বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তিন অবস্থায় মিথ্যা বলা জায়েয।
যেমনঃ-হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ রাঃ থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺳْﻤَﺎﺀَ ﺑِﻨْﺖِ ﻳَﺰِﻳﺪَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﺛَﻠَﺎﺙٍ : ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻟِﻴُﺮْﺿِﻴَﻬَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮْﺏِ ، ﻭَﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﻟِﻴُﺼْﻠِﺢَ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ)
তরজমাঃ
নবীজী সাঃ বলেনঃ
তিনস্থান ব্যতীত অন্য কোথাও মিথ্যা বলা জায়েয নয়,
১/স্ত্রীর সাথে ভালবাসার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে।
২/যুদ্ধের ময়দানে কাফিরের সাথে যুদ্ধ বিষয়ে।
৩/দু-ভাইয়ের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করতে।
তিরমিযি-১৯৩৯,আবু-দাউদ-৪৯২১।
উম্মে কুলছুম রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,
ﻋﻦ ﺃُﻡَّ ﻛُﻠْﺜُﻮﻡٍ ﺑِﻨْﺖِ ﻋُﻘْﺒَﺔَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻌَﻴْﻂٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ، ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺳَﻤِﻌَﺖْ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ( ﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟْﻜَﺬَّﺍﺏُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺼْﻠِﺢُ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻭَﻳَﻨْﻤِﻲ ﺧَﻴْﺮًﺍ ) . ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺷِﻬَﺎﺏٍ : ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﺳْﻤَﻊْ ﻳُﺮَﺧَّﺺُ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ ﻣِﻤَّﺎ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻛَﺬِﺏٌ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﺛَﻠَﺎﺙٍ : ﺍﻟْﺤَﺮْﺏُ ، ﻭَﺍﻟْﺈِﺻْﻠَﺎﺡُ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻭَﺣَﺪِﻳﺚُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻭَﺣَﺪِﻳﺚُ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓِ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-যে ব্যক্তি দু'জনের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসার স্বার্থে মিথ্যা বলে সে মিথ্যুক নয়।সে একজনের নিকট এসে উত্তম উত্তম জিনিষ বলে,এবং অন্যর নিকট গিয়ে উত্তম জিনিষ পৌছায়। ইবনে শিহাব যুহরী রাহ বলেন,মানুষের মিথ্যা কথা বলার ব্যাপারে তিন জিনিষে রুখসত রয়েছে,(১)যুদ্ধের সময়ে(২) দু'জনের মধ্যে মীমাংসা করতে,(৩) স্বামী-স্ত্রী পরস্পর ভালবাসা-মহব্বতকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে।(সহীহ মুসলিম-২০৫৬)
ইমাম নববী রাহ শরহে মুসলিম 'আল-মিনহাজ' কিতাবে বলেন,
" ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻛَﺬِﺑﻪ ﻟِﺰَﻭْﺟَﺘِﻪِ ﻭَﻛَﺬِﺑﻬَﺎ ﻟَﻪُ : ﻓَﺎﻟْﻤُﺮَﺍﺩ ﺑِﻪِ ﻓِﻲ ﺇِﻇْﻬَﺎﺭ ﺍﻟْﻮُﺩّ ، ﻭَﺍﻟْﻮَﻋْﺪ ﺑِﻤَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﻠْﺰَﻡ ، ﻭَﻧَﺤْﻮ ﺫَﻟِﻚَ ؛ ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺨَﺎﺩَﻋَﺔ ﻓِﻲ ﻣَﻨْﻊ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ , ﺃَﻭْ ﺃَﺧْﺬ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻟَﻪُ ﺃَﻭْ ﻟَﻬَﺎ : ﻓَﻬُﻮَ ﺣَﺮَﺍﻡ ﺑِﺈِﺟْﻤَﺎﻉِ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ . ﻭَﺍَﻟﻠَّﻪ ﺃَﻋْﻠَﻢ "
ভাবার্থঃস্বামী-স্ত্রী পরস্পর মিথ্যা বলা দ্বারা উদ্দেশ্য হল,ভালবাসা প্রকাশের মধ্যে এবং ঐ সমস্ত প্রতিজ্ঞার ক্ষেত্রে যা পূর্ণ করা অত্যাবশ্যকীয় হয় না।তবে মিথ্যা বলার মাধ্যমে কাউকে ধোকা দেওয়া অথবা কারো মাল ছিনিয়ে নেয়া সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।(শরহে মুসলিম-নববী-১৬/১৪৮)
কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম মিথ্যা বলাকে হাদীসে বর্ণিত তিনটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন।কিন্ত বিদগ্ধ গবেষক উলামায়ে কেরাম ঐ সমস্ত বিষয়ের মধ্যেও অনুমিত প্রদান করেছেন যেথায় অন্যর ক্ষতি ব্যতীত নিজের মঙ্গল নিহিত রয়েছে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপযোক্ত কারণ ব্যতীত মিথ্যা বললে গোনাহ হবে।তবে ক্রয়কৃত জিনিষ হারাম হবে না।কেননা মূল্য পরাশোধ করা হচ্ছে।