আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ আপনি কেমন আছেন?
প্রশ্ন (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্যায় ভাবে অপমান কিংবা তাকে গালিগালাজ করে সেই ক্ষেত্রে জুলুম ব্যক্তি কেসাস এর বিধান হিসেবে তাকেও কি গালিগালজ কিংবা অপমান করতে পারবে কি?কেসাস এর বিধান কি শুধু  হত্যা এবং আঘাতের জন্য?
প্রশ্ন (২) ছবি তোলা বর্তমানে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তোলা হারাম। তাহলে কি এমন পদ্ধতি থাকতে পারে যেটাতে আমরা  পরিবর্তন আনতে পারি দেশ ও জাতির জন্য। বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে ছবি তোলার প্রয়োজন হয়। যেখানে পর পুরুষ দেখলে গুনাহ হয় সে ক্ষেত্রে কোন উপায় না থাকলে বিশেষ প্রয়োজনে আল্লাহ মাফ করে দেন কিন্তু গুনাহ না করে, কী পদ্ধতি ইসলামে থাকতে পারে যেটা মানুষ কেন অবলম্বন করে না। আর ইসলামে সেই পদ্ধতি থাকবে না কেন? অবশ্যই আছে কিন্তু মানুষ সেটা উদঘাটন করছে না কেন?


প্রশ্ন (৩) একটা অফিসে একজন মহিলাকে চুরির দায় সাব্যস্ত করা হয়েছে কিন্তু কোন প্রমাণ নেই, চুরির কোন প্রমাণ সাপেক্ষ কোন সাক্ষী নেই, এমত অবস্থায় মহিলাটাকে কর্তৃপক্ষ চাকরি থেকে তাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে ইসলামিক শরীয়ার বিধান কি?
প্রশ্ন (৩) আমরা অনেক সময় দেখি ছোট পশুপাখি প্রাণী যেমন ঘুগুর বাচ্চা, কবুতরের বাচ্চা, মুরগি ইত্যাদি জন্ম হওয়ার ২-১ সপ্তাহের মধ্যেই বিভিন্ন রোগে মারা যায় খুব কষ্টে, এত ছোট প্রাণী তারা তো অন্য কোন পশুর প্রাণীর গায়ে আঘাতও করেনি যে তার শাস্তি হিসেবে আল্লাহ তাদের শাস্তি দিচ্ছেন তাহলে আল্লাহ তায়ালা কেন এমনটি করেন এর হাকিকত কি একটু বুঝিয়ে বলবেন?
আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

0 votes
by (567,240 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মাযলুম যালিমের কাছ থেকে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত প্রতিশোধগ্রহণ করতে পারবে বা প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকতে পারবে এতে তার কোন প্রকার গুনাহ হবেনা।এ সম্পর্কে আরোও শুনুন আল্লাহর তা'আলার বাণী.....

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺻَﺎﺑَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺒَﻐْﻲُ ﻫُﻢْ ﻳَﻨﺘَﺼِﺮُﻭﻥَ

যারা আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।(৪২সূরা আশ শূরা-৩৯)

ﻭَﺟَﺰَﺍﺀ ﺳَﻴِّﺌَﺔٍ ﺳَﻴِّﺌَﺔٌ ﻣِّﺜْﻠُﻬَﺎ ﻓَﻤَﻦْ ﻋَﻔَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠَﺢَ ﻓَﺄَﺟْﺮُﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ

আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই।(৪২/৪০)

ﻭَﻟَﻤَﻦِ ﺍﻧْﺘَﺼَﺮَ ﺑَﻌْﺪَ ﻇُﻠْﻤِﻪِ ﻓَﺄُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﺳَﺒِﻴْﻞٍ ، ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞُ ﻋَﻠَﻰْ ﺍﻟّﺬِﻳْﻦَ ﻳَﻈْﻠِﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻭَﻳَﺒْﻐُﻮﻥَ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟْﺤَﻖّ ، ﺃُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ

নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(৪২/৪১-৪২)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যদি কোন ব্যাক্তি অন্যায় ভাবে কাউকে অপমান কিংবা তাকে গালিগালাজ করে সেক্ষেত্রে মাজলুম ব্যাক্তি তাকে সীমালঙ্ঘন ব্যাতিত অপমান করতে পারবে। এতে তার গুনাহ হবেনা।
তবে সীমালঙ্ঘন করা জায়েজ হবেনা।

উল্লেখ্য, গালিগালাজ করা যেহেতু জায়েজ নেই,সুতরাং এমতাবস্থায় মাজলুম ব্যাক্তি গালি-গালাজ করতে পারবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ، وَقِتَالُهُ كُفْرٌ


হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনমুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী। আর তাকে হত্যা করা কুফরী। {বুখারীহাদীস নং-৬০৪৪]

 

অন্য এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ ". تَابَعَهُ شُعْبَةُ عَنِ الأَعْمَشِ.

 

‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবেতা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে২. কথা বললে মিথ্যা বলে৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করেএবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি করে। বুখারীহাদীস নং- ৩৪


(০২)
মূলত ধোকা,ফাকিবাজি,অন্যায়,  ইত্যাদি থেকে বাঁচার লক্ষ্যেই এসব ছবি নেয়া হয়। 

আর ইসলামে ধোকা,ফাকিবাজি,অন্যায়,  ইত্যাদি সবই নাজায়েজ।
সুতরাং ইসলামের ব্যবস্থা এমনই ছিলো যে ধোকা,ফাকিবাজি,অন্যায়, ইত্যাদি কোনোক্রমেই করবেনা,সুতরাং ছবি নেয়ারও প্রয়োজন হবেনা।

(০৩)
আল্লাহ তায়ালাই এর হাকীকত সম্পর্কে জানেন। আল্লাহ যা করছেন,তাহা মাথা পেতে মেনে নেয়াই মুমিন বান্দার কর্তব্য।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...