯, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৩১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা: (الرَّاكِبُ شَيْطَانٌ) ‘‘একা ভ্রমণকারী আরোহী শায়ত্বন’’। ‘আল্লামা মুযহির (রহঃ) বলেনঃ অর্থাৎ- একা একা ভ্রমণ করা নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে দু’জন ভ্রমণকারী দু’টো শায়ত্বন। আর যে ব্যক্তি নিষিদ্ধ কাজ করে সে শায়ত্বনের আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি শায়ত্বনের আনুগত্য করে সে যেন নিজেই একটি শায়ত্বন। এজন্যই একা ভ্রমণকারীকে শায়ত্বন বলা হয়েছে।

ইমাম খত্ত্বাবী বলেনঃ একা ভ্রমণকারী ব্যক্তি যদি সফরে মারা যায় তাহলে তার নিকট এমন কোনো ব্যক্তি উপস্থিত পাওয়া যাবে না যে, তাকে গোসল দেয়াবে এবং দাফন করবে। আর তার নিকট এমন ব্যক্তিও পাওয়া যাবে না যার নিকট তার মাল সম্পর্কে ওয়াসিয়্যাত করতে পারে এবং সফরে তার রেখে যাওয়া মাল তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দিতে পারে এবং তার সংবাদ তার পরিবারের নিকট পৌঁছাতে পারে। আর যদি সফরে তিনজন একত্রে থাকে তাহলে পরস্পরে তাদের কাজে সহযোগিতা করতে পারবে এবং জামা‘আত সহকারে সালাত আদায় করতে পারবে এতে করে তারা জামা‘আতে সালাত আদায় করার সাওয়াবও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে। তাইতো তিনজনের কমে সফর করতে নিষেধ করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬০৪; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৭৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...