আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহি ওয়াবারকাতুহু।

আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। তিনি রোড এক্সিডেন্ট করে মারা গিয়েছেন।

আমার বাবা মারা যাওয়ায় পয়ত্রিশ লক্ষ টাকা পেনশন হিসেবে পেয়েছি। আমার মাকে নমিনি করেছিলেন বাবা।

কিন্ত আমার বাবা মারা যাওয়ার পাঁচ বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। সেই সংসারে একজন সৎ ভাই আছে।

আর আমরা এক ভাই এক বোন। এবং আমার দাদি জীবিত আছেন। আমার দুই ভাই নাবালক।
অফিস থেকে আমার মাকে সব টাকা দেওয়া হয়েছে।

টাকা পাওয়ার পর আমার মা আমার বাবার ঋণ পরিশোধ করেন দশ লক্ষ টাকা। বাকি টাকা ওয়ারিশ হিসেবে ভাগ করে দিয়েছেন। আমার দাদি কে ছয় ভাগের এক ভাগ টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার দাদী আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত আমার দাদার পেনশন পান। আমার বাবার পেনশন এককালীন।

 মাসে মাসে আর কোন টাকা আসবে না। এটাই আমাদের অফিস থেকে পাওয়া শেষ টাকা। আমাদের আর কোন ইনকাম সোর্স নেই। আমার মা ও সৎ মা ১৬ ভাগের এক ভাগ করে টাকা পেয়েছেন। এবং বাকি টাকা আমাদের তিন ভাই বোনের মধ্যে পাঁচ ভাগ হয়েছে। দুই ভাগ করে দুই ভাই পেয়েছেন। এবং আমি একভাগ পেয়েছি।


এখন অফিস থেকে আমার বাবা রোড এক্সিডেন্ট করে মারা যাওয়ায় তারা জীবন বীমা হিসেবে আরো ৩০ লক্ষ টাকার মতন দিবেন । আমার বাবা যদি বেঁচে থাকত তাহলে কখনোই এই টাকা পেতনা।
এখন আমার প্রশ্ন হল এই যে এই জীবন বীমার টাকা এটা কি হালাল হবে?

আর নমিনি যদি ওয়ারিশ অনুযায়ী টাকা ভাগ না করে নিজের কাছে রেখে দিত তাহলে কি গুনাহ হতো?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/85897/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

সরকারি চাকুরিজীবী মারা যাওয়ার পর তাদের স্ত্রীকে যে পেনশনের টাকা সরকারের  পক্ষ থেকে দেওয়া হয়,এটা সরকারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীর প্রতি দয়া, অনুগ্রহ, ইহসান।

এটার সাথে মৃত ব্যাক্তির মিরাছের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এটা শুধুমাত্র স্ত্রীই পাবে।

স্ত্রীই কেবল মাত্র এটা পাওয়ার হকদার।     
(ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/৩৪২ মাকতাবায়ে যাকারিয়া)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
সরকারি চাকরিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে চাকরিজীবী ব্যক্তিকে চাকরি শেষ হওয়ার পর প্রতি মাসে যে পেনশন দেওয়া হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান স্বরূপ। উক্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদ নয়। কাজেই সেই সম্পদ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ওয়ারিসরা পাবে না। বরং সরকারি আইন হিসেবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
সাধারণত, স্ত্রী সে টাকা পেয়ে থাকে। কাজেই সরকারি আইন হিসেবে স্ত্রী সে টাকা পাবে। ওয়ারিসরা তাতে যুক্ত হবে না।
আল বাহরুর রায়েক ৯/৩৬৫; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৪

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার পেনশনের টাকার মালিক আপনার মা আর সৎ মা (যদি তাকে তালাক না দিয়ে থাকে)।

এটির একচ্ছত্র হকদার চাকরিজীবীর স্ত্রী। 
তিনি চাইলে নিজেই সব ব্যবহার করতে পারবেন,চাইলে সন্তানদের পিছনেও খরচ করতে পারবেন। বা অন্যদেরকেও দিতে পারেন।

এটির একচ্ছত্র অধিকার তার।
অন্য কাহারো নয়।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে পেনশনের টাকা এভাবে ভাগ না করে দিয়ে আপনার মা আর সৎ মা সমান ভাবে ভাগ করে নিতে পারতেন।
এটার একচ্ছত্র মালিকানা শুধুমাত্র তাদের। অন্য কাহারো নয়।

তবুপরি যেহেতু সকলের মাঝে ভাগ করে দিয়েছে,সুতরাং এটি এখন প্রসঙ্গের বাহিরের বিষয়। 

এখন কথা হলো আপনার বাবা রোড এক্সিডেন্ট করে মারা যাওয়ায় তারা জীবন বীমা হিসেবে আরো ৩০ লক্ষ টাকার মতন দিবেন।
উক্ত জীবন বীমা কি আপনার বাবা খুলেছিলেন? মানে আপনার বাবার ঐখানে জীবন বীমার একাউন্ট খুলেছিলেন?

যদি তিনি একাউন্ট খুলে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনারা শুধুমাত্র মূলধন (আপনার বাবা যত টাকা রেখেছিলো শুধু সেই টাকা) নিবেন,নিয়ে ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়তের বিধান অনুসারে বন্টন করে দিবেন,বাকি টাকা যেহেতু সুদের টাকা,তাই সেই টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনের মাঝে সদকাহ করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
উস্তাদ আমার বাবা কখনোই এরকম কোন জীবন বীমা করেননি। আব্বু জীবন বীমার জন্য কোন টাকাও জমা রাখেনি। এটা আসলে অফিস থেকেই নিয়ম যে যদি কোন এক্সিডেন্ট করে কেউ মারা যায় তাহলে এটা অফিসের থেকে ওই এমপ্লয়ীর জন্য দেয়।
by (559,140 points)
উক্ত বিবরণ মতে ঐ ৩০ লক্ষ টাকা আপনার বাবার ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়তের আইন অনুসারে বন্টন করে দিতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...