আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
435 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by
reopened by
কার্টুন দেখা বা বানানো কি জায়েজ আছে?
ছবি এবং ভিডিও সংক্রান্ত সকল মাসায়েল যদি জানান খুবই উপকৃত।
আমি অনেকদিন যাবত মাসালা গুলো জানতে চাচ্ছি তাই দয়া করে একটু তাড়াতাড়ি জানাবেন।

1 Answer

–1 vote
by (597,330 points)

বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-
এই প্রবন্ধটি শায়খুল ইসলাম হযরত আল্লামা তাকী উসমানি (দা.বা.)[تكملة فتح الملهم ]'ফাতহুল মুলহিমের সম্পূরক গ্রন্থ' খন্ড-২,পৃষ্টা-১৫৫তে [مسئلة التصوير في الإسلام ]ইসলামে ফটো-ভাস্ককর্যের বিধান শিরোনামের অধীনে উল্লেখ করেছেন।মাওলানা আব্দুল্লাহ মায়মান এর উর্দু অনুবাদ করেন।মুফতী মুহাম্মদ তৈয়্যেব হোসাইন বাংলা ভাষায় এর ভাষান্তর করেন। www.fatwa.info এর পাঠকবর্গের ব্যাপক ফায়দার প্রতি লক্ষ্য রেখে
কিছু সংযোজনসহ এই প্রবন্ধকে আমি হুবহু উপস্থাপন করছি------
মুফতী ইমদাদুল হক

বিসমিহি তা'আলা
الحمد لله رب العالمين والعاقبة للمتقين والصلوة والسلام على رسوله الكريم ،و على اله و أصحابه أجمعين ،و على من تبعهم بإحسان إلى يوم الدين-
اما بعد!
বর্তমান যুগে সর্বত্রই ফটোর প্রচলন ব্যাপকহারে পরিলক্ষিত হচ্ছে।বক্ষমান প্রবন্ধে এই বিষয়টির ওপর বিস্তারিত আলোচনার অবতারণা করা হচ্ছে।মূল আলোচনার পূর্বে সর্বপ্রথম আমরা ফটোর নিষেধাজ্ঞা সম্ভলিত হাদীসে রাসূলগুলো উল্লেখ করব।এরপরই আমরা এ সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামের অভিমত এবং তাদের মাযহাব কী তার আলোচনা করব।

হাদীসে রাসূলে ফটোর নিষেধাজ্ঞা
যেসব হাদীসে ফটোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে নিম্নে সেইসব হাদীস তুলে ধরা হল।

হাদীস নং এক.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর(রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِنَّ الَّذِينَيَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ "
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানায়, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে,যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দাও।[সহীহ বুখারী-৫৯৫১]

হাদীস নং দুই.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عن عَبْدَ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ القِيَامَةِ المُصَوِّرُونَ»
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানাবে,কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।[সহীহ বুখারী-৫৯৫০]

হাদীস নং তিন.
হযরত আবু যুর'আ (রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، قَالَ: دَخَلْتُ مَعَ أَبِيهُرَيْرَةَ فِي دَارِ مَرْوَانَ فَرَأَى فِيهَا تَصَاوِيرَ، فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: «وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ خَلْقًا كَخَلْقِي؟ فَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً، أَوْ لِيَخْلُقُوا حَبَّةً أَوْ لِيَخْلُقُوا شَعِيرَةً»
একবার আমি হযরত আবু-হুরায়রা (রা.)এর সঙ্গে (খলিফা)মারওয়ানের ঘরে প্রবেশ করলাম।হযরত আবু-হুরায়রা (রা.)মারওয়ানের ঘরে বেশকিছু ফটো দেখতে পেয়ে বললেন,আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ
কে বলতে শুনেছি,তিনি বলেন,আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন,ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় জালিম কে,যে আমার সৃষ্টিতুল্য সৃষ্ট? সুতরাং তার উচিৎ সে যেন অনু সৃষ্টি করে দেখায় এবং শস্যদানা সৃষ্টি করে দেখায় এবং যব সৃষ্টি করে দেখায়।
[সহীহ মুসলিম-২১১১]

হাদীস নং চার.
হযরত আবু তালহা (রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন
عَنْ أَبِي طَلْحَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَاتَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا صُورَةٌ»
আমি রাসূলে কারীম ﷺ কে বলতে শুনেছি: 'ওই ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না,যে ঘরে কুকুর এবং ফটো রয়েছে।'[ সহীহ মুসলিম-২১০৬]


হাদীস নং পাচঁ.
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ تَمَاثِيلُ أَوْ تَصَاوِيرُ»
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 'ফেরেশতারা ওই ঘরে প্রবেশ করে না,যাতে ফটো বা প্রতিমা স্থাপিত রয়েছে'[সহীহ মুসলিম-২১১২]


হাদীস নং ছয়.
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عنﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : ( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ
আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি,তিনি বলেছেন,যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন প্রাণীর ছবি অঙ্কন করবে,কিয়ামত দিবসে উক্ত অঙ্কিত প্রাণীর ভিতর রূহ প্রদানের দায়িত্ব তাকে দেয়া হবে।কিন্তু কস্মিনকালেও তা তার জন্য সম্ভবপর হবে না।
{সহীহ বুখারী-৫৬১৮}

হাদীস নং সাত.


