বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ঘন্টা সম্বলিত হাদীস হচ্ছে নিম্নরূপ।
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺗﺼﺤﺐ ﺍﻟﻤﻼﺋﻜﺔ ﺭﻓﻘﺔ ﻓﻴﻬﺎ ﻛﻠﺐ ﻭﻻ ﺟﺮﺱ
হযরত আবু-হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ ঐ দলের সাথে (রহমতের)ফেরেস্তারা সহযাত্রী হন না, যাদের মধ্যে কুকুর বা ঘন্টা বা তার আওয়াজ রয়েছে।(সহীহ মুসলিম-২১১৩)
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদিসের আলোকে ফেকহী আলোচনার এক পর্যায়ে বলেনঃ
উক্ত হাদীস থেকে নিম্নোক্ত কথাগুলো অনায়াসেই বুঝা যায় যে,কুকুর(পাহারাদার বা শিকারি কুকুর ব্যতীত) বা ঘন্টাকে সফরে সাথে রাখা মাকরুহে তাহরীমি।এবং ফেরেস্তাগণ ঐ সব দলের সহযাত্রী হন না, যাদের সাথে এ দুয়ের যেকোনো একটি থাকে।ফেরেস্তা দ্বারা উদ্দেশ্য হল,রহমত বা ইস্তেগফারের ফেরেস্তা,হেফাযতকারী ফেরেস্তাগণ নয়।এর আলোচনা ইতিপূর্বে হয়েছে,এবং ফেরেস্তাগণ কুকুর থেকে কেন দূরে থাকেন তারও বিশদ আলোচনা হয়েছে।
এখন ঘন্টা বাজনার বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ।
এত্থেকে ফেরেস্তাগণ দূরে থাকার কারণ হল,ঘন্টার আওয়াজ ইহুদিদের নিষিদ্ধ শিংগার আওয়াজ সদৃশ।অথবা তা নিষিদ্ধ তাবিজ সদৃশ।
কেউ কেউ তা অপছন্দ হওয়ার কারণ শ্রুতিকটু আওয়াজ ও উল্লেখ করেছেন।এই ব্যখ্যাকে ঐ হাদীস সমর্থন প্রদান করে যেথায় নবীজী সাঃ ঘন্টাকে শয়তানের বাশী বলে উল্লেখ করেছেন।এই ব্যখ্যা অনুসারেই স্বাভাবিকত ঘন্টাকে মাকরুহে তাহরীমি হিসাবে সাব্যস্ত করা হয়।এবং এটাই আমাদের শাফেয়ী মাযহাবের অভিমত।
ইমাম মালিক সহ অন্যান্যদের মন্তব্য হল ঘন্টার আওয়াজ মাকরুহে তানযিহি।
শামের প্রাচীন উলামায়ে কেরামদের বক্তব্য হল,বড় ঘন্টার আওয়াজ মাকরুহ, ছোট ঘন্টার আওয়াজ মাকরুহ নয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
1265
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولا يَضْرِبْنَ بأرجُلِهِنّ لِيُعْلَمَ ما يُخْفِين من زِينَتِهِنّ
“আর তাদের পা দিয়ে যেন তারা আঘাত না করে যাতে তাদের অলংকারের যা লুকিয়ে আছে তা জানানো যায়।” [সূরা নূর- ৩১]
একদিন মা আয়েশা রা. এর নিকট কোনও এক বালিকা বাজনাদার নূপুর পরে আসলে তিনি তাকে বললেন, “খবরদার! তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না।” অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।” [সুনানে আবু দাউদ হাদিস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদিস : ৫২৩৭]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বালা বা চুরি পরিধান করা জায়েয। তবে আওয়াজ হয়, এমন বালা বা চুরি পরিধান করা জায়েয হবে না। সুতরাং এমন একগুচ্ছ বালা যা সদাসর্দা একটার সাথে অন্যটার ঘর্ষণের ফলে আওয়াজ হয়, তা পরিধান করা জায়েয হবে না। তবে সর্বদা আওয়াজ না হলে বা আওয়াজের পরিমাণ নিতান্তই কম হলে তখন নাজায়েয হবে না।