আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
closed by
আসসালামু 'আলাইকুম,
১) মেয়েরা তো আওরাহ! গোপনীয় বস্তু। নিজেদেরকে আবৃত রাখার ব্যাপারটি তো অফলাইন এবং অনলাইন উভয়ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়ার কথা।  অফলাইনের পাশপাশি  অনলাইনেও তো নিজেদের জাহির করা থেকে বিরত থাকা উত্তম নয় কি?

২) ফেসবুক গ্রুপ পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয়ই হতে পারে। আর গ্রুপে নন-মাহরামও থাকতে পারে। তো এসব পাবলিক গ্রুপে হাজারো নন-মাহরামের সামনে মেয়েদের অনর্থক(হোক ইসলামিক) পোষ্ট করা কতটুকু জায়েজ বা কতটুকু উত্তম?

৩) প্রাণির অবয়ব,হারাম বিষয়াবলী ব্যতীত গ্রাফিক ডিজাইন(img) করা তো নিঃসন্দেহে জায়েজ। কিন্তু ডিজাইনে নিজের ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপাব্লিটি,নিজের মনন,দক্ষতা, সুক্ষ্মতা ফুটে ওঠে বেশ ভালোভাবে। এরকম সুন্দর সুন্দর ডিজাইন প্রতিনিয়ত করে করে তা পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোষ্ট করা কতটুকু জায়েজের কিংবা জরুরতের (শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে) পর্যায়ে পড়ে?
বরং কোনো নন-মাহরাম মেয়েদের এরকম সুন্দর সুন্দর ডিজাইন সম্বলিত পোষ্ট দেখে ছেলেরা আকৃষ্ট হয়, তাতে রিঅ্যাক্ট করে!!! সুন্দর ডিজাইনে আকৃষ্ট অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয়। প্লাস, ছেলেরা ওই ডিজাইন পোষ্টে রিঅ্যাক্টও দেয়। ওভারঅল, বিষয়টি ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন?

৪) আর কোনো কর্তৃপক্ষ ডিজাইন কোর্স করায়া সেগুলো তাদের নিজেদের প্রচারের জন্য এরকম পাবলিক গ্রুপে(মিক্সিং গ্রুপ) শেয়ার করার নিয়ম/রুলস করলে সেটা কতটুকু জরুরত? কতটুকু জায়েজ? (যে কোর্স যারা করবে, তারা ডিজাইন করে করে তা ফেসবুক গ্রুপে পোষ্ট করতে হবে তাদের বিজনলস পেইজ মেনশন দিয়ে দিয়ে)

বরং গ্রুপগুলো ছেলে-মেয়ে পৃথক করতে পারত, এবং গ্রুপগুলো "প্রাইভেট" হতে পারত! তাহলে মাহরাম/নন-মাহরাম ফিতনা ৯৮-৯৯% এড়ানো যেত। কিন্তু কোর্স কর্তৃপক্ষ তাদের ফেসবুক পেইজের বা বিজনেসের প্রচার-প্রসারের জন্যই মুলত "পাবলিক" গ্রুপে ডিজাইন পোষ্ট করার নিয়ম চালু করেছে এবং ওই ডিজাইন পোষ্ট করা সকলকে তাদের(কর্তৃপক্ষের) বিজনেস পেইজ মেনশন দিতে হয় যাতে তাদের পেইজের প্রচার প্রসার বাড়ে! কিন্তু এগুলা প্রাইভেট গ্রুপ হলে ফিতনার সম্ভাবনা থাকত না মোটেও।  শিক্ষার্থী মুল্যায়নের জন্য পাবলিক গ্রুপে তো ডিজাইন পোষ্ট করার কোনো দরকার পড়ে না।সেটা প্রটেক্টেড/গোপনীয় অবস্থায়ই করার হাজারো উপায় আছে।