হযরত সাঈদ ইবনে আবিল হাসান রাহ, থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ، ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰَ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻧَﺒُّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - . ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮﻝُ : " ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ، ﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴﺎً ، ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ . " ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﺑِﻪِ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ .
ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2225 ) ، ﻭﻣﺴﻠﻢ ﻭﺍﺍﻟﻔﻆ ﻟﻪ
জনৈক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.) এর নিকট এসে বলল, আমি এসব ছবি অঙ্কন করে থাকি; তাই এ ব্যাপারে আপনি আমাকে ফাতাওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে এসো। সে তার নিকটে এলে তিনি বললেন, (আরও) নিকটে এসো। সে (আরও) নিকটে এলো। পরিশেষে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যা শুনেছি, তাই তোমাকে বলব। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি - প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তার তৈরিকৃত প্রতিটি ছবিতে জীবন দেয়া হবে, সে সময় জাহান্নামে তাকে ঐগুলো আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই যদি (তা) করতে হয়, তাহলে গাছ (পালা) এবং প্রাণহীন বস্তুর (ছবি) প্রস্তুত করো।
[ইমাম মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস পড়ে শুনালে] নাসর ইবনু আলী (রহঃ) তার অনুমতি দিলেন।
সহীহ বুখারী-[২২২৫]সহীহ মুসলিম [৫৪৩৩]


হাদীস নং আট.
হযরত জুহাইফা (রা.)বর্ণনা করেন,
عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ: أَنَّهُ اشْتَرَى غُلاَمًا حَجَّامًا، فَقَالَ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ ثَمَنِ الدَّمِ، وَثَمَنِ الكَلْبِ، وَكَسْبِ البَغِيِّ، وَلَعَنَ آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ، وَالوَاشِمَةَ وَالمُسْتَوْشِمَةَ وَالمُصَوِّرَ»
রাসূলে কারীম ﷺ রক্তের মূল্য নেয়া এবং কুকুরের মূল্য নেয়া এবং অপকর্মকারিণীর উপার্জন থেকে নিষেধ করেছেন।তিনি সুদ নেয়া এবং সুদ দেয়া এবং ফটো নির্মাতাদের ওপর লানত বর্ষণ করেছেন।[সহীহ বুখারী-৫৯৬২]

হাদীস নং নয়.
হযরত আ'য়েশা (রা.) বর্ণনা করেন,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي البَيْتِ قِرَامٌ فِيهِ صُوَرٌ، فَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ ثُمَّ تَنَاوَلَ السِّتْرَ فَهَتَكَهُ، وَقَالَتْ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ أَشَدِّالنَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ القِيَامَةِ الَّذِينَ يُصَوِّرُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ»
'রাসূলে কারীম ﷺ সবে সফর সেরে এসেছেন।ইতিপূর্বে আমি বাতির উপরে ফটোযুক্ত হালকা পর্দা সেট করে নিয়ে ছিলাম।রাসূল ﷺ এটি দেখার পর তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং ইরশাদ করলেন: রোজ কিয়ামতে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি ওইসব ব্যক্তির হবে,যারা আল্লাহর সৃষ্টি কার্যক্রমে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে।এরপর হযরত আয়েশা (রা.)বলেন,আমি ওই পর্দাটি কেটে এক বা দুইটি বালিশ বানিয়ে নেই।'[সহীহ বুখারী-৬১০৯]


হাদীস নং দশ.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)বলেন,
عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: " وَعَدَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جِبْرِيلُ، فَرَاثَ عَلَيْهِ، حَتَّى اشْتَدَّ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَقِيَهُ، فَشَكَا إِلَيْهِ مَا وَجَدَ، فَقَالَ لَهُ: إِنَّا لاَنَدْخُلُ بَيْتًا فِيهِ صُورَةٌ وَلاَ كَلْبٌ "
'একদা হযরত জিব্রাঈল(আ.)রাসূলে কারীম ﷺ এর সঙ্গে (নির্দিষ্ট সময়ে সাক্ষাতের) অঙ্গীকার করে গেলেন।কিন্তু যথাসময়ে আগমনে হযরত জিব্রাঈল বিলম্ব হল।বিষয়টি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে বেশ পীড়াদায়ক মনে হল।(বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর)তিনি ঘর থেকে বের হলেন।বের হয়েই তিনি হযরত জিব্রাঈল (আ.)এর সাক্ষাত পেলেন।অপেক্ষার কারণে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যে কষ্ট হয় হযরত জিব্রাঈল (আ.)এর নিটক তিনি সেই অভিযোগ করলেন। হযরত জিব্রাঈল(আ.) বললেন,আমি এমন ঘরে প্রবেশ করি না, যেখানে ফটো বা কুকুর থাকে' [সহীহ বুখারী-৫৯৬০]

