ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে তালাক হয় না। কারণ ইনশাআল্লাহ মানে হলো, আল্লাহ যদি চান। আর আল্লাহর ইচ্ছা সম্পর্কে কেউ অবগত নয়। তাই তালাক হবে না।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عن إبراهيم قال: إذا حلف الرجل، فقال: إن لم يفعل كذا وكذا فامرأته طالق إن شاء الله فحنث، لم تطلق امرأته
‘ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি কসম করে যে, সে অমুক কাজ না করলে ইনশাআল্লাহ তার স্ত্রী তালাক। এরপর সে যদি কসম ভঙ্গ করে তাহলে তার স্ত্রী তালাক হবে না।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১১৩২৭]
,
তালাকের সাথে ইনশাআল্লাহ বললে তালাককে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার সাথে শর্তযুক্ত করা হয়। তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দেওয়ার অর্থ হল আল্লাহ যদি চান তাহলে স্ত্রী তালাক। এই শর্তটি পাওয়া যাওয়ার বিষয়ে যেহেতু নিশ্চিত হওয়া যায় না তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে তালাক কার্যকর হয় না।
ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. তার কিতাবুল আছারে ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, কোনো ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে ইনশাআল্লাহ তুমি তিন তালাক। তার এ কথার দ্বারা স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হবে না। -কিতাবুল আছার ৫১১
তালাক বলার সাথে সাথে যদি “সুবহানাল্লাহ” ও “মাশাআল্লাহ” বলা হয়ে থাকে, তাহলে কোন তালাক পতিত হয়নি।
আর যদি কিছুক্ষণ পর বলা হয়ে থাকে, তাহলে তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে।
وَلَوْ قَالَ: أَنْتِ طَالِقٌ مَا شَاءَ اللَّهُ كَانَ وَكَذَا لَوْ قَالَ: أَنْتِ طَالِقٌ إلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ لَا يَقَعُ شَيْءٌ كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الْفَصْلُ الرَّابِعُ فِي الِاسْتِثْنَاءِ فِي الطَّلَاق-1/454)
ومن الاستثناء: أنت طالق لولا أبوك، أو لولا حسنك، أو لولا أني أحبك لم يقع خانية، ومنه: سبحان الله ذكره ابن الهمام في فتواه (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الطلاق، باب التعليق-4/630
সারমর্মঃ
সুবহানাল্লাহ,মাশাআল্লাহ এগুলো ইস্তেছনার শব্দ।
এতে তালাক হয়না।
,
তালাকের সাথে মাশাআল্লাহ যুক্ত করে বলার কারণে তালাক পতিত হবে না। কারণ, মাশাআল্লাহ মানে হল, আল্লাহ তাআলা যা ইচ্ছা করেছেন। আর আল্লাহর ইচ্ছা সম্পর্কে আমরা কেউই অবগত নই।
,
তালাকের সাথে সুবহানাল্লাহ যুক্ত করে তালাক দিলে তালাক পতিত হয় না। কিন্তু আগে যদি তালাক দেয় তারপর কিছুটা বিরতি নিয়ে সুবহানাল্লাহ বলে তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
সুতরাং উক্ত ব্যক্তি যদি তালাকের সাথে সুবহানাল্লাহ যুক্ত করে বলে থাকে তাহলে তার তালাক পতিত হবে না। আর যদি কিছূটা বিরতি দিয়ে বলে থাকে তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১১৩২৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৬৩০।