আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
১।কেউ রোগাক্রান্ত হওয়ার পিছনে যদি নিজেই দায়ী থাকে যেমন: দাতের জন্য ক্ষতিকর এমন জিনিস খেয়ে দাতের সমস্যায় ভোগা। তার ওই কষ্টের জন্য কি তার গুনাহ মাফ হবে?

২। রোগাক্রান্ত হওয়ার পরে যদি সে সেই বদঅভ্যাস ছেড়ে দেয় তাহলে আল্লাহ মাফ করবেন কিনা?

৩। যদি কেউ রোগাক্রান্ত হয়েও ডাক্তারের কাছে দেরি করে যায়,আর এতে যদি তার জটিলতা বেড়ে যায়, এরপর যদি তার মৃত্যু হয়, এতে কি সে গুনাহগার হবে?

৪। অদক্ষ ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারনে যদি রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে কি এর উসিলায় তার গুনাহ মাফ হবে? যদিও ডাক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল চিকিৎসা না করে থাকে।আর এতে যদি তার মৃত্যু হয় তাহলে কি শহীদি মৃত্যু হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মুসলিম ব্যক্তির কোন রোগ হলে তার যে কষ্ট হয় তার বিনিময়েও আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন। মু’মিন ব্যক্তির যে কোন রোগ হলে এর বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

‘আবদুর রহমান ইবন সা‘ঈদ তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন :

كُنْتُ مَعَ سَلْمَانَ وَعَادَ مَرِيضًا فِىْ كِنْدَةَ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ : أَبْشِرْ ، فَإِنَّ مَرَضَ الْمُؤْمِنِ يَجْعَلُهُ اللهُ لَه كَفَّارَةً وَمُسْتَعْتَبًا وَإِنَّ مَرَضَ الْفَاجِرِ كَالْبَعِيرِ عَقَلَه أَهْلُه ثُمَّ أَرْسَلُوهُ فَلَا يَدْرِىْ لِمَ عُقِلَ وَلِمَ أُرْسِلَ

আমি একদিন সালমান (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম। তিনি তখন কিন্দায় এক রোগী দেখতে (অর্থাৎ তার কুশল জিজ্ঞেস করতে) গিয়েছিলেন। যখন তিনি তার শয্যাপাশে উপস্থিত হলেন তখন বললেন : সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন বান্দার রোগকে তার গুনাহসমূহের কাফফারাহ্ এবং কৈফিয়ত স্বরূপ গ্রহণ করেন। আর পাপী ব্যক্তির রোগ হল ঐ উটের মত যাকে তার মালিক পা মিলিয়ে বাঁধল। আবার ছেড়ে দিল অথচ সে জানল না যে কেন তাকে বাঁধা হল আর কেনই বা তাকে ছেড়ে দেয়া হল।

(আল আদাবুল মুফরাদ : ৪৯৩; হাদীসটি সহীহ; আলবানী তাখরীজ আহাদীস আল আদাব আল মুফরাদ গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, হাদীস নং ৪৯৩।)

নাবী (সা.) বলেছেন :

مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُه أَذًى مِنْ مَرَضٍ فَمَا سِوَاهُ إِلَّا حَطَّ اللهُ بِه سَيِّئَاتِه كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا

‘‘কোন মুসলিম যখনই কোন রোগ অথবা অন্য কিছুর মাধ্যমে কষ্ট পায়, কাঁটা বিধে বা তার চেয়েও কঠিন কষ্ট হয়, আল্লাহ তা‘আলা এর কারণে তার গুনাহসমূহকে মোচন করে দেন এবং তার গুনাহসমূহকে এভাবে ঝরিয়ে দেয়া হয় যেভাবে গাছ তার পাতা ঝরিয়ে দেয়।’’
(সহীহুল বুখারী : ৫৬৪৮, সহীহ মুসলিম : ৬৭২৪।)

জাবির হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি,

مَا مِنْ مُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ وَلَا مُسْلِمٍ وَلَا مَسْلَمَةٍ يَمْرَضُ مَرَضًا إِلَّا قَصَّ اللهُ بِه عَنْهُ مِنْ خَطَايَاهُ

‘‘যে কোন মু’মিন পুরুষ অথবা নারী, যে কোন মুসলিম পুরুষ অথবা নারী রোগাক্রান্ত হয় এর বিনিময়ে আল্লাহ তার গুনাহরাশি মোচন করে দেন।’’
(আল আদাবুল মুফরাদ : ৫০৮, হাদীসটি সহীহ; আলবানী আস্ সহীহাহ্ গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, হাদীস নং ২৫০৩।)

জাবির (রাঃ) বলেন, উম্মে সায়িব বা উম্মে মুসাইয়িব-এর জ্বর হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে উম্মে সায়িব বা উম্মে মুসাইয়িব! তোমার কী হয়েছে যে, থরথর করে কাঁপছো? সে বললো, জ্বর হয়েছে, আল্লাহ তাতে বরকত না দিন। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন :

لَا تَسُبِّى الْحُمّٰى فَإِنَّهَا تُذْهِبُ خَطَايَا بَنِى آدَمَ كَمَا يُذْهِبُ الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ

‘‘জ্বরকে গালি দিও না। জ্বর তো আদম সন্তানের পাপ মোচন করে যেমন হাপর লোহার ময়লা দূর করে।’’
(সহীহ মুসলিম : ৬৭৩৫।)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মুসলিম ব্যক্তির কোন রোগ হলে তার যে কষ্ট হয় তার বিনিময়েও আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন। মু’মিন ব্যক্তির যে কোন রোগ হলে এর বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। 

হাদীসে কী পরিমাণ গুনাহ মাফ করা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তাই আশা করা যায় আল্লাহ এর মাধ্যমে সকল সগীরা গুনাহ মাফ করবেন। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
হ্যাঁ, তার ওই কষ্টের জন্য তার গুনাহ মাফ হবে।

(০২)
আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৩)
ওযর বশত দেড়ি করলে গুনাহ হবেনা।
বিনা ওযরে এমনিতেই দেড়ি করলে গুনাহ হবে।

তবে আল্লাহ তায়ালা অসুস্থতার দরুন তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।

(০৪)
হ্যাঁ, এতে রোগির গুনাহ মাফ হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শুধু এই কারনে মৃত্যু হলে সেটি শহিদী মৃত্যু বলে গন্য হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...