আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in সালাত(Prayer) by (72 points)
শায়খ

জুম্মার নামাজ পড়া অবস্থায় যদি ওযু ছুটে যায় এবং পুনরায় অজু করতে করতে যদি নামাজ শেষ হয়ে যায় তাহলে কি জুম্মার নামাজ দুই রাকাত পুনরায় আদায় করব নাকি যোহরের নামাজ আদায় করব?
জাযাকাল্লাহ
.....................................................

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার এক রাকাত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকাত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকূ না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকাত পড়ে নেয়।’ (তাবারানি, বায়হাকি, মুসান্নিফে ইবনে আবি শায়বা)

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত

عن عائشة، قالت: قال النبي صلى الله عليه وسلم: «إذا أحدث أحدكم في صلاته فليأخذ بأنفه، ثم لينصرف»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি তোমাদের কারো নামাযে অজু চলে যায়,তাহলে সে যেন নিজ নাকে ধরে নামায ভেঙ্গে অজুর জন্য চলে যায়।(সুনানু আবি দাউদ-১১১৪)

নামাযে যদি কারো অজু ভঙ্গ হয়ে যায়,এবং ঐ ব্যক্তি যদি প্রথম কাতারে থাকে,তাহলে তিনি প্রত্যেক দুই ব্যক্তির মধ্যখানে ফাক সৃষ্টি করে তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে অজু করতে চলে যাবেন।কিংবা যদি সামন দিক দিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকে,তাহলে তিনি সামন দিক দিয়ে যাবেন।এক্ষেত্রে অনেককে ডিঙ্গিয়ে যাওয়ার রুখসত রয়েছে।এতে কোনো সমস্যা হবে না।কেননা এগুলো নিজের নামাযকে সংশোধন করার নিমিত্তেই করা হচ্ছে।যদি নামাযের কাতার থেকে বাহির হওয়ার কোনো সুযোগ না থাকে,বা কাতার সংখ্যায় অনেক থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় বিধান হল,ঐ ব্যক্তি নামাযকে পরিত্যাগ করে আপন স্থানে বসে থাকবে।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৬/৫৭৯)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-

শরীয়তের বিধান  হলো কাহারো নামাজের ভিতর অযু ভেঙ্গে  গেলে সে তৎক্ষণাৎ অযুর জন্য বের হয়ে যাবে।
অযু করে এসে যেখানে নামাজ রেখে গিয়েছিলো সেখান থেকে আবার আদায় করবে।

তবে এক্ষেত্রে পথিমধ্যে বা অযু করা অবস্থায় কারো সাথে বা এমনিতেই কথা বলা যাবে না।
যদি কথা বলে,তাহলে তাকে আবার পুনরায় নতুন করে নামাজ আদায় করতে হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
عن عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا قالت: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: من أصابہ قيء أو رعاف
أو قلس أو مذي، فلنصرف فلیتوضأ، ثم لیبن علی صلاتہ وہو في ذٰلک لایتکلم۔ (سنن ابن ماجۃ ۱؍۸۵ رقم: ۱۲۲۱)
وفي رواية  ما لم بتكلم
যার সারমর্ম হলো সে বেনা করতে পারবে যতক্ষন পর্যন্ত সে কথাবার্তা না বলবে।
যদি কথা বলে, তাহলে বেনা করতে পারবে না।

তবে সর্ববস্থায় নতুন করে উক্ত নামাজ আদায় করাই উত্তম।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/18975

ٌফাতাওয়ায় হিন্দিয়ায় বলা হয় যে,
(الْبَابُ السَّادِسُ فِي الْحَدَثِ فِي الصَّلَاةِ) مَنْ سَبَقَهُ حَدَثٌ تَوَضَّأَ وَبَنَى. كَذَا فِي الْكَنْزِ.
وَالرَّجُلُ وَالْمَرْأَةُ فِي حَقِّ حُكْمِ الْبِنَاءِ سَوَاءٌ. كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَلَا يُعْتَدُّ بِاَلَّتِي أَحْدَثَ فِيهَا وَلَا بُدَّ مِنْ الْإِعَادَةِ هَكَذَا فِي الْهِدَايَةِ وَالْكَافِي وَالِاسْتِئْنَافُ أَفْضَلُ. كَذَا فِي الْمُتُونِ وَهَذَا فِي حَقِّ الْكُلِّ عِنْدَ بَعْضِ الْمَشَايِخِ وَقِيلَ هَذَا فِي حَقِّ الْمُنْفَرِدِ قَطْعًا وَأَمَّا الْإِمَامُ وَالْمَأْمُومُ إنْ كَانَا يَجِدَانِ جَمَاعَةً فَالِاسْتِئْنَافُ أَفْضَلُ أَيْضًا وَإِنْ كَانَا لَا يَجِدَانِ فَالْبِنَاءُ أَفْضَلُ صِيَانَةً لِفَضِيلَةِ الْجَمَاعَةِ وَصُحِّحَ هَذَا فِي الْفَتَاوَى كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ
الفتاوى الهندية» (1/ 93)
যদি কারো নামাযে হাদাস হয়, তাহলে সে অজু করে এসে বিনা কিরাতে নামাযকে সম্পন্ন করে ইমামের সাথে শরীক হবে। এ বিধানে নারী পুরুষ সবাই সমান। যে রুকুনে অজু ভঙ্গ হয়েছে, সেই রুকুনকে নামায হিসেবে গণ্য করা যাবে না। বরং ঐ রুকুনকে অজু করে এসে পূনরায় পড়া অত্যাবশ্যকীয়। হ্যা, তবে আবার নতুনভাবে ঐ সব নামাযকে পূনরায় পড়ে নেওয়া উত্তম। এবং এ বিধান প্রায় সবার জন্য প্রযোজ্য। এবং কেউ কেউ বলেন, এ বিধান মুনফারিদের জন্য প্রযোজ্য। যদি ইমাম এবং মুক্তাদির নামাযে অজু ছুটে যায়, এবং অজু করার পর যদি জামাতকে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তাদের নতুনভাবে জামাতে শরীক হওয়াই উত্তম। আর যদি তারা জামাতকে না পান, তাহলে তাদের জন্য বিনা তথা বিনা কিরাতে উক্ত নামায সমূহ পড়ে সালাম ফিরানো উত্তম। কেননা এতকরে জামাতের সওয়াব পাওয়া যাচ্ছে। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াা-১/৯৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো কথাবার্তা না বলে অযু করে এসে জুম্মার অবশিষ্ট নামাজ আদায় করে নিতে হবে।

এক্ষেত্রে যেই রুকুন আদায়রত অবস্থায় অযু ভেঙ্গে গিয়েছিলো,সেই রুকন হতেই আদায় করতে হবে।

যে রুকুনে অজু ভঙ্গ হয়েছে, সেই রুকুনকে নামায হিসেবে গণ্য করা যাবে না। বরং ঐ রুকুনকে অজু করে এসে পূনরায় পড়া অত্যাবশ্যকীয়। সুতরাং ক্বিরাত পড়া অবস্থায় অযু ভেঙ্গে গেলে অযু করে এসে আবার ঐ চলমান রাকাতের সূরা ফাতেহা থেকে পড়া শুরু করতে হবে৷ আর রুকু, সিজদা বা বৈঠক করা অবস্থায় অযু ভেঙ্গে গেলে অযু করে এসে আবার নতুন করে ঐ রুকু, সিজদা ও বৈঠক থেকে শুরু করতে হবে৷ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 774 views
...