হাদীস নং এগার.
হযরত জাবের (রা.)থেকে বর্ণিত
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصُّورَةِ فِي البَيْتِ، وَنَهَىعَنْ أَنْ يُصْنَعَ ذَلِكَ.
'রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘরে ফটো রাখতে এবং ছবি বানাতে নিষেধ করেছেন।' [সুনানে তিরমিযি-১৭৪৯]


হাদীস নং বার.
আবুল হাইয়্যাজ আসাদী(রাহ.)বলেন,
عَنْ أَبِي الْهَيَّاجِ الْأَسَدِيِّ، قَالَ: قَالَ لِي عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ: أَلَا أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ «أَنْ لَا تَدَعَ تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَهُ وَلَا قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّاسَوَّيْتَهُ»
আমাকে হযরত আলী(রা.)বলেন,আমি কি তোমাকে এমন কাজের প্রতি উৎসাহিত করব না,যা করার জন্য আমাকে রাসূল ﷺ উৎসাহিত করেছেন? আর তা হল,ফটো না মিটিয়ে তা হাত ছাড়া করবে না,এবং উঁচু কবরকে সমতল না করে ছাড়বে না।[সহীহ মুসলিম-৯৬৯]

হাদীস নং তের.
হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত ,রাসূলে কারীম ﷺ ইরশাদ করেছেন যে,
ﻭﻓﻲ ﻣﺴﻨﺪ ﺃﺣﻤﺪ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺚ ﻋﻠﻲ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﺃﻥ ﺟﺒﺮﻳﻞ ﻗﺎﻝ ﻟﻠﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺇﻧﻬﺎ ﺛﻼﺙ , ﻟﻦ ﻳﻠﺞ ﻋﻠﻴﻚ ﻣﻠﻚ ﻣﺎ ﺩﺍﻡ ﻓﻴﻬﺎ ﻭﺍﺣﺪ ﻣﻨﻬﺎ : ﻛﻠﺐ , ﺃﻭ ﺟﻨﺎﺑﺔ , ﺃﻭ ﺻﻮﺭﺓ ﺭﻭﺡ . ﺍﻫـ
হযরত জিব্রাঈল বলেছেন,তিনটি জিনিষ এমন আছে,যতক্ষণ পর্যন্ত তা কোনো স্থানে থাকে, সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।(এক)কুকুর,(দুই) নাপাক ব্যক্তি(তিন) জীবের ফটো।
[মুসনাদে আহমদ-সূত্র ফাতহুল বারী:১৭/২৭৯]
হাদীস নং চৌদ্দ.
হযরত আ'য়েশা (রা.)বর্ণনা করেন,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: لَمَّا اشْتَكَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَتْ بَعْضُ نِسَائِهِ كَنِيسَةً رَأَيْنَهَا بِأَرْضِ الحَبَشَةِ يُقَالُ لَهَا: مَارِيَةُ، وَكَانَتْ أُمُّ سَلَمَةَ، وَأُمّ حَبِيبَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَتَتَا [ص: ٩١] أَرْضَ الحَبَشَةِ، فَذَكَرَتَا مِنْ حُسْنِهَا وَتَصَاوِيرَ فِيهَا، فَرَفَعَ رَأْسَهُ، فَقَالَ: «أُولَئِكِ إِذَا مَاتَ مِنْهُمُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ بَنَوْا عَلَى قَبْرِهِ مَسْجِدًا، ثُمَّ صَوَّرُوا فِيهِ تِلْكَ الصُّورَةَ أُولَئِكِ شِرَارُ الخَلْقِ عِنْدَ اللَّهِ»
যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ অসুস্থ হয়ে পড়লেন,তখন কোনো কোনো স্ত্রীগণ খ্রিস্টানদের [كنيسة] উপাশনালয়[مارية] 'মারিয়া' সম্পর্কে আলোচনা করলেন।হযরত উম্মে সালমা (রা.) এবং হযরত উম্মে হাবীবা (রা.) উভয়ে ছিলেন(জন্মসূত্রে) হাবশা অধিবাসী। এজন্য তাঁরা খ্রিস্টানদের উপাশনালয়ের সৌন্দর্য এবং তার ভেতরে স্থপিত ফটোর বিষয়টিও আলোচনায় টেনে আনলেন।(এই অবস্থায়)রাসূলে কারীম ﷺ নিজের শির মোবারক উঁচু করে বললেন,এরা তো ওই সম্প্রদায়ভুক্ত, যারা নিজেদের কোনো ভালো মানুষ মারা গেলে তার কবরের উপর মসজিদ নির্মান করে দেয়,অতঃপর মসজিদের ভেতর ফটো টানিয়ে দেয়।আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির মধ্যে এরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট, অধম।[সহীহ বুখারী-১৩৪১]


উল্লিখিত সবগুলো হাদীসই [مرفوع ]'মারফূ'। সবকটি থেকেই এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেল যে,ফটো নিষেধ।এক্ষেত্রে হুকুমের কোনো তারতম্য নেই যে,ছবিটি কি ভাস্কর্য(দেহ বিশিষ্ট), না কাপড়, কাগজ, প্লাস্টিক বা অন্য যে কোনো উপায়ে প্রস্তুতকৃত?অর্থাৎ সবধরনের ছবি ভাস্কর্যের ক্ষেত্রেই শরীয়তের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...