জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। আর প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা, কম্পিউটার ও মোবাইলে সংরক্ষিত ছবিও ‘নিষিদ্ধ ছবি’র অন্তর্ভুক্ত বিধায় এটিও হারাম।
হযরত সাঈদ ইবনে আবিল হাসান রাহ, থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ، ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰَ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻧَﺒُّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - . ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮﻝُ : " ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ، ﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴﺎً ، ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ . " ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﺑِﻪِ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ .
ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2225 ) ، ﻭﻣﺴﻠﻢ ﻭﺍﺍﻟﻔﻆ ﻟﻪ
জনৈক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.) এর নিকট এসে বলল, আমি এসব ছবি অঙ্কন করে থাকি; তাই এ ব্যাপারে আপনি আমাকে ফাতাওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে এসো। সে তার নিকটে এলে তিনি বললেন, (আরও) নিকটে এসো। সে (আরও) নিকটে এলো। পরিশেষে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যা শুনেছি, তাই তোমাকে বলব। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি - প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তার তৈরিকৃত প্রতিটি ছবিতে জীবন দেয়া হবে, সে সময় জাহান্নামে তাকে ঐগুলো আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই যদি (তা) করতে হয়, তাহলে গাছ (পালা) এবং প্রাণহীন বস্তুর (ছবি) প্রস্তুত করো।
[ইমাম মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস পড়ে শুনালে] নাসর ইবনু আলী (রহঃ) তার অনুমতি দিলেন।
সহীহ বুখারী-[২২২৫]সহীহ মুসলিম [৫৪৩৩]
,
আরো জানুনঃ
ছবি সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সব ইমাম ও ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও সমকালীন মুফতিদের মতে হারাম।
তবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট তৈরি বা এজাতীয় বিশেষ প্রয়োজনে ফটো তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা যায়। (ফিকহি মাকালাত; তকি উসমানী : ৪/১২৩)
অহেতুক ছবি তোলা জায়েজ নয়। কিন্তু বাধ্য হলে জায়েজ আছে।
قَاعِدَة الضرورات تبيح الْمَحْظُورَات
তীব্র প্রয়োজন হারামকে হালাল করে দেয়। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭০]
قَاعِدَة الضرورات تقدر بِقَدرِهَا
জরুরত তার সীমায় সীমিত থাকবে। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭১]
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত যেহেতু শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে সেই রকমের জরুরতের আওতায় পড়েনা,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত কারনে স্ত্রীর ছবি তোলা জায়েজ নেই।
স্বামী বা স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে কিছুতেই চার মাসের বেশি সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকার অনুমতি ইসলাম প্রদান করে না।
আর মোবাইলে অশ্লীল ছবি দেখা কোন সমাধান নয়। বরং এর দ্বারা অন্তর কলুষিত হয়। অন্তর মরে যায়।
স্ত্রীর সর্বাঙ্গ সরাসরি দেখা জায়েজ আছে। যদিও গোপনাঙ্গের দিকে সরাসরি তাকানো উচিত নয়। এতে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
অপ্রয়োজনে ছবি তুলা যেহেতু হারাম। আর উলঙ্গ ছবি সেতো আরো মারাত্মক গোনাহের কাজ।
তাই এহেন দৃষ্টিকটূ ও অপছন্দনীয় কাজগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
,
★ইসলামী স্কলাররা বলেছেন যে ইন্টারনেটে চ্যাটিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্ত্রীর সাথে কথা বলে অথবা তাকে দেখে বা তার ছবি দেখে তৃপ্ত হওয়া জায়েয।
তবে সাবধান থাকতে হবে অন্য কেউ যেন স্বামী-স্ত্রীর আলাপচারিতা শুনতে না পায়, অথবা গোয়েন্দাগিরি না করে।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি স্ত্রীর পার্সোনাল ছবি রাখতে পারবেননা।
কারন এই উদ্দেশ্যে ছবি তোলা জায়েজ নেই।
,
তবে যেহেতু কিছু উলামায়ে কেরামগন প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত মোবাইলে রাখা ছবির ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন,তাই মোবাইলে সেসব ছবি অন্যকে না দেখানোর শর্তে জায়েজ আছে।
তবে কোনোভাবেই হস্তমৈথুন করা জায়েজ হবেনা।
,
ভিডিও দেখা যেহেতু নাজায়েজ, তাই আপনি সরাসরি আপনার স্ত্রীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলবেন।
,
কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে যেহেতু যেই জিনিস সরাসরি দেখা জায়েজ, সেটি ভিডিওতেও দেখা জায়েজ, সেই হিসেবে আপনি আপনার স্ত্রীর ভিডিও মোবাইলে অন্যকে না দেখানো,না শোনানোর শর্তে রাখা জায়েজ আছে।
তবে কোনোভাবেই হস্তমৈথুন করা জায়েজ হবেনা।
,
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোডের বিধান জানুনঃ
ভিডিও দেখা নিয়ে বিস্তারিত জানুনঃ
,
★তবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন যেহেতু মুমিন মুত্তাকীদের জন্য অপরিহার্য বিষয়, তাই এক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ সতর্কতা হচ্ছে, আপনি সরাসরি ভিডিও কলেই কথা বলবেন।
মোবাইলেও কোনো ছবি/ভিডিও রাখবেননা।