وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সরকারি চাকুরিজীবী মারা যাওয়ার পর তাদের স্ত্রীকে যে পেনশনের টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়,এটা সরকারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীর প্রতি দয়া, অনুগ্রহ, ইহসান।
এটার সাথে মৃত ব্যাক্তির মিরাছের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এটা শুধুমাত্র স্ত্রীই পাবে।
স্ত্রীই কেবল মাত্র এটা পাওয়ার হকদার।
(ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/৩৪২ মাকতাবায়ে যাকারিয়া)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
সরকারি চাকরিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে চাকরিজীবী ব্যক্তিকে চাকরি শেষ হওয়ার পর প্রতি মাসে যে পেনশন দেওয়া হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান স্বরূপ। উক্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদ নয়। কাজেই সেই সম্পদ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ওয়ারিসরা পাবে না। বরং সরকারি আইন হিসেবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
সাধারণত, স্ত্রী সে টাকা পেয়ে থাকে। কাজেই সরকারি আইন হিসেবে স্ত্রী সে টাকা পাবে। ওয়ারিসরা তাতে যুক্ত হবে না।
আল বাহরুর রায়েক ৯/৩৬৫; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৪
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার পেনশনের টাকার মালিক আপনার মা আর সৎ মা (যদি তাকে তালাক না দিয়ে থাকে)।
এটির একচ্ছত্র হকদার চাকরিজীবীর স্ত্রী।
তিনি চাইলে নিজেই সব ব্যবহার করতে পারবেন,চাইলে সন্তানদের পিছনেও খরচ করতে পারবেন। বা অন্যদেরকেও দিতে পারেন।
এটির একচ্ছত্র অধিকার তার।
অন্য কাহারো নয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى
আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে পেনশনের টাকা এভাবে ভাগ না করে দিয়ে আপনার মা আর সৎ মা সমান ভাবে ভাগ করে নিতে পারতেন।
এটার একচ্ছত্র মালিকানা শুধুমাত্র তাদের। অন্য কাহারো নয়।
তবুপরি যেহেতু সকলের মাঝে ভাগ করে দিয়েছে,সুতরাং এটি এখন প্রসঙ্গের বাহিরের বিষয়।
এখন কথা হলো আপনার বাবা রোড এক্সিডেন্ট করে মারা যাওয়ায় তারা জীবন বীমা হিসেবে আরো ৩০ লক্ষ টাকার মতন দিবেন।
উক্ত জীবন বীমা কি আপনার বাবা খুলেছিলেন? মানে আপনার বাবার ঐখানে জীবন বীমার একাউন্ট খুলেছিলেন?
যদি তিনি একাউন্ট খুলে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনারা শুধুমাত্র মূলধন (আপনার বাবা যত টাকা রেখেছিলো শুধু সেই টাকা) নিবেন,নিয়ে ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়তের বিধান অনুসারে বন্টন করে দিবেন,বাকি টাকা যেহেতু সুদের টাকা,তাই সেই টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনের মাঝে সদকাহ করে দিবেন।