৫) আর মেয়েদের নিজেদের মধ্যের (মাঝে মাঝে অযাচিত আলাপচারিতা) আলাপচারিতা সেটা পাবলিক কোনো ফেসবুক গ্রুপের কমেন্টে  করাটা তো নিষ্প্রয়োজন। প্লাস মেয়েদের নিজেদের কথা-বার্তা তো ইনবক্সে কিংবা মেয়েদের নিজেদের প্রাইভেট গ্রুপে থাকলে করা যায়। পাবলিক গ্রুপে মেয়েরা-মেয়েরা কমেন্ট করা, হাসি মশকরা করা বা জেনারেল কথা বলারও তো  দরকার নেই। বরং এগুলো দিয়েও ফিতনার সূত্রপাত হয় অনেকসময়। এমনও জানি যে, কমেন্টে মেয়েদের আইডি পেয়ে ওই মেয়ের সাথে ইনবক্সে কথা বলা,ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠানো, রিলেশনশীপে জড়ানো কিংবা টীজ করার ঘটনাও হয়েছে!
সো এগুলো তো অনর্থক, তাই না? (সুরা মু'মিনুন ০৪) দয়া করে জানাবেন
closed
by (32 points)
Please answer

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/93211 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ফেসবুক সহ যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের বিধানঃ-

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।

দ্বীনী বা বৈধ কোন জরুরী বিষয় থাকলে পর্দার আড়ালে থেকে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম।

★সুতরাং নারী পুরুষ যেই ফেসবুক চালাবে,সে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে ফ্রেন্ড বানাবেনা।
বিপরীত লিঙ্গের কাহারো সাথে চ্যাটিং করবেনা।

সোশ্যাল মিডিয়া একমাত্র দ্বীনি প্রয়োজন এবং খবর প্রদান-প্রদানের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। টাইমপাস বা উপভোগ বা ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা যাবে না। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার পূর্বে হারাম ও নাজায়েয জিনিষ থেকে বাঁচার উপায়গুলো জানতে হবে। এটা ওয়াজিব পর্যায়ের বিধান। সুতরাং কেউ যদি নাজায়েয ও হারাম থেকে বাঁচার উপায়গুলো জানতে না পারে ,তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার জায়েয হবে না।হারাম থেকে বাঁচার উপায়গুলো না জেনে কেউ হঠাৎ যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত হয়, এবং হারামে লিপ্ত হয়, তাহলে এই হারামের গোনাহ তার অবশ্যই হবে।

আরো জানুনঃ- 

সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন গোনাহের অসংখ্য রাস্তা খোলা রয়েছে, তেমনি নেকী অর্জনের মাধ্যম হিসেবে তা ব্যবহার করার সুযোগও আছে। তবে কেউ যদি ফেসবুকের মাধ্যমে গোনাহের মধ্যে নিপতিত হয় তাহলে তার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করা জায়েয নেই।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
হ্যাঁ, বিরত থাকা উত্তম।

(০২)
নন মাহরাম আছে,এমন গ্রুপে এভাবে অনার্থক বিষয় পোস্ট করা উচিত নয়।

এতে অনেকক্ষেত্রে ফিতনার দ্বার খুলে যায়।

তবে বৈধ বিষয়ক লেখা হলে ফিতনার আশংকা না থাকলে সেটি নাজায়েজ হবেনা।

(০৩)
এগুলো কোনোক্রমেই জরুরতের (শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে) পর্যায়ে পড়েনা।
এগুলো অনার্থক কাজের শামিল।

তবে কোনো দিক হতেই ফিতনার আশংকা না থাকলে এধরণের ডিজাইন পোস্ট করাকে নাজায়েজ বলা যায়না।

(০৪)
এগুলো কোনোক্রমেই জরুরতের (শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে) পর্যায়ে পড়েনা।

(০৫)
হ্যাঁ, এগুলো অনর্থক।
ফিতনার আশংকা থাকলে নাজায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...